মুহাম্মাদ মামুনুল হক
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়্যাহ বাংলাদেশের জন্ম থেকে তার মৃত্যু৷ শায়েস্তাখান হল থেকে ফরিদাবাদ ও ফকিরাপুল হয়ে ডেমরা অতপর হলি ফ্যমিলি হতে অনন্তের পথে…৷ ১৯৭৮ থেকে ২০১৬ পূর্ণ চার যুগ ৷ প্রায় অর্ধ শতাব্দীর কওমি মাদরাসায় আলোচিত একটি নাম৷ আলোকিত একটি পরিসর৷ বেফাকুল মাদারিস৷ এরই অপর নাম মাওলানা আবদুল জব্বার জাহানাবাদী৷ এখন থেকে মরহুম রাহিমাহুল্লাহ৷
বেফাকের দীর্ঘ আটচল্লিশ বছর বিন্দুতে অবস্থান করেছেন৷ তিনি আর বেফাক এতটাই একাত্ম হয়েছিলেন, যেন দুই স্বত্তায় এক প্রাণ৷
মাটি কামড়ে পড়ে থাকার অর্থ আক্ষরিকভাবেই তার জীবনে বাস্তবায়িত হয়েছে৷ বীজ যেমন মাটি কামড়ে পড়ে থেকে এক সময় বিলীন হয়ে যায় সেই মাটিতে৷ আর সেখান থেকেই জন্ম নেয় দিগন্ত বিস্তৃত বিশাল মহিরূহ! তেমনি মাওলানা জাহানাবাদী রাহিমাহুল্লাহ মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন কওমির উন্নয়ন চিন্তায়৷ এমনকি নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন অকাতরে৷ আর তার অস্থি-মজ্জার নির্যাস থেকেই বিস্তৃত হয়েছে বেফাকুল মাদারিস৷ ছড়িয়েছে সারা বাংলা জুড়ে৷
আরো অনেকেই শুধু নয়, বাংলাদেশের প্রায় সকল বড়রাই তো বেফাকের সাথে কম-বেশি জড়িত, কিন্তু মিলে মিশে একাকার হওয়া বলতে যা বোঝায় তা মাওলানা আবদুল জব্বার জাহানাবাদী রাহিমাহুল্লাহই ছিলেন৷ একটু একটু তিল তিল করে গড়েছেন বেফাকের শিক্ষা কারিকুলামের অনেক কিছু৷ একটি মাদরাসার বরাদ্দ রূম থেকে স্বতন্ত্র ভাড়া অফিস, আর তার পর দু-চার টাকা করে লাখো কওমি ছাত্র-জনতার সহযোগিতায় রাজধানীতে বিশাল পরিসরের নিজস্ব অফিসে স্বকীয় অবস্থান তৈরি, বেফাককে নিয়ে মাওলানা জাহানাবাদীর রচিত এ এক অনন্য ইতিহাস৷
কওমী সনদের স্বীকৃতির ইস্যুতে রাজপথ থেকে মন্ত্রীপাড়া কিংবা সচিবালয় থেকে সংসদ ভবন আলোড়িত হলেও, টুক টুক করে দিনের পর দিন ফাইল-পত্র তৈরি করে যথার্থভাবে প্রস্তাব উত্থাপন, সে তো মাওলানা জাহানাবাদীর নিরলস সাধনার ফসল!
পঁচাশি বছরের বর্ণাঢ্য বেফাকময় জীবন, কওমি শিক্ষার উন্নয়নে ভাস্বর চেতনা আর ক্লান্তিহীন কাজ করে যাওয়ার অনন্য আদর্শ রেখে অনন্তের পথে চলে গেলেন আমাদের মহাসচিব মহোদয় রাহিমাহুুল্লাহ ৷ বলতে কোনো দ্বিধা নেই
তিনি আমাদের মহাসচিব৷
তিনিই আমাদের বেফাক!
রাহিমাহুল্লাহু রাহমাতান ওয়াসিআহ!
আরআর
আরো পড়ুন
চলে গেলেন বেফাক মহাসচিব মাওলানা আবদুল জব্বার