শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


নারীর প্রতি অমানবিকতা নয়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

hajj-womenসাদিয়া ইসলাম

বর্তমান সময়ে খবরের কাগজ উল্টালেই চোখে পড়ে নারী নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র। যা শিক্ষিত সমাজ কখনোই আশা করে না। স্ত্রীর সামান্য ভুল ক্ষমা করার মানসিকতা যাদের নেই তারা কিভাবে একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্নে বিভোর থাকে।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক বলেন, وَاللاتِي تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَاهْجُرُوهُنَّ فِي الْمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوهُنَّ فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلا تَبْغُوا عَلَيْهِنَّ سَبِيلا " আর যদি তাদের (স্ত্রীদের ব্যাপারে) অবাধ্যতার আশংকা করো, তবে (প্রাথমিক পর্যায়ে) সদুপদেশ* দাও। এবং (যদি এতেও বাধ্যতায় ফিরে না আসে তাহলে) শয্যা* আলাদা করে দাও। এবং (এতেও পরিবর্তন না হলে শরীরে মৃদু আঘাত) প্রহার* করো। এতে যদি সে (স্ত্রী) তোমাদের অনুগত হয়ে যায়, তাহলে অন্যকোনো* পথ অনুসন্ধান করো না।" নিসা:৩৪

সদুপদেশ: স্ত্রীর এহেন পরিস্থিতিতে ক্ষিপ্ত হওয়া যাবে না। কেননা রমণীগণ সহজাত বক্রতাচ্ছন্ন। স্বভাবগত জেদী প্রকৃতির। অস্থির মানসিকতা এবং নিজ সিদ্ধান্তে অটল। দ্রুত পরিবর্তনশীল। খুঁত খুঁতে স্বভাবের। বক্রতা নারীর আজন্ম লালিত অভ্যাস। যা স্পষ্ট জানতে পেরেছি সহিহ বুখারির বর্ণনায় - اسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ، فَإِنَّ المرْأَةَ خُلِقَتْ مِنْ ضِلَعٍ، وَإِنَّ أَعْوَجَ شَيْءٍ فِي الضِّلَعِ أَعْلَاهُ، إِنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهُ كَسَرْتَهُ، وَإِنْ تَرَكْتَهُ لَمْ يَزَلْ أَعْوَجَ، اسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا নারীদের সাথে ভালো ব্যবহারের উপদেশ গ্রহণ কর। কেননা তাদের সৃষ্টিই পাঁজরের বাঁকা হাড় থেকে। আর পাঁজরের হাড়গুলোর মাঝে সবচেয়ে বাঁকা হাড়টির অবস্থান উপরে। তুমি যদি তাকে সম্পূর্ণ সোজা করতে চাও, তবে তা ভেঙে যাবে। আর যদি ওভাবেই রেখে দাও তবে আজীবন বাঁকাই থেকে যাবে। সুতরাং নারীদের ব্যাপারে সদুপদেশ গ্রহণ কর। বুখারি:৪৮৯০

তাদের সংশোধনের ব্যাপারে ধর্মীয় শিক্ষার বিকল্প নেই। পরম ধৈর্যের শীতল বাতাস বইয়ে দাও ওদের জেদমাখা উত্তপ্ত হৃদয়ে।

পৃথক শয্যা: প্রথম চেষ্টা বিফলে গেলে দ্বিতীয় ধাপ হল আলাদা শয়ন ব্যবস্থা। যার সহ্য প্রথমে আপনাকেই সইতে হবে। বিছানা আলাদা না করলেও বিমুখিতা প্রদর্শন করতে হবে। অন্যদিকে মুখ করে শুইতে হবে। ভালোবাসা অন্তরের ব্যাপার, তবে কিছু সময়ের জন্য কথা বন্ধ রাখতে হবে। কেননা প্রিয় মানুষটির সাথে কথা না বলে থাকারচে’ বড় কোন শাস্তি আছে বলে আমার বোধগম্য নয়।

প্রহার করা: অবশেষে প্রহারের শরণাপন্নই হতে হবে। যদি কোনভাবেই বশীভূত করা না যায়, তবে হালকা মারতে হবে। তবে কেমন হবে মারের ধরণ? আবু দাউদ শরিফের বর্ণনায়: ولا تضرب ظعينكك كضرب امتك নিজের স্ত্রীকে দাসীর মতো মেরো না। আবু দাউদ:১৪২

পবিত্র বুখারি শরিফে মহানবীর সা. নসিহত: لا يجلد احدكم امرأته جلد العبد ثم يجمعها فى اخر اليوم কেউ যেন তার জীবনসঙ্গীনীকে গোলামের মতো না মারে। কেননা দেনের শেষে আবার তার সাথেই সহবাসে লিপ্ত হবে। বুখারি:৪৯০৮

অর্থাৎ এরকম প্রহার করা যাবে না, যে আঘাতে শরীর জখম হয়ে যায়। উপরন্তু কোনো দাগই বসবে না। এ প্রহারেও যেন স্ত্রী স্বামীর মাঝে ভালোবাসার গন্ধ পায়।

সহিহ মুসলিমের বর্ণনা: فاضربو هن ضربا غير مبرح তাদের এভাবে প্রহার কর যাতে মারের চিহ্ন প্রকাশ না পায়। সহিহ মুসলিম:১২১৮

*অন্যকোন পথ যদি এতসব করেও ফলাফল শূণ্য হয়, তবে তার জন্য তালাকই শ্রেয়। তবে মনে রাখতে হবে ওরা প্রেমময়। কোমল। আবেগপ্রবণ। প্রাণবন্ত। সজীব। উচ্ছল। সরল। উচ্ছাসপ্রবণ। সহিষ্ণু। শান্তিকামী। দয়া ও ভালোবাসার কেন্দ্র। তাই নারীহীনা পুরুষ গতিহীন পথের অচল যাত্রী।

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ