শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


কওমী স্বীকৃতি কি নিতেই হবে?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

Muslim-studentsসৈয়দ শামছুল হুদা: আওয়ার ইসলাম

প্রাসঙ্গিক কথা: বাংলাদেশে কওমী মাদ্রাসাগুলো জাতীয় শিক্ষার ক্ষেত্রে বড় ধরণের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। জনগণের অর্থায়নে, অভিভাবকদের সহায়তায়, কওমী মাদ্রাসাগুলো আদর্শ নাগরিক, শিক্ষিত, মার্জিত, কুরআন ও হাদীসের উপর দক্ষ, অভিজ্ঞ, দেশপ্রেমিক, ঈমান ও আমলের অপুর্ব সমন্বয় ঘটিয়ে একটি নতুন প্রজন্ম তৈরিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয়, কওমী মাদ্রাসা থেকে ছাত্রদের যে সনদ দেওয়া হয়, সরকারিভাবে তার কোন স্বীকৃতি নেই। এমনকি এটা যে একটি শিক্ষা ব্যবস্থা, তার নূন্যতম স্বীকৃতিও নেই। অথচ একটি বিশাল জনগোষ্ঠী কওমী মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। দীর্ঘদিন ধরে এটা নিয়ে আলোচনা চলে আসছে। বিভিন্ন সময়ে আমাদের মুরুব্বীগণ রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। কোরবানী করেছেন। এ ব্যাপারে বয়োবৃদ্ধ আলেম, মরহুম শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক সাহেবের কোরবানী ও ত্যাগ এক কথায় অতুলণীয় নজির সৃষ্টি করে গিয়েছে। কিন্তু এর কোন সুরাহা হয়নি।

বর্তমানে কওমী মাদ্রাসা নিয়ে রীতিমতো প্রতিনিয়ত গবেষণা হচ্ছে। এটা একটি পজিটিভ দিক যে, কওমী মাদ্রাসার বিষয়টি সকলের নজরেই এসেছে। বিশেষভাবে শাহবাগ আন্দোলনের বিপরীতে কওমী ভিত্তিক একটি শক্তি, হেফাজতের আন্দোলন কওমী ধারার শিক্ষার প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কুদৃষ্টি আর সুদৃষ্টি দুটাই পড়েছে কওমী মাদ্রাসার উপর।

একপক্ষ ভাবছে এই জাগরণের ভিতকে কিভাবে শিকড় থেকে দুর্বল করে দেওয়া যায়, কিভাবে আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধভাবে জেগে উঠা কওমী আন্দোলনকে অঙ্কুরেই নির্মুল করা যায় তা এখন একটি বিশেষ শক্তির কাছে প্রধান ভাবনার বিষয়।
কওমী ধারার শক্তিটি এখনো ঐক্যবদ্ধ আছে। বাহ্যিকভাবে যতই বিভাজন দেখি না কেন, মূলত: প্রেরণা, শক্তি, চিন্তায় এ শক্তিটি এক ও অভিন্ন। এটা বিশেষ মহলের মাথাব্যথার কারণ। রাষ্ট্রীয় বড় কোন বিপর্যয় এলে এই শক্তিটি শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে এটাই ভাবনার বিষয় তাদের কাছে।
সুতরাং কেউ কেউ চাচ্ছে, যে কোন মূল্যেই হোক এদেরকে শৃংখলার নামে শিকলে কিভাবে বেধে ফেলা যায় তা বাস্তবায়িত কৱা।

কেন স্বীকৃতির এই স্বপ্ন: অপর দিকে কওমী অংগনের শক্তিটি হেফাজত আন্দোলনে জনগণের অভুত সাড়া পেয়ে তাদের মধ্যেও রাষ্ট্রীয় কাজে সম্পৃক্ততার স্বপ্ন উঁকি দেয়। এছাড়া কওমী ধারার একটি বিশাল তরুন প্রজন্ম এই অঙ্গন থেকে ফারেগ হয়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।শুধূ দরস ও তাদরীসের সাথে আর ক’জনই বা কাজ করতে পারে? প্রয়োজনের তাগিদেই তারা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সেক্টরে। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে যে সমস্যাটা প্রকট আকার ধারণ করে সেটা হলো শিক্ষাগত বিষয়টি।

আপনি কি পাশ? আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা কি? এমন প্রশ্নে হোচট খেতে হয় তাদেরকে। সরকারি-বেসরকারি সর্বক্ষেত্রে এ প্রশ্নটি কওমী তরুণনের সামনে বড় ধরনের দেওয়াল তৈরী করে। নিজের চেষ্টায় কোন কাজ করতে গেলে, বা নিজের যোগ্যতায় কোন কাজ শুরু করতে গেলেও এ প্রশ্ন এসে যায়- উনি কি পাশ? এটার মূল কারণ সরকারের কাছে শিক্ষার স্বীকৃত যত পদ্ধতি আছে এর কোনটার সাথেই এর তুলনা করা যায় না। রাষ্ট্র এবং জনগণ এটা কোনভাবেই স্বীকার করে না যে, এটা কোন শিক্ষা ব্যবস্থা।

সরকারি বেসরকারি যে কোন প্রকার ফরম পুরণ করতে গেলে, পাসপোর্ট করতে গেলে, নির্বাচনী ভোটার তালিকায় নাম উঠাতে গেলে, যখন কেউ বলে আমি দাওরায়ে হাদীস পাশ, তখন সে এমন এক বিকৃত হাসি দেয়, যা ঐ তরুণের কলিজায় আঘাত দেওয়ার সমতুল্য। ১৪টি বছর লেখাপড়া করে প্রাপ্ত ডিগ্রীটি সম্পর্কে দেশ ও সরকার সম্পুর্ণ তাচ্ছিল্য করে। এরচেয়ে বেদনার কী হতে পারে?

কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা আসলে কি? এখানে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্যনীয়। কওমী শিক্ষা কি দেশের অন্যান্য শিক্ষা ব্যবস্থার বিকল্প? নাকি একটি বিশেষায়িত শিক্ষা ? দেশে হোমিওপ্যাথি কলেজ, আয়ুর্বেদীয় কলেজ, টেকনিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এ সমস্ত জায়গায় যারা লেখাপড়া করে, তারা নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়, এছাড়া অন্য বিষয়ে তাদের কোন দক্ষতা থাকে না। অভিজ্ঞতা থাকেনা। এ নিয়ে কেউ প্রশ্নও তুলেনা। তেমনি কওমী মাদ্রাসাও একটি বিশেষায়িত শিক্ষা পদ্ধতি। শিক্ষা কার্যক্রম। এখান থেকে যারা ফারেগ হয, শিক্ষা সমাপ্ত করে, তারা নির্দিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়, বাকী বিষয়ে তাদের কোন দক্ষতা থাকে না। এটাই স্বাভাবিক। আগে এটা নিয়ে কোন সমস্যা হতো না। কিন্তু ইদানিং এটা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। এর একটি প্রধান কারণ, কওমী ধারায় শিক্ষিত তরুনদের একটি ব্যাপক সংখ্যা, এরা আর বিশেষায়িত হিসেবে থাকতে চাচ্ছে না, তারা চাচ্ছে কওমী শিক্ষাটা হয়ে উঠুক, জাতীয় শিক্ষার সমান্তরাল। অর্থাৎ এখান থেকে পাশ করে সে সব লাইনেই অভিজ্ঞ হয়ে উঠবে। সব লাইনে কাজ করার অনুমতি মিলবে, চাকুরী মিলবে। এটা হচ্ছে না। বিধায় তরুণরা মনে করে, তারা বঞ্চিত হচ্ছে, ঠকছে। আর এসব কারনে তারা মুরুব্বিদের প্রতিও দিনে দিনে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছে। কেন তারা স্বীকৃতির বিষয়ে সরকারকে চাপ দিচ্ছে না?

km

স্বীকৃতি নিয়ে কেন দ্বন্ধ : এখন প্রশ্ন হচ্ছে-কওমী ধারা কে যদি জাতীয় শিক্ষার বিকল্প, বা সমান্তরাল হিসেবে গড়ে তুলতে হয়, তাহলে কওমী ধারার স্বকীয়তা বজায় থাকবে কি না? আলিয়া মাদ্রাসাগুলো চোখের সামনে সমান্তরাল ও বিকল্প হতে গিয়ে কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে তার উদারহণ উলামাদের সামনে পরিস্কার। যখনই সমান্তরাল ও বিকল্প শিক্ষার প্রশ্ন আসবে, তখনই মাদ্রাসাগুলোতে সহশিক্ষার চাপ আসবে, আর রাষ্ট্র যেহেতু সেক্যুলার, সুতরাং বাধ্যতামূলকভাবেই সেক্যুলার শিক্ষা নীতির কুদৃষ্টি ধীরে ধীরে কওমীর উপর পড়বে। ধীরে ধীরে কওমী সিলেবাসে পরিবর্তন আনা হবে। প্রথমে এমন কিছু কিছু বিষয় বাদ দিবে যা এতদিন কওমী আলেমদের মধ্যে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে প্রেরণা যুগিয়ে এসেছে। রাষ্ট্রের আনুকল্য পেতে হলে, রাষ্ট্র যে নীতির উপর চলে, সে নীতিতে অবশ্যই কওমী শিক্ষা ব্যবস্থাকেও চলতে হবে। রাষ্ট্রের সাথে তাল মিলিয়ে কওমী মাদ্রাসা চলতে পারবে কি? এ প্রশ্নে অনেকেই দিশেহারা।

কিন্তু স্বীকৃতি যে প্রয়োজন : সুতরাং আমি মনে করি, কওমী মাদ্রাসার স্বকীয়তা বজায় রেখে রাষ্ট্র এটাকে একটি স্বীকৃতি দিক যে, এটাও একটি শিক্ষা ব্যবস্থা। কিছু সীমিত ক্ষেত্রে চাকুরীরও সুযোগ দেওয়া হোক, যা এই বিশেষায়িত শিক্ষার সাথে অনুকূল। এবং একটি স্তরকে জাতীয় শিক্ষা ধারার সমমান দিয়ে এটা ঘোষণা করা হোক যে, কেউ যদি অন্য কোন বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা নিতে চায়, বা এই শিক্ষার সাথে সামঞ্জস্য রাখে এমন কোন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী নিতে চায় যে বিষয়ে সে অভিজ্ঞ, তাহলে তাকে সুযোগ দেওয়া হবে।

এ ক্ষেত্রে যা করা যেতে পারে: আরও পরিস্কার করে বলতে গেলে বলতে হয়. বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড (সংক্ষেপে বেফাক) একটি বোর্ড, আর সাধারণ নিয়ম অনুসারে একটি বোর্ড এইচ.এস.সি পর্যন্ত অনুমোদন দিতে পারে। বাকী শিক্ষাটা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন হতে হয়। সরকার বেফাককে অনুমোদন দিক। বেফাকের অনুমোদিত ডিগ্রী নিয়ে সাধারণ শিক্ষায় অনার্স মাস্টার্স করতে পারবে। বেফাক থেকে জালালাইন পর্যন্ত যে জামায়াত আছে সেটাকে এইচএসসি. স্তর ঘোষণা করে, এ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রন বেফাক করুক। এরপরের জামাতগুলো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন যেহেতু হতে হবে, সেহেতু কওমী মাদ্রাসার প্রাণকেন্দ্র দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসাকে সরকার বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা স্বীকৃতি দিক। উচ্চতর ডিগ্রীটা হাটহাজারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়ন্ত্রিত হবে। এবং ঢাকায় এর একটি স্থায়ী ক্যাম্পাস থাকবে, যেখান থেকে অন্যান্য জেলার কওমী মাদ্রাসার উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহনের পথ সুগম হবে।

কিছু সমস্যা আসবেই: যে কোন ভাবেই স্বীকৃতি হোক না কেন, কওমী মাদ্রাসার বর্তমান পাঠ্যক্রম নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে। শ্রেনীর স্তর পুন: মুল্যায়ন করতে হবে। একটি শিক্ষার যখন স্বীকৃতি আসবে, তখন কিছু নীতিমালা আসবেই। আর এতে করে কারো কারো সমস্যা হবেই। কারণ কওমী মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ, কর্মচারী নিয়োগ, ছাটাই, ছাত্রভর্তি, আয়-ব্যয়, কমিটি ইত্যাদি ক্ষেত্রে কিছুটা বিশৃংখলা আছে। নিয়ম মানতে গেলেই অনেকের সমস্যা হবে। এই সমস্যাকে কওমী মাদ্রাসার সমস্যা হিসেবে না দেখে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের সমস্যা হিসেবে নিতে হবে। সব মাদ্রাসাতো আর এমন নয়। বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসার ক্লাশের নামগুলোর মধ্যে মিল নেই। কিতাবের স্তর বিন্যাসেও একতা নেই। এটা একটি শৃংখলায় আসবে। এতে কারো কারো সাময়িক অসুবিধা হতেই পারে।

এছাড়া কওমী মাদ্রাসার স্বকীয়তা বজায় রাখতে গেলে সনদের একেবারে সমমান হিতে বিপরীত হয়ে উঠবে। ছাত্র সংকট দেখা দিবে। নৈতিকতার ধ্বস নামবে। ভারত ও পাকিস্তানে যেভাবে কওমী মাদ্রাসাগুলো সরকারের সাথে লিয়াজো করে চলছে সেটাও দেখার বিষয়। ভারত পাকিস্তানেও হাজার হাজার কওমী মাদ্রাসা আছে। তাদের শিক্ষার স্বীকৃতি আছে। ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। এদেশে কওমী মাদ্রাসার সরকারী কোন স্বীকৃতিই নেই। প্রথমত: এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। সরকারকে এই মর্মে স্বীকৃতি দিতে হবে যে, কওমী মাদ্রাসায় অধ্যায়ন করা ছাত্ররা কুরআন ও সুন্নাহ বিষয়ে পারদর্শী, তারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ। কুরআন ও সুন্নাহ বিষয়ে তাদের মতামত প্রকাশ ও তাদের খেদমত করার সুযোগ দিতে হবে। স্কুল-কলেজ, ইউনভার্সিটিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগে এ ধারার সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারীরা আবেদন করতে পারবে, সেই সুযোগ দিতে হবে।

আর বেফাকের অধীনে যারা কওমী মাদ্রাসায় পরীক্ষা দিবে, তাদের ৮ম, ১০ম ও একাদশ শ্রেণীর সমমান দিতে হবে। কোন ছাত্র চাইলে সে যেন শিক্ষা জীবনের শুরুটা কওমী মাদ্রাসায় করলেও উচ্চতর ডিগ্রী অন্য জায়গা থেকে নিতে পারে। এতে সরকারেরই লাভ বলে আমি মনে করি। কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতি দ্বারা দেশের শিক্ষিত জনস্ংখ্যার হার বাড়বে। সাধারণ শিক্ষার সাথে দূরত্বও কমবে। আগামী প্রজন্ম পরস্পরে ভেদাভেদ মুক্ত হয়ে বড় হবে।

পরিশেষে বলতে চাই : আমার ভাবনাগুলো এখানে শেয়ার করলাম। হয়তো আপনি আমার সাথে একমত নাও হতে পারেন। তবে আমি শিক্ষার স্বীকৃতির পক্ষে, সনদের সকল ক্ষেত্রে সমতার পক্ষে নই। সরকার কাগজে কলমে এতটুকু বলুক যে, এরাও শিক্ষিত। একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে এরাও পারদর্শী। যেই সকল বিষয়ে এরা পারদর্শী, জনগণ চাইলে তাদের সে সকল ক্ষেত্রে নিয়োগ দিতে পারে। যেহেতু জনগণের টাকায় এরা লেখাপড়া করেছে। সরকারী অর্থায়নে এরা পড়ে নাই। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কিছু শর্ত আছে, এগুলো কওমী ছাত্ররা পূরণ করতে পারলে তারাও সরকারী চাকরি করতে পারবে।দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারঙ্গম হওয়া সত্বেও কিছু সাধারণ চাকুরীর ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করে কিছু চালাক মানুষ। যেহেতু সরকার এই শিক্ষাকে স্বীকারই করে না, তাই তারাও বেসরকারী ক্ষেত্রে চাকুরী দিতেও নারাজ। সরকার শিক্ষার স্বীকৃতি দিলে এই সমস্যাটা আর থাকবে না।

যে কথা গুলো বলতেই হয়:
১। এখন আর বৃটিশ আমল নেই। কোন শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যাপক আকার ধারণ করে সরকারের কোন প্রকান অনুমোদন বিহীন থাকতে পারেনা। যেহেতু কওমী মাদ্রাসাগুলোও এই স্বাধীন দেশের অংশ, সুতরাং তাদেরও কোন না কোন ভাবে সরকারের নীতি মেনে চলতে হবে। কওমী মাদ্রাসার ছাত্র, অভিভাবকরাও সরকারকে ট্যাক্স দেয়, খাজনা দেয়। সরকারী সুযোগ সুবিধা পাওয়ার অধিকার তারাও রাখে।

২। স্বীকৃতি আদায় করতে হলে কাউকে না কাউকে সরকারের সাথে লিয়াজো করতে হবে। সেটা বর্তমানে মাওলানা ফরিদউদ্দীন মাসউদ সাহেব করছেন। আমি মনে করি, উনি যদি কওমী মাদ্রাসার স্বকীয়তা বজায় রেখে কওমী শিক্ষার স্বীকৃতি এবং সনদের বিষয়টা মোটামুটি একটি সুরাহা করতে পারেন, তাতে দোষারূপ করার কিছু নেই।

৩। বর্তমান সরকারের আমলে স্বীকৃতিটা যত সহজ মনে করি, অন্য সরকারের আমলে এতটা সহজ মনে করিনা। কারণ বিএনপি বা তার জোট কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতির ঝুকি নিবে না। জোট সরকারের স্বর্ণযুগেই যখন শায়খুল হাদীস সাহেবগন স্বীকৃতি আদায় করতে পারেননি, আগামীতেও হবে বলে মনে হয়না।

সুতরাং কার হাত ধরে স্বীকৃতি আসলো এটা বড় কথা নয়, বড় কথা হলো স্বকীয়তা বজায় রেখে, স্বীকৃতিটা আদায় সম্ভব হচ্ছে কি না সেটা দেখা।
20.08.2016

আরআর

 


সম্পর্কিত খবর