আওয়ার ইসলাম: মিশরের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হাফেজ মুহাম্মদ মুরসির পঞ্চম ছেলে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ মুরসি। গত ৫ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৬ বছর বয়সে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
মুরসির দ্বিতীয় ছেলে আহমেদ বলেন, তার ভাই আবদুল্লাহ গাড়ি চালাচ্ছিলেন। হঠাৎ করে কাঁপতে শুরু করেন। হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে বাঁচাতে পারেননি।
মুসলিম ব্রাদারহুডের বরাতে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সূত্রে জানা যায়, আলিজার একটি বেসরকারী হাসপাতালে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ মুরসি মারা যান। খবরে বলা হয়েছে, হার্ট অ্যাটাকের শিকার হওয়ার আগে তিনি নিজের গাড়ি চালাচ্ছিলেন।
আবদুল্লাহ মুরসি পিতা মুহাম্মদ মুরসির মৃত্যুর দু’মাস কয়েকদিন পর মারা যান। মিশরের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হাফেজ মুহাম্মদ মুরসি, যাকে ২০১৩ সালে সেনাবাহিনীর আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল, তিনি ১৭ জুন আদালতে উপস্থিত হয়ে সেখানেই মৃত্যু বরণ করেন।
আবদুল্লাহ মুরসি
আবদুল্লাহ মুরসি ছিলেন মিশরের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হাফেজ মুহাম্মদ মুরসির পঞ্চম পুত্র। তিনি ১৯৯৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৩ সালে তিনি অনুষদ সদস্য হিসাবে মিশর আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন।
২০১৪ সালে তাকে মাদকের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৫ সালে তার গ্রেপ্তারের কারণ মিথ্যা বলে ছড়িয়ে পড়ে।
জানা যায়, ২০১৪ সালের জুলাইয়ে মিশরীয় একটি আদালত মাদকদ্রব্য রাখার দায়ে আবদুল্লাহ মুরসি ও তার এক বন্ধুকে এক বছরের কারাদন্ড, দশ হাজার মিশরীয় পাউন্ড জরিমানা করে।
পুলিশের বরাতে জানা যায়, আবদুল্লাহ ও তার বন্ধুকে শার্কিয়া প্রদেশ থেকে আসা মাদকসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানের সময় নিরাপত্তা কর্মীরা হঠাৎ তাকে দুটি মাদকদ্রব্যের প্যাকেটসহ আটক করে।
পুলিশ আরও বলেন, আবদুল্লাহ মুরসিকে গ্রেপ্তারের পর তিনি স্বীকার করেছেন, তিনি ওষুধটি নিজের ব্যবহারের জন্য রেখেছিলেন।
আবদুল্লাহ মুরসির আইনজীবী বলেছেন, তার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা করা হয়েছে, আবদুল্লাহর বড় ভাই ওসামা মুরসির মতে, মামলাটি পরিবারের সম্মান ম্লান করার জন্য একটি ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই না।
আবদুল্লাহ মুরসিকে ২০১৫ সালে আবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এবার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। যার জন্য তাকে ৫ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছিল। অবশ্যয় পরে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল তাকে।
বড় ভাই ওসামা মুরসি
মিশরীয় কর্তৃপক্ষ নিষিদ্ধ করা গুলি বা বিস্ফোরক রাখার অভিযোগে ওসামা মুরসিকে গ্রেপ্তার করেছিল মিশরীয় পুলিশ। তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
গত ২ আগস্ট আবদুল্লাহ মুরসি ফেসবুকে তার ভাইয়ের মুক্তি দাবি করেন। ১৪ আগস্ট তিনি টুইটারে মিশরের রাষ্ট্রপতি আবদুল ফাতাহ আল-সিসিসহ ১৫ জন সরকারী কর্মকর্তাকে রাষ্ট্রপতি মুরসির অপসারণের পরে মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্যদের হত্যার পরিকল্পনা ও আদেশ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিলেন।
মুহাম্মদ মুরসি প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে মিশরের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন, তবে মাত্র এক বছর পরে ২০১৩ সালের ৩ জুলাই সেনাবাহিনী তার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে।
বিবিসি উর্দু অবলম্বনে আবদুল্লাহ তামিম
-এটি