শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


নামাজ কয় রাকাত পড়েছেন সন্দেহ হলে কী করবেন?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

প্রশ্ন: দীর্ঘদিন যাবত আমি একটি সমস্যায় ভুগছি। মাঝেমধ্যেই নামাজের রাকাত সংখ্যা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যাই। আদায়কৃত নামাজ তিন রাকাত হলো না চার রাকাত হলো—বিষয়টি আমি মনে করতে পারি না। এমন সন্দেহ নিয়ে নামাজ শেষ করি। আবার মাঝেমধ্যে নতুন করেও নামাজ আদায় করে থাকি। এই অবস্থায় আমি কিভাবে নামাজ শেষ করতে পারি? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর: এমন সমস্যার ক্ষেত্রে আপনার প্রথম কাজ হলো, চিন্তা করে দেখবেন যে, আপনি আসলে কত রাকাত পড়েছেন? এবং প্রবল ধারণা যেটির পক্ষে সায় দেয়, তার ওপর ভিত্তি করে বাকি নামাজ পূর্ণ করবেন। আর যদি নামাজের রাকাত সংখ্যার ব্যাপারে প্রবল ধারণা না হয়, তাহলে কম সংখ্যাটা ধরবেন এবং এ হিসেবে বাকি নামাজ পূর্ণ করবেন। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক রাকাতের পর বৈঠক করে তাশাহহুদ পড়তে হবে। আর শেষ বৈঠকে সাহু সিজদা আদায় করতে হবে।

হজরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কারো যদি নামাজের মধ্যে সন্দেহ হয়, ফলে সে জানে না যে এক রাকাত পড়ল না কি দুই রাকাত। তাহলে সে যেন এক রাকাত ধরে নিয়ে নামাজ পড়ে। আর যদি দুই রাকাত পড়ল না তিন রাকাত, তা না জানে তাহলে যেন দুই রাকাত ধরে নামাজ পড়ে এবং (এসব ক্ষেত্রে) সালাম ফেরানোর পূর্বে দুইটি সিজদা আদায় করে (অর্থাৎ সাহু সিজদা করে)।’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ৩৯৮)

ক্ষেত্রবিশেষে যদি নামাজ শেষ করার পর সন্দেহ হয়, নামাজ এক রাকাত কম হয়ে গেল কিনা? তাহলে এই সন্দেহের কোনো মূল্য নেই। বরং নামাজ পূর্ণ হয়ে গেছে বলে ধর্তব্য হবে।

অবশ্য যদি সঠিকভাবে স্মরণে আসে যে এক রাকাত কম হয়েছে, তাহলে দাঁড়িয়ে আরও এক রাকাত নামাজ পড়ে নিবেন এবং সিজদায়ে সাহু সহকারে নামাজ শেষ করবেন।

কিন্তু ইতোমধ্যে যদি এমন কোনো কাজ করে থাকেন যাতে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যায়, (যেমন কেবলা থেকে ঘুরে বসে থাকা বা কথা বলে থাকা) তাহলে নতুন নিয়ত বেঁধে সম্পূর্ণ নামাজ পুনরায় পড়তে হবে। আর প্রথম অবস্থায়ও নতুনভাবে নামাজ পুনরায় পড়ে নেওয়া উত্তম; জরুরি নয়।

তবে নামাজের রাকাতের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ যদি কদাচিৎ হয় (নিয়মিত না হয়)।  তাহলে সেই অবস্থায় আপনার জন্য পূর্বোল্লিখিত নিয়ম প্রযোজ্য হবে না, বরং নতুনভাবে নামাজ পড়তে হবে।

দলিল: আদ্দুররুল মুখতার, খণ্ড: ২/৯৩-৯৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩০; কিতাবুল আছল ১/১৯৮; বাদায়েউসসানায়ে ১/৪০৪; আলবাহরুর রায়েক ২/১১১

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মুহাম্মদ শোয়াইব, সহকারী মুফতি, জামিয়া রহমানিয়া সওতুল হেরা, টঙ্গী, গাজীপুর।সম্পাদক, আরবি ম্যাগাজিন মাসিক ‘আলহেরা’।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ