শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


‘সাদপন্থীদের বর্বরতা ও সহিংসতা তাবলিগের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়’‎

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইশতিয়াক সিদ্দিকী, হাটহাজারী প্রতিনিধি

বাংলাদেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরাম এবং তাবলিগ জামাতের মুরব্বীদের সমন্বয়ে শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে ‘তাবলিগ জামাতের চলমান সংকট নিরসন ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক উলামা-মাশায়েখ প্রতিনিধি সম্মেলন দারুল উলূম হাটহাজারীর দারুল হাদীছ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

আজ সোমবার ১০ ডিসেম্বর সকাল ১১ টায় আল্লামা আহমদ শফীর সভাপতিত্ব ও মাওলানা মাহফুজুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তাগণ বলেন, গত ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ময়দানে সা’দ ও ওয়াসিফগংদের অনুসারীরা যে অমানবিক ও নৃশংস হামলা করেছে তার নিন্দা করার ভাষা আমাদের নেই।

এ হামলায় তাবলিগের সাথী ও মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক মিলে প্রায় পাঁচ হাজারের মতো আহত হয়েছে। এর মধ্যে শতাধিক গুরুতর হামলার শিকার হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

বক্তারা আরো বলেন, টঙ্গী ময়দানে বর্বরোচিত হামলার সময় পুলিশের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। বিজ্ঞমহল এটাকে একটি সুপরিকল্পিত হামলা বলে মনে করছেন।

সেদিন সা’দ পন্থীরা যে বর্বরতা ও সহিংসতা দেখিয়েছে এটা তাবলিগের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হিসেবে লেখা থাকবে‎। ঘটনার পরিকল্পনাকারী ও এর সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার বিভাগীয় তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবী জানানো হয়েছে।

গত ১ডিসেম্বর টঙ্গি ময়দানে বর্বরোচিত হামলার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে হাজী সেলিম, মাওলানা নূরল ইসলাম ও কেফায়েতুল্লাহ আজহারি কারগুজারি পেশ করেন।

সম্মেলনে নিম্ন লিখিত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহিত হয়

১. পহেলা ডিসেম্বর শনিবার টঙ্গী ময়দানে সংঘটিত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত ওয়াসিফুল ইসলাম, খান শাহাবুদ্দিন নাসিম, মাওলানা মোশাররফ হোসাইন ও ইউনুস সিকদার এবং তাদের অনুসারীদেরকে কাকরাইল মসজিদে ঢুকতে না দেয়ার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

২. সরকারের সাথে পরামর্শক্রমে বিশ্ব ইজতেমার নির্ধারিত তারিখ ১৮, ১৯ ও ২০ জানুয়ারি ২০১৯ (প্রথম পর্ব) এবং ২৫, ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি (দ্বিতীয় পর্ব) এখনি চূড়ান্ত করে ইজতেমার জন্যে ময়দান তৈরী করার সুযোগ দিতে হবে।

৩. জনান সা’দ এবং তাঁর বাংলাদেশি অনুসারী এতাআতী দলের বিষয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল উলামায়ে কেরামের ঐক্যবদ্ধ ফাতাওয়া তৈরী করে ব্যাপকভাবে প্রচার করা।

৪.দাওয়াত ও তাবলিগে সৃষ্ট সঙ্কটের ওজাহাত এবং টঙ্গী ময়দানের ঘটনার বিবরণ ও বাস্তবচিত্র তুলে ধরা অব্যাহত রাখা।
৫.প্রত্যেক এলাকায় উলামায়ে কেরাম ও তাবলিগের সাথীরা সমন্বিতভাবে বেশির থেকে বেশি জামাত বের করার ফিকির করা এবং নামায ও দু’আর ইহতেমাম করা।

৬.সা’দপন্থীরা নিজেদেরকে এতাআতী হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। সুতরাং যার এতাআতে থেকে টঙ্গী ময়দানে বর্বর হামলা চালিয়েছে- তা উদঘাটন করতঃ তাকে বিচারের আওতায় আনা।

৭. আগামী সাতদিনের মধ্যে সরকারের কাছে পেশ করা দাবীসমূহ পূরণ না হলে পরবর্তীতে আমরা কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবো।

সম্মেলনে মাওলানা আশরাফ আলী, মাওলানা মুহাম্মদ জোবাইর, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী, মাওলানা শেখ আহমদ, মুফতি রুহুল আমিন, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মাওলানা মাহমুদুল আলম, মাওলানা আব্দুল বাছির, মাওলানা মুবারক উল্লাহ, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা নুরুল ইসলাম।

মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপুর), মাওলানা নুরুল হুদা ফয়জী, মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ ফরিদী, মাওলানা উমর ফারুক, মুফতি জসিমুদ্দীন, মুফতি কেফায়াতুল্লাহ, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা জোবাইর আহমদ চৌধুরী ও মুফতি নুরুল আমিন প্রমুখ আলেম উপস্থিত ছিলেন।

শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর কান্নাবিজড়িত দু’আ ও মোনাজাতের মাধ্যমে সম্মেলন সমাপ্ত হয়।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ