আবদুল্লাহ তামিম ।।
টঙ্গী ইজতেমা মাঠে থাকা তাবলীগের সাথী ও উলামায়ে কেরামকে হঠিয়ে মাঠ দখলে নিতে হামলা চালায় সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। এ নিয়ে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়, যাতে তিন শতাধিক সাথী ও উলামায়ে কেরাম আহত হয়।
১ জন নিহতের খবর পাওয়া গেলেও প্রত্যক্ষদর্শী অনেকের দাবি নিহতের সংখ্যা ১০ এর অধিক হতে পারে।
বিশ্বময় প্রসারিত শান্তিপূর্ণ দীনি দাওয়াতের নাম তাবলীগ জামাতে এমন হামলায় আহত হয়েছে মানুষ। উলামায়ে কেরামও অত্যন্ত মর্মাহত হন এমন নৃশংস কর্মকাণ্ড দেখে।
এ বিষয়ে কথা হয় শায়েখ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের পরিাচাল মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদের সঙ্গে। তিনি বলেন যে ঘটনা ঘটেছে এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক।
এটি প্রকাশ করার কোনো ভাষা আমার নেই। আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে সরকারের কাছে এর বিচার চাই, আজ যেখানে অশ্রু ঝরার কথা সেখানে আজ রক্ত ঝরছে।
আমরা সরকারের কথা মেনে ওয়াজাহাতি জোড় বন্ধ করে দিয়েছি অনেক আগেই। এদিকে ইজতেমা সামনে রেখে আমাদের যে তিন দিনের জোড় হওয়ার কথা ছিলো এটা বন্ধের ব্যাপারে সরকারের কোনো নোটিশ না আসায় আমরা এর প্রস্তুতি চালু রেখেছিলাম। কিন্তু তিনদিন আগে আমাদের ইসির পক্ষ থেকে জানানো হলে আমরা এ জোড়ও না করার সিদ্ধান্ত নেই।
আজ যারা টঙ্গির মাঠে থেকে কাজ করছিলো তারা জামাত বের করা ও ইজতিমার কাজ এবং প্রস্তুতির জন্যই সেখানে ছিলো। তারা কোনো জোড় করার জন্য সেখানে যায়নি।
মাওলানা সাদ অনুসারীদেরও ৩০ তারিখ জোড় করার কথা ছিলো। কিন্তু সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা নির্ধারিত সময়ে জোড় করেনি। কিন্তু এর একদিন পর এসে তারা নিরীহ ছাত্রদের উপর রাম দা, বটি, ছুরি ও রড দিয়ে যে নৃসংশ হামলা করলো এটা তো কোনো দীনি ব্যক্তির কাজ হতে পারে না।
ছাত্র, বৃদ্ধ ও আলেমদের ওপর নির্মম হামলার দ্রুত বিচারের দাবি জানাই আমরা। শুধু তাই নয়, ওখানে হামলায় আহত ৪ জন তাবলিগের মুরব্বিকে হাসপাতালে না নিয়ে টঙ্গির পূর্ব থানায় বন্দি করে রাখা হয়েছে, এরও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাদ অনুসারীদের সহায়তা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকরা তাদের সহযোগিতা করার পেছনে রহস্য কী আসলে আমরা জানি না। কিন্তু স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, মাওলানা সাদপন্থীরা বক্তব্যে বলছে আলহামদুলিল্লাহ আমাদের সঙ্গে নিরাপত্তাকর্মীরা সহযোগিতা করছেন। আমরা মাঠে আছি।
সরকার তাদের কেনো সহযোগিতা করছে বিষয়েটা আমাদের কাছে স্পষ্ট না। তবে আমরা দুঃখের সঙ্গে এসব আহত ও নিহতদের বিচার দাবি করছি সরকারের কাছে।
তিনি আরও বলেন, টঙ্গির মাঠ দখলের চেষ্টায় তাদের এ নিকৃষ্ট হামলায় রক্ষা পায়নি ইজতিমার হাজার হাজার টাকার সম্পদ। তারা তাতে আগুন দিয়েছে। সবচেয়ে আশ্চর্য হয়েছি সেখানে যারা উপস্থিত ছিলো তাদের কয়েকজন আমাকে জানিয়েছে মাঠের এ হামলায় পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করেছে। এগুলোর আসলে কোনো জবাব আমার কাছে নেই।
তিনি আরো বলেন, এ হামলা এড়ানো সরকারের পক্ষে সম্ভব ছিলো। তারপওর সরকার কেনো এর প্রতি গুরুত্ব দিলো না আমার বুঝে আসে না।
উল্লেখ্য, আজ শনিবার ইজতেমা মাঠে পূর্ব থেকে অবস্থান নেয়া তাবলীগের সাথী ও উলামায়ে কেরামকে হঠিয়ে দখলে নিতে গেটের তালা ভেঙে মাঠে প্রবেশ করে। তাদের ঠেকাতে গেলে লাঠিসোঠা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
হামলায় অন্তত ৩ শতাধিক সাথী ও উলামায়ে কেরাম গুরুতর আহত হন। তারা রাজধানীর বিভিন্ন মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
‘নির্বাচন পর্যন্ত ইজতেমা মাঠে অনুষ্ঠান নয়; মাঠ থাকবে প্রশাসনের দখলে’
আরআর