শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫


‘ফেয়ার ইলেকশন না হলে দেশে গণবিষ্ফোরণ শুরু হবে’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

চারদিকে নির্বাচনি হাওয়া বইছে। নির্বাচন হচ্ছে। আছে শঙ্কাও। ক্ষমতার মেয়াদ দীর্ঘ করতে চাচ্ছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। প্রধান বিরোধী জোট ঐক্যফ্রন্ট চাচ্ছে ক্ষমতায় আসতে। এ জন্য প্রর্থী বাছাইয়ে কড়া পর্যেবেক্ষণ চলছে জোট মহাজোট। সব দলের এখন একটাই কথা, ‘জয় এবং জয়’।

আর কাঙ্ক্ষিত এ জয় পেতে রাজনৈতিক দৌড়, জনমত এবং কুটকৈাশল কোনো পন্থাই বাদ দিচ্ছে না দলগুলো। যদিও অনেক পলিটিশিয়ানের মনে গভীর সংসয় নির্বাচনকে ঘিরে। হবে কি হবে না, কেমন হবে, নিরপেক্ষ নাকি ইচ্ছে মতো, নাকি জরুরি অবস্থায়।

এসব বিষয়ে আওয়া ইসলামের সাথে কথা বলেছেন জাহাঙ্গীরনগন ইউনিভার্সিটির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. আবদুল লতিফ মাসুম

বরণ্য এই রাজনীতিবিদের সাথে কথা বলেছেন আওয়ার ইসলামের প্রতিবেদক সুফিয়ান ফারাবী

আওয়ার ইসলাম: আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নানাজনে নানা উদ্বেগের কথা বলছেন, কেউ বলছেন নির্বাচন হবে না। আবার কেউ কেউ মনে করছেন ২০১৪ এর পুনরাবৃত্তি হবে। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?

ড. আবদুল লতিফ মাসুম: নির্বাচন হওয়া তো সাংবিধানিকভাবে জরুরি। প্রতিটি সরকারকে নির্দিষ্ট সময় শেষে আবারো জনগণের কাছে যেতে হয়। যেটাকে রিনিউয়াল বলা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এখন যে অবস্থা বিরাজ করছে, তাতে অনেকের মাঝেই এ সংশয় রয়েছে আসলে নির্বাচন হবে কিনা।

এ সন্দেহ থেকে আমিও মুক্ত নই। প্রথম দিকে বিএনপির অংশগ্রহণ ও আওয়ামী লীগের সহনশীলতা দেখে কিছুটা আশা জেগেছিল সবার মনে। কিন্ত দিন যতই যাচ্ছে আবার মনে হচ্ছে সরকার ২০১৪ এর মত এ নির্বাচনকে একতরফা করতে চাচ্ছে।

এমনকি বিএনপির নেতাকর্মীদের মন থেকে উৎসাহ, উদ্দীপনা নষ্ট করার জন্য পায়তারাও করা হচ্ছে।

আওয়ার ইসলাম: বিএনপির নেতাকর্মীদের মন থেকে উৎসাহ দূর করতে চাচ্ছে কারা কিভাবে, একটা এক্সাম্পল দিলে বুঝতে সহজ হতো।

ড. আবদুল লতিফ মাসুম: উদাহারণস্বরুপ বলা যায়, বিএনপি নমিনেশন পেপার নিতে গিয়ে যে আনন্দ ও উৎসাহ দেখা গিয়েছিল, তা বন্ধ করতে নয়া পল্টনে হামলা চালানো হলো। যাতে বিএপিকর্মীদের মন থেকে উৎসাহ, আশা মুছে যায়।

আই ডু বিলিভ এটা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে হয়েছে এবং এ আদেশ সর্বোচ্চ মহল থেকে দেওয়া হয়েছে বলে আমি মনে করি।

কারণ যদি বিএনপির কর্মীদের মনের বর্তমান অবস্থা বিরাজ থাকে তাহলে তাদের ক্ষমতায় থাকাটা সম্ভব হবে না।

আওয়ার ইসলাম: নির্বাচনে পুলিশের ভূমিকা কেমন হতে পারে বলে মনে করছেন?

ড. আবদুল লতিফ মাসুম: পুলিশের হেড কোয়ার্টার থেকে নির্বাচনের নীল নকশা হচ্ছে বলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির অভিযোগ তুলেছেন। নানান জেলায় ইতিমধ্যে পুলিশ সুপার ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে সরকার পরিবর্তন এনেছে।

আওয়ার ইসলাম: যদি ফেয়ার নির্বাচন না হয় তবে কী হতে পারে?

ড. আবদুল লতিফ মাসুম : দেশে একটি গণজোয়ার হতে পারে, নানা কারণে মানুষের মনে চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আপনি জানেন, যদি দীর্ঘদিন পানি আটকে রাখা হলে হঠাৎ করে সেটা বন্যার মতো বয়ে যায়।

এমনও হতে পারে নির্বাচন হয়ে যাবার পর দু একদিনের মাঝে গণজোয়ার হবে। আর সেটা একপ্রকার বিস্ফরণের আকার ধারণ করতে পারে।

নির্বাচন কমিশন কতটা নিরপেক্ষনীতি অবলম্বন করছে তা নিয়ে আমরা হতাশ। সরকার তো চাইবে সব কিছু নিজের মনের মতো করে সাজাতে, কিন্তু এর জন্য নির্বাচন কমিশনকে কোনো প্রকার উদ্দোগ নেওয়া হচ্ছে না।

ফর এক্সাম্পল, কোনো দলই ইভিএম চাচ্ছে না, শুধু ইলেকশন কমিশন চাচ্ছে। এর মানে কী?

আওয়ার ইসলাম: শোনা যাচ্ছে বহির্বিশ্ব থেকে এবারের নির্বাচন নিরপেক্ষ করার তাগিদ দিচ্ছে, সরকার যদি ২০১৪ এর মতো নির্বাচন করে তাহলে আন্তর্জাাতিক চাপ আসার সম্ভাবনা কতটুকু?

ড. আবদুল লতিফ মাসুম: আমাদের দেশের মানুষের মনে এই ব্যপারে ভুল ধারণা আছে। তারা মনে করেন আন্তর্জাতিক চাপ অনেক কিছু। আসলে কোন দেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে বাইরের দেশ খুব একটা মাথা ঘামান না।

যেমন ছেলেকে বাবা পেটাচ্ছেন, এতে কি পাড়ার মানুষ খুব একটা কথা বলবে? বলবে না। সর্বোচ্চ নিষেধ করতে পারেন। নিজের দেশর বিষয়গুলো নিজেদেরই দেখতে হয়।

‘ইসলামের তিনটি বিধান মেনে চলেলে কখনো ডায়াবেটিস হবে না’

আরআর


সম্পর্কিত খবর