রোকন হারুন
আওয়ার ইসলাম
সুসমাজ গড়ে তোলার প্রধান উপকরণ সুশিক্ষা। শিক্ষাই গড়ে তুলতে পারে সুসমাজ ও সুন্দর রাষ্ট্র। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে পারে সুশিক্ষা। ইতিহাসে তারাই বেঁচে আছেন এবং পৃথিবীর রাজ-সিংহাসন তাদেরই পদচুম্বন করেছ, যারা নিজেদের জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করেছেন।
দূর্লভ হিরকখণ্ডের চেয়েও মূল্যবান সুশিক্ষা। শিক্ষার প্রাথমিক পর্যায় শিশুকাল। যাকে আমরা শিশুশিক্ষার সময় বলি। শিশুরা শিক্ষালাভ করে তদের চারপাশ থেকে; পরিবার, সমাজ, শিক্ষাঙ্গন ও পরিবেশ থেকে পাওয়া শিক্ষা নিয়েই বেড়ে উঠে।
উল্লেখযোগ্য শিক্ষাদীক্ষার অবকাঠামো যা একাডেমিক আকারে প্রতিষ্ঠিত (মাদরাসা, বিদ্যালয়)। সে জন্য মূল শিক্ষাটা এখান থেকেই পেয়ে থাকে শিশুরা। শিশুরা সবসময় আনন্দ ও খেলাধূলা পছন্দ করে। সাচ্ছন্দ পরিবেশে নিজেকে মেলে ধরে।
শিশুর মনের আনন্দই তার দেহমনের শক্তির উৎস। একজন শিশুর মেধা ও সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর জন্য সাচ্ছন্দ, আনন্দঘন ও সুন্দর পরিবেশের বিকল্প নেই।
কঠোর শাসন, নিয়ন্ত্রণ, প্রতিকুল পরিবেশ শিশুর শিক্ষাজীবনকে অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দেয়। বাবা, মা ও শিক্ষকের ভয়ে ভীত শিশু কখনই নিজের সুপ্ত মেধা ও প্রতিভার প্রকাশ ঘটাতে পারে না, সর্বক্ষণ ভীত-সন্ত্রস্ত থাকে। যার ফলে দেখা যায়, যারা শিক্ষা দিচ্ছেন তারাই শিশুশিক্ষাগ্রহণের পথে বড় বাধা হয়ে যাচ্ছেন।
শিশুদের শিক্ষার জন্য কেমন পরিবেশ দরকার এ ব্যাপারে কথা বলছিলাম টুঙ্গি দারুল উলূম মাদরাসার চর্থুত শ্রেণির ছাত্র আবদুল আহাদের বাবা আরিফুল ইসলামের সঙ্গে।
তিনি বলেন, শিশুদের জন্য খেলাধূলার মাঠ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। খেলাধুলা করতে না পারলে তাদের মনজগতের বিকাশ ঘটে না। খোলামেলা পরিবেশ, যাতে করে আলো-বাতাস গ্রহণ করতে পারে।
তাদের শিক্ষকদেরও সচেতন হতে হবে। সামান্য ভুলে তাদের ধমক, কঠোর শাস্তি, কটু কথা না বলা। আদর যত্ন ভালোবাসা এবং স্নেহের ভাষায় তাদের সঙ্গে কথা বলা। তাদের সুবিধা অসুবিধার দিকে খেয়াল রাখা। অনেক সময় তাদের সমস্যা হয় কিন্তু ভয়ে বলতে পারে না। এ কারণে প্রত্যেকের দিকে বিশেষ নজর রাখা।
চট্টগ্রামের নুরানিয়া মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আবদুল কাইয়ুমের বাবা শামিম হোসেনের কাছে শিশুদের শিক্ষার পরিবেশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমার ছেলে মাদরসায় পড়ে। প্রতিদিন বাড়ি আসতে পারে না। আমি মাঝে মধ্যে ছেলের সঙ্গে দেখা করে আসি।
আমি মনে করি শিশুদের থাকার জায়গাটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। তা না হলে শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে। শিশুরা সাধারণত একটু অলস হয় তারা জামা কাপড় ময়লা হলে ঠিক সময় পরিষ্কার করে না। এ ব্যাপারে শিক্ষকদের খুব লক্ষ্য রাখতে হবে।
আর শিশুদের পরিবেশটা একটু বড় আকারে তৈরি করলে তারা খেলাধুলা করতে পারবে। কারণ প্রত্যেকটা শিশুর মন সবসময় আনন্দে মেতে থাকতে চায়।
অনেক সময় বড় ছাত্রদের সঙ্গে মিশে ছোটরা বিগড়ে যায়। কোনো শিশু যেন বড়দের সঙ্গে না মিশতে পারে এ ব্যাপারে সচেতন না থাকলে একটি শিশুর জীবন বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে।
ঢাকার তেজগাঁও মাদরাসায় ৫ম শ্রেণিতে পড়ে আতিক। তার বাবা শাহজাহানের সঙ্গে কথা বলা হয়েছিল এ প্রসঙ্গে।
তিনি বলেন, শিশুদের পরিবেশ উন্নত হওয়া চাই, এবং তাদের পড়ালেখা বিষয়টা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমন তাদের আচার আচরণও যেন উন্নত হয় সেদিকে প্রতিষ্ঠান ও বাবা মা’র সকলের লক্ষ্য না রাখা একান্ত প্রয়োজন।
পড়ালেখার সঙ্গে সঙ্গে তাদের শিখাতে হবে তারা মানুষের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করবে। তাদের এমন কোন কথা না বলা যা তাদের মন-মানসিকতায় আঘাত করে।
গুজরাট থেকে যেভাবে মুসলিমদের চিহ্ন মুছে ফেলা হচ্ছে
আরআর