শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ১২ পৌষ ১৪৩২ ।। ৭ রজব ১৪৪৭

শিরোনাম :
ওসমান হাদীর হত্যাকারীদের আটকে ব্যর্থতা এই সরকারের অনেক অর্জনকে ম্লান করবে-মাওলানা গাজী আতাউর রহমান কুমিল্লা–৭ (চান্দিনা) আসনে খেলাফত মজলিসের মনোনয়ন পেলেন মাওলানা সোলায়মান খান জামায়াতের সঙ্গে জোটে আপত্তি জানিয়ে নাহিদ ইসলামকে এনসিপির নেতাদের চিঠি ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে হাদি হত্যার পরিকল্পনা: তদন্তকারী সংস্থা আমি চলে গেলেও আপনারা ইনসাফের লড়াই থামাবেন না : জাবের এবার রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য ‘গাইডলাইন কর্মশালা’ করবে আস-সুন্নাহ এনসিপি ছাড়লেন তাসনিম জারা, নির্বাচন করবেন স্বতন্ত্র পাগলা মসজিদের দানবাক্সে হাদি হত্যার বিচার চেয়ে চিঠি ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমি ইসলামের পক্ষের দুটি ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী’ ফেনীর আল-জামিয়া আল-মাদানিয়ার ইসলাহি মজলিস ও আবনা সম্মেলন ৩ জানুয়ারি

বিদায় বন্ধু? আহ, আর দেখা হবে না!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইয়াহইয়া ইউসুফ নদভী
আলেম, সাহিত্যিক

মাওলানা রাশিদুল হক। অনেক যোগ্য অনেক সম্ভাবনাময় স্বপ্নতরুণ একজন আলেম ছিলেন। তামীম রায়হান ভাইয়ের সম্পাদিত পত্রিকা ‘হাবীবী’র সুবাদে তার সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো। সে পরিচয় ধীরে ধীরে বিস্তৃত হয়েছে। ঘনিষ্ঠ হয়েছে। আর আমি মুগ্ধ হয়ে চলেছিলাম!

তিনি একাধিকবার বাসায় এসেছেন। প্রথমদিন তাকে ইসতিকবাল করতে গিয়ে দেখি― বাগান থেকে সদ্য তুলে-আনা তাজা গোলাপের মতো এক স্বপ্নযুবক। হাসছে বিভা ছড়িয়ে। আমি তাকিয়ে ছিলাম অনেকক্ষণ প্রথমদিন― তার সজীব প্রাণবন্ত হাসির দিকে।

হোন্ডায় করে এসেছিলে। আসার আগে বলেছিলেন, আমার বেশিক্ষণ লাগবে না― ১০ মিনিটেই চলে আসবো!

আমি বেশ অবাক হলাম। আমুলিয়া থেকে রামপুরা বনশ্রী দশমিনিটে! কী করে সম্ভব? তিনি তাই এসেছিলেন, ঠিক দশমিনিটে। আরও আগেই আসতে পারতেন। একটু দেরি হয়েছে দোকানে।

দোকান থেকে তিনি আমার জন্যে কী কিনেছেন, শুনবেন? খুবই ঘরোয়া জিনিস! তেল এবং ডিম! এগুলো আমার হাতে তুলে দিতে দিতে বলেছেন, আমি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস হাদিয়া দিতে ভালোবাসি! অনেকে সঙ্কোচ করে― আমি করি না!

আরেকদিন এসেছেন― হাতে পাপোশ! আল্লাহু আকবার!

আরেকদিনও এমন খুব ঘরোয়া জিনিস নিয়ে এসেছিলেন! জাযাহুল্লাহ!

একজন মানুষ এতো নির্ভেজাল হয়―কী করে?

একবার হলো কি, অনেক দিন ধরে রাশেদুল হক ভাই আসছেন না। আমার খারাপ লাগতে শুরু করেছে। কেনো তিনি আসেন না? ফোন করলাম। বললেন, কিছু লেখা আর অনুবাদের কাজে ডুবে আছি! তাই আসতে পারছি না! আমি বললাম, আল্লাহ কবুল করুন! আপনার ওই লেখাটা ছাপা হয়েছে! ...

প্রতিবারেই এসেছিলেন কিশোরস্বপ্ন নিতে। কিশোরস্বপ্নের পাতায় তার লেখা থাকতো। গুনে গুনে অনেকগুলো কিশোরস্বপ্ন তিনি নিয়ে যেতেন। আমি তার চলে যাওয়া দেখতাম আর ভাবতাম―  এই রাশিদুল হক ভাইয়েরাই আগামীদিনের সবুজ স্বপ্ন!

আহ, তখন কি ভেবেছিলাম― মাত্র কিছুদিনের ব্যবধানে বসে―তার ওফাতের সংবাদ পেয়ে এই বিরহকথা লিখবো?!

কওমি মাদরাসা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার – বিস্তারিত জানুন

এমন অনেক স্মৃতি আছে তার সাথে। আসলে থাকতেন খানিকটা সময়। বিভিন্ন বিষয়ে কথা হতো। আমি সব বন্ধ করে তার সাথে ষোলো আনা মনেযোগ দিয়ে কথা বলতাম। তার কথা শুনতাম। তার স্বপ্নের কথা তার মুখ থেকে .. চোখ থেকে ঝরে-ঝরে পড়তে দেখতাম।

হঠাৎ কানে এলো তাঁর ―সড়কদুর্ঘটনায়― গুরুতর আহত হওয়ার কথা! মরমে গিয়ে খুব বিঁধলো!

তাজা গোলাপের গায়ে কোন দানব আঘাত করেছিলো? বিচার কি হয়েছে? প্রশাসন কি ব্যবস্থা নিয়েছে? জানি না, জানতে ইচ্ছেও করে না!

* * *

প্রিয় রাশিদুল হক, আপনি চলে গেছেন? আমি যেনো ভাই হারিয়েছি! বন্ধু হারিয়েছি!

এই দেখুন, বন্ধু-স্বজন-প্রিয়জন আপনাকে হারিয়ে কীভাবে কাঁদছে!

কাঁদছে আপনার মাদরাসার দরসের ওই টেবিলও!

কাঁদছে আপনার পরিবার! বংশধর!

আপনার মা-বাবা! আপনার শ্বশুর!

এইসব কান্নায় সিক্ত হোক আপনার কবর! ঝরে ঝরে পড়ুক আকাশের শবনম!

আর আপনার মানযিল হোক ওই জান্নাতে, আকাশ-জমিন ব্যাপী যার ব্যাপ্তি! ...

১ বছর চিকিৎসাধীন থাকার পর চলে গেলেন লেখক মুহাম্মদ রাশিদুল হক

-আরআর


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ