এম মইনুল এহসান, ভোলা
তাবলীগ জমাতের চলমান সংকট নিরসনে ভোলায় অনুষ্ঠিত হলো ওয়াজাহাতি জোড়। সোমবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর সারে ১২টা প্রর্যন্ত ভোলা শহরের বাংলা স্কুল মাঠে এই জোর অনুষ্ঠিত হয়।
জোর উপলক্ষে ফজরের পর থেকে ভোলা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার র্ধমপ্রাণ মুসল্লি ভোলা বাংলা স্কুল মাঠে জড়ো হয়।
স্থান সংকুলান না হওয়ায় বাংলা স্কুল মাঠ ছারাও ওবায়দুল হক কলেজ মাঠ , কাবিল মসজিদ, সদর বোড় , গাজিপুর রোড়, খালপার, জেলা পরিষদ চত্বর, নতুন বাজার, কালিবাড়ি রোডসহ শহরের আনাচে কানাচে মুসল্লিরা অবস্থান নেয়।
জোরে তাবলীগ জামাতের কাজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, সারা বিশ্বে এই মোবারক মেহনতকে আরো জোরদার করা, বর্তমান সংকটের কারন ও সমাধানের উপায় ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
এসময় বক্তব্য রাখেন ঢাকা কাকরাইলের মুরব্বি হাফেজ মাওলানা জোবায়ের আহমদ, মাওলানা ওমর ফারুক, মুফতি আমানুল হক, ভোলা জেলা ঈমান আক্বিদা সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি মাওলানা বশির আহমদ, মাও জালাল আহমদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাফেজ মাওলানা জোবায়ের বলেন, তাবলীগ জামাত প্রতিষ্ঠায় আলেম ওলামাদের ভূমিকাই প্রধান ছিল। পবিত্র হাদিস শরিফ অনুযায়ী আলেম, দ্বীনি এলেমের ছাত্র, এলেম শ্রবণকারী অথবা এলেমের সর্মথনকারী এই ৪ বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত থাকার কথা বলা হয়েছে।
এ চার প্রকারের বাইরে ৫ম নম্বর বেক্তি না হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তাবলীগ জামাত প্রতিষ্ঠার উদ্দ্যেশ্য হল পথ ভোলা মানুষকে আল্লাহর পথে ফিরিয়ে আনা, দ্বীনের পথে, আলেম ওলামাদের সাথে জুরে দেওয়া।
আলেম ওলামাদের বিরোধিতা করার জন্য মাওলানা ইলিয়াস রহ. তাবলীগ জামাত প্রতিষ্ঠা করেন নি। জনসাধারণকে আলেম ওলামাদের থেকে দূরে সরানো তাবলিগের মেহনত না, এটা মুসলমানদের গোমরাহ বানানোর জন্য শয়তানের মেহনত।
আগের মত আগামি দিনেও আলেম ওলামাদের পরার্মশ মোতাবেক তাবলীগ জামাত চলবে।
মাওলানা ওমর ফারুক বলেন, মাওলানা ইলিয়াস রহ. তাবলীগ জামাত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন পথ ভোলা মুসলমানকে পুনরায় দ্বীনের পথে ফেরানের জন্য। বাংলাদেশে তাবলীগ জামাত প্রতিষ্ঠা ও প্রচারের জন্য আলেম ওলামারা অনেক মেহনত করেছে।
মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী রহ. নির্দেশেই মাওলানা আবদুল আজিজ রহ. বাংলাদেশে তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেই সময় বাংলাদেশে চিল্লা দেওয়া, জুরনেওয়ালা সাথি ছিল না। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই আজ বাংলাদেশে এই কাজের এত প্রসার ।
আমরা কাউকে মহাব্বত করব, আনুগত্য করব একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, দুনিয়াবী স্বার্থে নয় । কারে মহাব্বত করতে গিয়ে, এতায়াত করতে গিয়ে আমরা আমাদের ঈমান শেষ করতে পারি না।
তিনি বলেন, মাওলানা সা’দ তার ভুল থেকে সরে এসে দারুল উলুম দেওবন্দের সাথে আপস করে ভুল শুধরে নেওয়া এবং নিজামউদ্দিন মারকাজ থেকে চলে যাওয়া প্রবীন আলেম, মাওলানা সা’দ ও তার পিতার শিক্ষক মাওলানা ইয়াকুব, মাওলানা আহমদ লাটসহ যারা বিভিন্ন কারণে নিজামুদ্দিন ছেড়ে চলে গেছেন তাদের ফিরিয়ে আনলে আমরা পুনরায় তার এতায়াত মানতে রাজি আছি।
মুফতি আমানুল হক বলেন, আমরা কারো বিরুদ্ধে গীবত করতে এখানে আসিনি। আমাদের ঈমানি দায়িত্বের কারণে আমরা তাবলীগ করেছি, আবার সেই ঈমানি দায়িত্ব থাকার কারণেই আমরা আজ মাওলানা সা’দের বিরুদ্ধে কথা বলছি।
তাবলীগের তিন প্রান পুরুষ মাওলানা ইলিয়াস, মাওলানা ইউসুফ, মাওলানা এনামুল হাসান রহ. তাবলীগ পরিচালনায় ওলামা মাশায়েকদের সাথে আলোচনা ও পরামর্শ করতেন। সে সময়ে তাবলীগ নিয়ে তেমন কোন বির্তক হয় নি।
কওমি মাদরাসা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার – বিস্তারিত জানুন
আলেম ওলামারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে তাবলীগের সহায়তা করে গেছেন। কিন্তু ২০১৫ সালে মাওলানা সা’দ নিজেকে শরিয়ত বিরোধীভাবে বিশ্ব আমির দাবি করেন এবং তাবলীগের দীর্ঘকালীন তরতিব না মেনে বিভিন্ন ইজতেমায় ও বয়ানে কুরআন হাদিসের মন গড়া ব্যাখ্যা, ভুল ও বির্তকিত ফতোয়া প্রদান, আম্বিয়া কেরাম ও সাহাবায়ে কেরামের শানে অশালিন মন্তব্যের কারনে নিজামুদ্দিন মারকাযের র্শীষ ওলামা ও মুরব্বিানে কেরাম শরয়ী বিবেচনায় মাওলানা সা’দের কর্মকান্ড মেনে নিতে না পেরে মারকায ছেড়ে চলে গেছেন।
এর পর বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের আলেমগণ মাওলানা সা’দ সাহেবের ভুলগুলো সংশোধন করার জন্য বারবার তাগিদ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি দুঃখজনকভাবে এখনো ভুলের ওপর অনড় আছেন।
তাই আমাদের বাধ্য হয়ে তার বিরুদ্ধে বলতে হচ্ছে । আমরা আশা করছি, দোয়া করছি তিনি ভুল থেকে ফিরে আসবেন।
জোড় থেকে ৪টি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
(১) জমহুর (সংখাগরিষ্ঠ) আলেমগন এক মত হয়েছেন তিনটি মৌলিক কারণে (ক) কোরআন হাদিসের মনগড়া ব্যাখ্যা, (খ) তাবলীগের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে তাবলীগ ব্যাতিত দ্বীনের অন্যান্য মেহনতকে (দ্বীন শিক্ষা ও তাসাউফ) হেয় পতিপন্ন করা (গ) পূর্ববর্তী ৩ হজরতজ্বীর তরতীব থেকে সরে যাওয়ার কারনে মাওলানা সা’দ কে অনুসরণ করা বর্জনীয় এবং নিষিদ্ধ।
(২) মাওলানা সা’দ পূর্বের আমির মরহুম মাওলানা এনামুল হাসানের রহ. রেখে যাওয়া শুরায়ী নেজামকে উপেক্ষা করে নিজেই নিজেকে আমির বলে দাবি করেছে, যা শরীয়ত বিরোধী। তাই তার কোনো সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা যাবে না।
(৩) পূর্ববর্তি তিন হজরতজ্বীর বাতানো পদ্ধতিতে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ সারা পৃথিবীতে সমাদৃত ও গৃহীত হয়েছে। তাই বাংলাদেশের তাবলীগের কাজও তাদের বাতানো পদ্ধতিতে উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধায়নে পরিচালিত হবে। নতুন কোন পদ্ধতি চালু করা যাবে না। জেলা মারকায সহ সকল মারকায এই পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে ।
(৪) সরকারের সাথে পরামর্শক্রমে ২০১৮ সালের ৫দিনের জোর ৭,৮,৯,১০,১১ ডিসেম্ভর এবং ২০১৯ সালের বিশ্ব ইজতেমার ১ম পর্ব ১৮,১৯,২০ জানুয়ারী এবং ২য় পর্ব ২৫,২৬,২৭ তারিখ অনুষ্ঠিত হবে ।
এছারা ভোলাতে কোন আঞ্চলিক ইজতেমা হবে না বলে জোরে উল্লোখ করা হয়। ভোলা জেলার ইজতেমা টঙ্গি ময়দানে প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হবে।
-আরআর
[মালিবাগে চালু হয়েছে অত্যাধুনিক হিজামা সেন্টার। নবীজি সা. নির্দেশিত এ চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করে সুস্থ থাকুন। হার্টের রোগ, কিডনির, লিভারের ও স্ট্রোকসহ শরীরের বাত ব্যথার জন্য খুবই উপকারী হিজামা: যোগাযোগ ০১৮৫৮১৪১৮৪৬]