সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চিকিৎসকরা বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের

দাওরার সার্টিফিকেটে কি সৌদি আরবে পড়া যায়?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ড. মুহাম্মদ আমিনুল হক

অনেক কওমি মাদরাসায় পড়ুয়া ছাত্র ভাই প্রশ্ন করেন, কওমি সনদ দিয়ে সৌদি আরব কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স, মাস্টার্স ও পিএইচডিতে ভর্তি হতে পারবে কিনা?
এর সহজ উত্তর হচ্ছে, না।

কারণ, কেউ যদি অনার্সে পড়তে চান তাহলে তার এসএসসি অথবা এইচএসসি বা সমমানের সার্টিফিকেট সাবমিট করতে হবে। যখন বাংলাদেশের কেউ সৌদি আরব কিংবা অন্য কোনো দেশে পড়তে যান তখন সংশ্লিষ্ট দূতাবাস এবং চান্স পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের ঐ সার্টিফিকেটগুলো শো করতে হয় এবং তা যে ভূয়া নয় তারও প্রমাণ দিতে হয়।

কিছু কওমি কিছু হেফাজত ও চেতনার আস্তিন

যাচাইয়ের জন্য তাদের কাছে আমাদের দেশের বোর্ডগুলোতে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সীল স্বাক্ষরের নমুনাও তাদের কম্পিউটারে থাকে। অতএব দাখিল ও আলিম বা এসএসসি ও এইচএসসি ছাড়া আর কোনো সার্টিফিকেট থাকলে তারা তা গ্রহণ করেন না।

যারা মাস্টার্স -পিএইচডির জন্য আবেদন করেন তাদের দেখাতে হয় অনার্স কিংবা মাস্টার্সের সনদ।

সরকার কওমি মাদরাসার দাওরার মান মাস্টার্স দিলেও এ দিয়ে আন্তর্জাতিক কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার আবেদন করা যাবে না। কেননা এই সনদের মান সম্পর্কিত কোনো ডাটা বাইরের রাষ্ট্রের সার্ভারে নেই।

এছাড়া মাস্টার্সের আগে যে সনদগুলো থাকে যেমন অনার্স, আলিম/সমমান, দাখিল/সমমান ইত্যাদি না থাকাতে শুধু মাস্টার্সের সনদ দিয়ে উচ্চশিক্ষা কিংবা চাকুরির ময়দানে লড়াই করাটা বিশাল এক প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এখন সমাধান কী?

সমাধান অনেক কওমি ভাই আগেই বের করেছেন। তাদের অনেকেই দাখিল ও আলিম পরীক্ষা দিয়ে সেই সার্টিফিকেট দিয়ে বিদেশে অনার্স করতে যাচ্ছেন। আবার অনেকেই দেশের কোনো ইউনিভার্সিটিতে অনার্স ও মাস্টার্স করে সেই সনদ ব্যবহার করে উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছেন।

আবার দারুল মাআরিফ/পটিয়া ও ঢাকার দুএকটি কওমি মাদরাসার সাথে সৌদি আরবের দু-একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুয়াদালা থাকলেও তা কিন্তু সব কওমি মাদরাসার জন্য প্রযোজ্য নয়।

অনেকেই জানেন না, আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের দাওয়াহ বিভাগে কওমি মাদরাসা থেকে দাওরাহ পাশ করা ছাত্ররা অনার্স প্রোগ্রামে পড়তে পারেন। এটা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত।

এরপর তারা এই অনার্সের সার্টিফিকেট দিয়ে সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ও পিএইচডি করতে যেতে পারেন।

এতে কওমি ছাত্রদের সময়ও বাচে এবং দাখিল ও আলিম পরীক্ষা না দিয়েও অনার্স মাস্টার্স ডিগ্রী নিয়ে দেশ বিদেশে পড়াশুনা ও চাকরি করতে পারেন....।

দাওয়াহ বিভাগ সম্পর্কিত কিছু তথ্য

আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ চার বছরের অনার্স ও দুই বছরের মাস্টার্স প্রোগ্রাম অফার করে থাকে। অনার্স ও মাস্টার্সের সনদ সরকার স্বীকৃত।

এই সনদ দিয়ে দেশ বিদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য আবেদন করা যায়।

দেশের সকল প্রকার সরকারি বেসরকারি অফিস ও প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা যায়। এই সনদ দিয়ে বিসিএস পরীক্ষা দেয়া যায়।

দাওয়াহ বিভাগে পড়া লেখার মাধ্যম সম্পূর্ণ আরবি। ১০/১২ টি কোর্স আছে ইংরেজি, কম্পিউটার ও অর্থনীতি বিষয়ক। এই সাবজেক্টগুলো পড়লে জেনারেল ছাত্রদের সাথে চাকরির বাজারে টেক্কা দেওয়া যাবে।

দাওয়াহ বিভাগে অনার্স প্রোগ্রাম শেষ করতে চার বছর লাগে। তবে কওমি মাদরাসার ছাত্ররা সাড়ে তিন বছরে শেষ করতে পারবেন। কওমির ছাত্ররা আরবি ভালো পারেন বিধায় তাদের এক সেমিস্টার কম পড়লেও চলবে।

সম্পূর্ণ ফিতে নিন অ্যাকাউন্টিং ও ইনভেস্টরি সফটওয়ার

অনার্স শেষ করে তারা সৌদি আরবসহ বিদেশে মাস্টার্স করার জন্য যেতে পারবেন। যারা দাওয়াহ বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ করবেন তারা বিদেশে পিএইচডি করতে পারবেন।

ভাল ছাত্ররা স্কলারশিপ নিয়েও পড়ার সুযোগ পেতে পারেন দাওয়াহ বিভাগে। দাওরায় যারা মুমতাজ রেজাল্ট করেছেন অথবা দাওয়াহ বিভাগে ভর্তি হয়ে প্রতি সেমিস্টারে মুমতাজ অথবা জাইয়েদ জিদ্দান রেজাল্ট করবেন তারা মাসিক ৫০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা বৃত্তি পেতে পারেন। কুরআনের হাফেজ ছাত্রদের জন্যও রয়েছে বৃত্তির ব্যবস্থা।

কেন দাওয়াহ বিভাগে অনার্স করবেন?

দাওয়াহ বিভাগ ইসলামি বিশ্বে খুব গুরুত্বপূর্ণ সাবজেক্ট। বিশেষ করে সৌদি আরবের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দাওয়াহকে ফ্যাকাল্টি বানিয়ে তার অধীনে ইসলামি সাবজেক্টগুলো পাঠ দান করা হয়।

নবী রাসূলের দাওয়াতি কলা কৌশল, একজন দাঈ ইলাল্লাহর গুণাবলী, যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মুসলিমদের করণীয়, অমুসলিমদের দাওয়াত দেয়ার পদ্ধতি, মিডিয়ায় দাওয়াতি কাজের পদ্ধতিসহ এমন কিছু কোর্স দাওয়াহ বিভাগে পড়ানো হয় যা বাংলাদেশের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা বিভাগে পড়ানো হয় না।

এ ছাড়া দাওয়াহ বিভাগের ছাত্রদের কুরআন, হাদিস, ফিকহ, উসুলে ফিকহ ও আকিদা বিষয়ে মৌলিক ধারণা দেয়া হয়।

দাওয়াহ বিভাগে পড়তে খরচ কেমন?

চার বছরে মোট ৭৪৫০০ টাকা ফি। ভর্তির সময় দিতে হয় ১৬২৫০ টাকা। হোস্টেলে থাকা খাওয়ার খরচ আলাদা। আন্তর্জাতিক মানের এই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে অত অল্প টাকায় অনার্স পড়া যায় তা কল্পনাতীত। যারা স্কলারশীপ পেয়ে যান তাদের খরচ প্রায় ৮০% কমে যায়।

দাওয়াহ বিভাগে বছরে দুই বার ছাত্র ছাত্রী ভর্তি নেওয়া হয়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে একবার এবং মার্চ ও এপ্রিল মাসে একবার।

ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্র ছাত্রী বাছাই করা হয়। আগামী অক্টোবর মাসের ৬ তারিখ একটি ভর্তি পরীক্ষা আছে। ভর্তি পরীক্ষা মোট ১০০ মার্কসের। এরমধ্যে ৬০ মার্কস আরবি। আর ২৫ মার্কস ইংরেজি। আর ১৫ মার্কস সাধারণ জ্ঞান। তবে আরবিতে পাশ করলেই চলবে।

ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করবেন যেভাবে

দাওয়াহ বিভাগের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে সরাসরি অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত নিচের লিংক থেকে আবেদন করা যাবে।

https://www.iiuc.ac.bd/home/apply-online এই লিংকে গিয়ে

১- দাওয়াহ বিভাগ সিলেক্ট করুন

২- সেমিস্টার সিলেক্ট করুন (Autumn-2018)

৩- মেইল অথবা ফিমেল সিলেক্ট করুন

৪- নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, জন্ম তারিখসহ ফরমের বাকী ঘরগুলো যথাযথভাবে পূরণ করুন।

৫- একাডেমিক ইনফরমেশনের ঘরে গিয়ে প্রথমে দাখিল বা দাওরা সিলেক্ট করুন। একইভাবে আলিম বা দাওরা সিলেক্ট করুন। এরপর বাকী তথ্য দিন। কওমী ছাত্রদের যেহেতু সার্টিফিকেট একটি তাই দাখিল ও আলিমের উভয় ঘরে দাওরার তথ্য দিন। রেজাল্টের ঘরে মুমতাজ থাকলে 5.00 লিখে দিন। জাইয়েদ জিদ্দান থাকলে 4.50 লিখে দিন। জিদ্দান হলে 4.00 লিখে দিন।

৬- আপনার ছবি ও সাইন আপলোড করুন

৭- পেমেন্ট অ্যাপ্লিকেশন ফির ঘরে গিয়ে বিকাশ অপশন সিলেক্ট করুন।এরপর 01973209030 (মারচেন্ট) নম্বরে ৫২০ টাকা বিকাশ করে ট্রানজেকশন নম্বরটি ডানপাশের ট্রানজেকশন ডিটেইল ঘরে দিন।

(বিকাশ করতে আপনার মোবাইলে *247# চাপুন এরপর ৩ চাপুন। এরপর উল্লেখিত নাম্বার ও

৫২০ টাকা টাইপ করুন। এরপর রেফারেন্স নাম্বার ১/২/৩ দিন এরপর কাউন্টার নাম্বার হিসেবে ১ দিয়ে ফাইনাল সাবমিট করুন। এরপর আপনার মোবাইলে যে কোডটি আসবে তা হুবহু ট্রানজেকশন ডিটেইল ঘরে লিখে দিন)

৮- আপনি রোবট নন এই ঘরটিতে ক্লিক করে ভেরিকেশন সম্পন্ন করে ফাইনাল সাবমিট করুন।

কোথাও ঠেকে গেলে কিংবা আরো তথ্য জানতে যোগাযোগ করুন: ড. মুহাম্মদ আমিনুল হক, চেয়ারম্যান, দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ। মোবাইল: 01673909205

এছাড়া নিচের পেইজ দুটিতে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকলে দাওয়াহ বিভাগের সকল তথ্য সহজে পাবেন: https://www.facebook.com/iiucdawahclub/
https://www.facebook.com/aminulhoque.iiuc/

কওমি মাদরাসা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ