রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫


মস্তিষ্কের বিকৃতির আযাব সবচেয়ে বড় আযাব: আল্লামা মাহমুদুল হাসান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মোস্তফা ওয়াদুদ: আজ শুক্রবার। বারিধারা থেকে পায়ে হাঁটা পথে এগুচ্ছি গুলশানের দিকে। গুলশান আযাদ মসজিদে প্রবেশ করলাম। ঘড়ির কাটায় তখন এগারোটা। আমি মসজিদে বসে আছি। ১২ টা ৩০ মিনিটে মসজিদে প্রবেশ করলেন মাওলানা মাহমুদুল হাসান। বয়ান শুরু করলেন।

প্রথমেই কুরআনের ব্যাখ্যা কিভাবে করতে হয় তাঁর উদাহরণ টেনে বললেন, আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন অনেক রকমের ভাষা- জ্ঞান দিয়ে। যুগের পরিবর্তনে ভাষার ও পরিবর্তন হয়। মানুষ যত আধুনিক হচ্ছে। মানুষের আধুনিকতার সাথে সাথে তার ভাষা এবং রুচিবোধও আধুনিক হচ্ছে।

আপনাদেরকরকে একটি উদাহরণ দিলে বুঝবেন, রাসূলুল্লাহ সা. চৌদ্দশ বছর পূর্বে তৎকালীন যুগের বাদশাহদের কাছে চিঠিপত্র প্রেরণ করেছেন। সেসকল চিঠিতে তিনি বাহশাহদেরকে উযীর বলেছেন।

লিখেছেন, ইলা আযিমির রুম। মানে, ‘হে দেশের মহান ব্যক্তি’। বাদশাহ বলেননি। কারণ বাদশাহতো শুধুমাত্র নবীই। অন্য কেউ বাদশাহ হতে পারবে না। সুতরাং দেশের মহান ব্যক্তি।

আপনার কাছে মুহাম্মদের পক্ষ থেকে ইসলাম গ্রহণের আহবান জানাচ্ছি। যদি আপনি মুসলান হয়ে যান। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তাহলে আপনি নিজেও নিরাপদ থাকবেন। আপনার দেশের লোকজনও নিরাপদ থাকবে। সুতরাং ইসলামের ছায়াতলে এসে নিজেও নিরাপদ থাকুন।

অন্যান্য সবাইকেও নিরাপদ রাখুন। আর যদি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ না করেন তাহলে আপনার নিজেরতো গুনাহ হবেই। আপনার রাজ্যে যত মানুষ আছে তাদের ইসলাম গ্রহণ না করার গুনাহও আপনাকে ভোগ করতে হবে।

ঐ সময় যে সকল চিঠিপত্র রাসূল সা. প্রেরণ করেছেন তার মাঝে একটি শব্দ ছিলো, দিয়া’ইয়াতুন। এই শব্দের বর্তমান ডিকশনারিতে অর্থ হচ্ছে, মারামারি করা। আর তখন এ শব্দ দ্বারা ইসলামের দিকে আহবান করা বুঝাতো।

এসে গেল যাদুকরী মাদরাসা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার

এখন কেউ যদি বলে রাসূল সা. মারামারির কথা কেনো বললেন? তার মানে রাসূল সা. জঙ্গী ছিলেন। আসলে কি তিনি জঙ্গী ছিলেন? নাকি ইসলামের প্রতি মানুষকে আহবান করেছিলেন?

সুতরাং যুগের পরিবর্তনে যেভাবে ভাষার পরিবর্তন হয়। সেভাবে যদি ভাষার পাণ্ডিত্য সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত না হয়। তাহলে তো সে কুরআনের সঠিক ব্যাখ্যা করতে পারবে না।

এরপর তিনি তাঁর নিজের সাথে সম্পৃক্ত করে এবারের হজের একটি ঘটনা বর্ণনা করলেন। বললেন, "এবার হজে গিয়ে মক্কার অনেক শায়খদেরকে জিজ্ঞেস করলাম। সবচেয়ে বড় আযাব কি? তখন কেউ বললো, গিবত সবচেয়ে খারাপ কাজ। কেউ বললো, মিথ্যাবলা সবচেয়ে বড় গুনাহ। কেউ বললো, কবিরা গুনাহ সবচেয়ে বড় আযাব।

আমি তাঁদের সবার কথার শেষে বললাম হয়নি। অনেকেই অনেককিছু বললেন, আমি সবাইকে বললাম না কারোটাই হয়নি। সর্বশেষ তারা কেউ জবাব দিতে না পারলে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন।

তখন আমি বললাম, আল্লাহর সবচেয়ে বড় আযাব হলো, মানুষের মস্তিষ্ক বা মগজ নষ্ট হয়ে যাওয়া। কারো যদি মাথার মগজ নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তার সবকিছুইতেই ভেজাল।

বর্তমানে সমাজে যত ধরণের ফেৎনার সৃষ্টি হচ্ছে। সবই হলো মস্তিষ্কের বিকৃতির কারণে। আপনি কাপড়ের ডিজাইন পরিবর্তন করতে পারবেন। কাপড়ের মানে পরিবর্তন আনতে পারবেন। কিন্তু যে দেহে কাপড় পরিধান করা হয়। সে দেহের কোনো পরিবর্তন করা যায় না।

মসজিদের স্ট্রাকচার পরিবর্তন করতে পারবেন। মসজিদেন ডিজাইনে নতুন রুপ আনতে পারবেন। কিন্তু যে মুসুল্লিগণ নামাজে আসেন। তাদের অনুভূতির পরিবর্তন করতে পারবেন না।

সুতরাং কুরআনের আইন কোনোদিন পরিবর্তন করা যাবে না। মানুষের দেহ যেমন পুরাতন। দেহকে কোনোদিন ডিজিটাল করা যায় না। এ দেহ যার তৈরি। তিনি একটি রুলস তৈরি করে দিয়েছেন মানুষের জন্য। তিনি কুরআনের বিধান দিয়েছেন।

এই রুলস হলো কুরআন। সুতরাং পুরাতন দেহের জন্য পুরাতন কুরআনের আইন চলবে। দেহের যেমন পরিবর্তন নেই। তেমনি কুরআনেরও পরিবর্তন হবে না। যদি কোনোদিন দেহের পরিবর্তন করতে পারেন। তাহলেই কুরআনের আইন ডিজিটাল করতে আইসেন। তার পূর্বে কুরআনের আইনে পরিবর্তন করতে আইসেন না।

সর্বশেষ মাহমুদুল হাসান বলছিলেন, আমি হজে থাকাকালীন অনেকেই আমার কাছে অনেক ধরণের প্রশ্ন করেছেন। আমি মানুষ একা। এত মানুষের জবাব আমি একা কিভাবে দিবো? আর আমার একটা নিয়ম হলো, আমি ফেতনামুলক কোনো প্রশ্নের জবাব সাথে সাথে দেই না।

আল্লাহর রহমতে গুলশান আযাদ মসজিদে আজ ত্রিশ বছর পর্যন্ত কোনো ধরনের ফেতনা নেই। সুতরাং এমন কোনো জবাবও দিতে চাই না। যার কারণে ফেতনার সম্ভাবনা তৈরি হয়। অতএব আসুন আল্লাহর পক্ষ থেকে দেয়া মগজ ঠিক করে নেই। তাহলেই সমাজে ফেতনা সৃষ্টি হবে না। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তৌফিক দান করুন। আমীন।

Ecommers-cover-bsofty

ব্যবসা এখন আপনার হাতের মুঠোয়। – বিস্তারিত জানুন

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ