বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
শিক্ষক ও বাবুর্চি নিয়োগ দেবে রাজধানীর আল্লামা শামসুল হক রহ.মাদরাসা উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার

আলেমদের অন্ধকারে রেখেই চূড়ান্ত হচ্ছে কওমি স্বীকৃতির আইন?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আতাউর রহমান খসরু

দীর্ঘ বিরতির পর আবারও আলোচনায় উঠেছে কওমি শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাকমিল (দাওরা) কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্সের সমমান দিতে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে- গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশের পর স্বীকৃতি বিষয়ে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে।

গত ৩০ জুন কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রওনক মাহমুদ (মাদরাসা) গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে আইনের খসড়া চূড়ান্ত হওয়ার তথ্যপ্রদান করেন।

আইনের খসড়াটি দ্রুততম সময়ে মন্ত্রী পরিষদে পাঠানো হবে বলেও দাবি করেন তিনি।

সরকারের এ বিবৃতি কওমি শিক্ষা সনদের বাস্তবায়নের ব্যাপারে আশার আলো দেখা দিলেও অস্বস্তি তৈরি হয়েছে কওমি শিক্ষা ধারার নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ থেকে সাধারণ ছাত্র-শিক্ষকদের মাঝে।

কারণ, হাইয়াতুল উলয়া তথা আলেম-উলামাকে এক প্রকার আন্ধকারে রেখেই চূড়ান্ত করা হয়েছে কওমি শিক্ষা সনদের এই আইনের খসড়া।

চূড়ান্ত আইনে কি আছে এবং কবে নাগাদ তা সংসদে উঠবে তা জানেন না বেফাকসহ হাইয়াতুল উলয়ার প্রতিনিধিত্বকারী আলেমগণ। এমনকি খসড়া আইন চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়টিও সরকার এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের জানান নি বলে দাবি করেছেন তারা।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে জাতীয় দীনি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ-এর মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ আলী নতুন কিছু জানেন না বলে দাবি করেন এবং তিনি বেফাকের সহকারী মহাসচিব মুফতি নুরুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে নতুন কোনো তথ্য আমার জানা নেই। মুফতি নুরুল আমিনকে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আপনি তার সঙ্গে কথা বলুন।

মুফতি নুরুল আমিন কওমি শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি বাস্তবায়ন তরান্বিতকরণ এবং সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় গঠিত লিয়াজো কমিটির অন্যতম সদস্য।

খসড়া আইনে কোন কোন বিষয় রাখা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তারাও আমাদের কিছু জানান নি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। কিন্তু তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার আগেই আমাদের দেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু গণমাধ্যমে এসেছে আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে অথচ আমরা তা দেখি নি। আমরা বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।’

কওমি মাদরাসা নিয়ে একমুঠো ভাবনা

‘তবে যেহেতু তারা কথা দিয়েছেন, আমাদের না দেখিয়ে এবং মতামত না নিয়ে আইন চূড়ান্ত করবে না তাই আশা করি চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে আমরা দেখার এবং মতামত দেয়ার সুযোগ পাবো।’- এমনটিই বলেন মুফতি নুরুল আমিন।

বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুসও ‘চূড়ান্ত খসড়া আইন’ বিষয়ে কিছু জানেন না এবং সরকার তাদের আনুষ্ঠিকভাবে কিছু জানান নি বলে স্বীকার করেন।

তবে সরকারের সঙ্গে লিয়াজো কমিটির নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি ।

অন্যদিকে হাইয়াতুল উলয়াকে মতামত প্রদানের সুযোগ না দিয়ে খসড়া আইন চূড়ান্ত করায় শঙ্কা প্রকাশ করেন সিলেট আজাদ দ্বীনী এদারায়ে তালীম, সিলেট-এর প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক।

তিনি বলেন, ‘যেহেতু পূর্ব প্রতিশ্রুত অঙ্গীকার অনুযায়ী খসড়া আইন চূড়ান্ত করার পূর্বে আমাদের মতামত নেয়া হয় নি তার আমাদের মনে শঙ্কা থেকে যাওয়া অযৌক্তিক নয়।’

তিনি মনে করেন, কওমি মাদরাসার স্বার্থ রক্ষার জন্য হাইয়াতুল উলয়ার অন্তর্ভূক্ত ৬ বোর্ডের একযোগে কাজ করা উচিৎ। সম্মিলিত প্রচেষ্টা না থাকলে কওমি মাদারিসের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হতে পারে।

মাওলানা এনামুল হক চূড়ান্ত খসড়া আইনে কি আছে তা জানতে এবং এ বিষয়ে মতামত প্রদানের সুযোগ তৈরি করতে হাইয়াতুল উলয়ার উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের নিকট একটি বৈঠক আহ্বানের দাবি জানান।

তিনি বলেন, এ মুহূর্তে কোনো শিথীলতা দেখালে ভবিষ্যতে বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারে কওমি শিক্ষাব্যবস্থা।

শঙ্কা ও দুশ্চিন্তা প্রকাশ করলেও নেতৃবৃন্দের সবাই মনে করেন, আন্তরিক হলে সরকারের বর্তমান মেয়াদেই সংসদে কওমি শিক্ষাসনদের স্বীকৃতি আইন পাশ করা সম্ভব এবং শেষ মুহূর্তে হলেও তা হবে।

শুধু নেতৃবৃন্দ নয় এমনই আশা-নিরাশায় দুলছে কওমি শিক্ষাধারার লাখো ছাত্র-শিক্ষক।

মাদরাসা শিক্ষার্থীদের শহরমুখী হওয়ার নেপথ্যে কী?

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ