সুলাইমান সাদী : গত এপ্রিল মাসে ভারতের আসানসোলে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় নিজের সন্তানের প্রাণ গেলে স্থানীয় নুরানি মসজিদের ইমাম ইমদাদুল হক রাশিদি দাঁড়িয়েছিলেন অহিংসা নীতির কিংবদন্তী প্রচারকরূপে। সম্প্রতি নাইজিরিয়ার এক মুসলিম-খ্রিস্টান দাঙ্গায়ও এমন একজন ইমামকে পরধর্ম সহিষ্ণুতার প্রমাণ দিতে দেখা গেছে।
শনিবার নাইজেরিয়ার মধ্যাঞ্চলে হঠাৎ ফুঁসে ওঠা খ্রিস্টান-মুসলিম দাঙ্গায় স্থানীয় এক ইমাম তার গ্রামের দিকে পালিয়ে আসা শত শত ভীতসন্ত্রস্ত পরিবারকে আত্মগোপন করার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। ওই ইমাম তার নিজের জীবনের পরোয়া না করে নারী-শিশুসহ অসংখ্য মানুষকে ভয়াবহ দাঙ্গার হাত থেকে বাঁচালেন।
ইমাম তাঁর নিজের বাড়িতেই আশ্রয় দিয়েছেন প্রায় তিনশ মানুষ। বিবিসিকে তিনি জানান, দাঙ্গায় আক্রান্ত হয়ে পালিয়ে আসা নারীদের আমি আমার বাড়িতে জায়গা করে দিই এবং পুরুষদের নিয়ে যাই মসজিদে।
জানা যায়, খ্রিস্টানদের বাঁচাতে আসা ইমামকে দাঙ্গাকারীরা হুমকি দেয় পালিয়ে আসা লোকদের তাদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য। কিন্তু ইমাম সাহেব সশস্ত্র ব্যক্তিদের সামনে ওই লোকগুলোর প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং অনুনয় করে তাদেরকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। এমন আকস্মিক ঘটনায় দাঙ্গাকারীরা শান্ত হয়ে পড়েন।
নাইজেরিয়া ওই অঞ্চলটিতে প্রায়ই এমন দাঙ্গার ঘটনা ঘটে থাকে। জমিজমা, চারণভূমি ইত্যাদি নিয়ে দাঙ্গার সূত্রপাত ঘটলেও সেটিকে ধর্মীয় সহিংসতায় রূপ দেয়ার চেষ্টা করা হয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
সেখানে গত কয়েক বছর ধরে চলছে দাঙ্গা ও পাল্টাপাল্টি আক্রমণের ঘটনা। এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত শত শত মানুষ নিহত হয়েছে বলে এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়।
অবশ্য ২০১৬ সালের এক প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, নাইজেরিয়ার ওই অঞ্চলে ধর্মীয় দাঙ্গার চেয়ে গবাদিপশুর চারণভূমি নিয়ে ঘটা দাঙ্গা-হাঙ্গামায় বেশি মানুষ মারা গেছে।
শনিবারের এ ঘটনায় আবার ফুটে উঠেছে এপ্রিলের আসানসোলের চিত্র। ইমাম রাশিদির মতোই নিরাপত্তাজনিত কারণে নাম গোপন করা এ ইমাম জ্বলে উঠেছেন ইসলামের সম্প্রীতির শিক্ষায়। এসব ঘটনার মাধ্যমে বিশ্ব জুড়ে ইসলামের মৌলিক শিক্ষা আরো স্পষ্টতর হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
২৮ আসনের বাস পঞ্চাশ যাত্রী নিয়ে খাদে, নিহত ৪৮