শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


পশ্চিমবঙ্গে ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করেছে মন্দির কমিটি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম:   হিন্দুদের আয়োজনে ঈদের নামাজ পড়লেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। শনিবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির তৈরি হল পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার গড়পাড়ায়।

কয়েক মাস আগেই গোবরডাঙাসহ উত্তর ২৪ পরগনার অনেক জায়গা গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। প্রচুর ঘরবাড়ি ভাঙচুর হয়, চলে লুঠপাট। শনিবারের এই ঘটনা সেই অতীতকে ভুলিয়ে দিল।

ভারতের গণমাধ্যম জানিয়েছে, গড়পাড়ায় ঈদগাহ আছে। কিন্তু সেখানে নামাজ পড়ার কোনও জায়গা নেই। একেবারেই ছোট মসজিদ।

শনিবার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ কোথায় নামাজ পড়বেন, তা নিয়ে সমস্যায় পড়েন। তারা ঈদগাহে নামাজ পড়ার সমস্যার কথা জানান মসজিদ কমিটির কর্তাদের কাছে।

তারা শরণাপন্ন হন সমীর নন্দী, শঙ্কর দত্ত, বিশ্বজিত দাসের মতো স্থানীয় যুবকদের। তারা মসজিদ কমিটিকে বলেন, ‘কোনও চিন্তা করবেন না। আমরা আছি।’

ওই এলাকাতে একটি ক্লাবের পাশেই রয়েছে দুর্গামন্দির। সেখানে প্রতি বছর ধূমধাম করে দুর্গাপুজো হয়। সমীররা সিদ্ধান্ত নেন, মন্দির সংলগ্ন জায়গাতেই হবে নামাজ। যেমন কথা, তেমন কাজ।

তারা মন্দির লাগোয়া মাঠটি পরিষ্কার করে দেন তাড়াতাড়ি। তারপর সেখানেই চলে নামাজ। এতে খুব খুশি স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন।

সংস্কৃতি চর্চার পীঠস্থান হিসেবে গোবরডাঙার নাম রয়েছে। এখানে একাধিক নাটকের দল আছে। রয়েছে স্থায়ী নাট্যমঞ্চ। পাশের অশোকনগরেরও নাম রয়েছে নাট্যচর্চার জন্য।

স্থানীয় ক্লাবের পাশে যেমনি দুর্গামন্দির কমিটির জায়গা রয়েছে, তেমনি তার পাশেই আছে মসজিদ। একটু দূরেই আছে একটি গির্জাও। সব ধর্মস্থানেই স্থানীয় মানুষ ধর্ম নির্বিশেষে সেখানে হাজির থাকেন।

গড়পাড়ার মসজিদ কমিটির সভাপতি আবু বক্কর বলেন, ‘এলাকার ঈদগাহটি খুব ছোট। সেখানে বসে এক সঙ্গে নমাজ পড়ার জায়গা ছিল না। ফলে সমস্যা হচ্ছিল।

অনেক দূরে যেতে হত নমাজ পড়তে। স্থানীয় হিন্দু ভাইরা সেই সমস্যার সমাধান করে দিয়েছেন তাদের মন্দির সংলগ্ন মাঠের জায়গা ছেড়ে দিয়ে। খুব ভালো লাগছে। এই সহাবস্থান নিঃসন্দেহে নজির হয়ে থাকবে।’

দুর্গাপূজা কমিটির সভাপতি সমীর নন্দী বলেন, ‘আমরা সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শুধুমাত্র ঈদগাহে জায়গা না থাকার কারণে খুশির ঈদে নমাজ পড়া বন্ধ থাকবে, মানুষ হিসেবে এটা আমরা মেনে নিতে পারিনি।

তাই তাদের সুযোগ করে দিতে পেরে আনন্দই হচ্ছে। এই ভাবে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ নিজেদের সুখে দুঃখে এগিয়ে এলেই সাম্প্রদায়িক হানাহানি বন্ধ হয়ে যাবে।’

আরো পড়ুন-যেভাবে কাটে আল্লামা আহমদ শফীর ঈদ ও রমজান


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ