মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪ ।। ৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ৯ রমজান ১৪৪৫

শিরোনাম :

যাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য, বর্তমানে যাকাত ফিতরার পরিমাণ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হুসাইন মাহমুদ

যাকাত ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রোকন। ঈমানের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হল নামাজ ও যাকাত।

কুরআন মাজিদে বহু স্থানে নামাজ-যাকাতের আদেশ করা হয়েছে এবং আল্লাহর অনুগত বান্দাদের জন্য অশেষ ছাওয়াব, রহমত ও মাগফিরাতের পাশাপাশি আত্মশুদ্ধিরও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-
তোমরা নামাজ আদায় কর এবং যাকাত প্রদান কর। তোমরা যে উত্তম কাজ নিজেদের জন্য অগ্রে প্রেরণ করবে তা আল্লাহর নিকটে পাবে। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখছেন।( -সূরা বাকারা : ১১০)

এছাড়া কুরআন মাজিদের বিভিন্ন আয়াত থেকে পরিষ্কার জানা যায় যে, নামাজ ও যাকাতের পাবন্দী ছাড়া আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের প্রশ্নই অবান্তর। কুরআন মজীদের বিভিন্ন আয়াতে, যেখানে খাঁটি মু’মিনের গুণ ও বৈশিষ্ট্য উল্লেখিত হয়েছে সেখানে নামাজ -যাকাতের কথা এসেছে অপরিহার্যভাবে।

কুরআনের দৃষ্টিতে প্রকৃত পুণ্যশীলদের পরিচয় যেখানে দেওয়া হয়েছে সেখানে নামাজ-যাকাতের উল্লেখ এসেছে। (সূরা বাকারা ১৭৭)

যাকাত শরীয়তের এমন এক অকাট্য বিধান, যে সম্পর্কে দলীল-প্রমাণের আলোচনা নিষ্প্রয়োজন। যাকাত সংক্রান্ত কিছু কিছু মাসআলায় ইমামদের মধ্যে মতভিন্নতা থাকলেও মূল বিষয়ে অর্থাৎ যাকাত ফরয হওয়া সম্পর্কে কোনো মতভেদ নেই।

যাকাতের ফরযিয়াতকে যে অস্বীকার করে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়।’ (-ফাতহুল বারী ৩/৩০৯)

যাদের ওপর যাকাত ওয়াজিব :
যাদের ওপর যাকাত ওয়াজিব তারা তিন প্রকার:
১. নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া।

২. যাদের সম্পদের ওপর পূর্ণ এক বছর অতিবাহিত হয়েছে। তবে ফসলের ক্ষেত্রে এক বছর অতিবাহিত হওয়া জরুরি নয় বরং ফসলের যাকাতের সম্পর্ক ফসল পাকার সাথে।
৩. ফলের যাকাত ওয়াজিব হয় যখন তা পরিপক্কতা লাভ করে এবং খাওয়ার উপযোগী হয়।
যাকাত কার ওপর ফরয ?

ইসলামী শরীয়তে সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য বা যে কোন একটির সমমূল্যের সম্পদ একবছর কারো নিকট আবর্তিত হলে শতকরা ২.৫০% সম্পদের মূল্যমান আল্লাহ তা’আলার নির্দেশিত আট প্রকার খাতে ব্যয় করাকেই যাকাত বলা হয়।

সুতরাং যার কাছে সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য বা যে কোন একটির সমমূল্যের সম্পদ প্রয়োজনের অতিরিক্ত একবছর গচ্ছিত থাকবে তার ওপর যাকাত আদায় করা ফরয।

যাকাতের অর্থ ব্যয়ের খাতসমূহ :
আল্লাহ তা’আলা কুরআনে যাকাতের অর্থ ব্যয়ে আটটি খাত উল্লেখ করেছেন। ১.ফকির, ২.মিসকিন, ৩.যাকাত আদায়ে নিয়োজিত কর্মচারী, ৪.যাদের চিত্ত অকর্ষণ প্রয়োজন, ৫.দাসত্ব থেকে মুক্তি জন্য, ৬.ঋণগ্রস্থদের ঋণ থেকে মুক্তির জন্য, ৭.আল্লাহর পথে যারা জিহাদ করে তাদের
জন্য, ৮.মুসাফিরদের জন্য এই হলো আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। (সুরা তাওবা-৬০)

যাকাত না দেয়ার পরিনাম
যারা সোনা রুপা জমা করে অথচ আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না (যাকাত দেয়না) তাদেরকে কষ্টদায়ক আযাবের সংবাদ দিন।

যেদিন গরম করা হবে সেইগুলিকে দোযখের আগুনে অতঃপর দাগ দেয়া হবে সেগুলি দ্বারা তাদের ললাটে, তাদের পার্শ্বদেশে ও তাদের পৃষ্টদেশে এবং বলা হবে এখন স্বাদ গ্রহণ কর।যাহা তোমরা দুনিয়াতে জমা করেছিলে। [তওবা ৩৪]

#বর্তমানে যাকাত ফিতরার নেসাব:
#যাকাতের নেসাব: ৪০.০০০/-টাকা
#রুপার পাইকারী মূল্য ৭৫০/- হিসেবে ৫২.৫ ভরির মূল্য।
#ফিতরা: সর্বসিম্ন ৬৫/-

রুপার দাম আরো বাড়লে সে অনুপাতে হিসেব করে নিতে হবে।

যারা যাকাত আদায় করেনা তাদের ব্যাপারে কুরআন ও হাদীসে আরো অনেক শাস্তি ও ভয়াবহতার কথা উল্লেখ রয়েছে।

মুসলমানের সত্যতার ব্যাপারে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই সুতরাং আল্লাহর হুকুম মেনে প্রকৃত মুমিন হিসেবে জীবন যাপন করাই বুদ্ধিমানের কাজ আল্লাহ তায়ালা সকলকে তৌফিক দান করুন আমীন।

আরো পড়ুন- যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ হলে শুধু কাজা ওয়াজিব হয়


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ