মুফতি জাকারিয়া হারুন
* রোজা অবস্থায় ইনহেলার ব্যবহার করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। যদি কোন ব্যক্তি হাপানি অথবা অ্যাজমার কারণে ইনহেলার ব্যবহার করতে বাধ্য হয়।
তাহলে রোজা ভাঙার অনুমতি আছে। তবে উক্ত রোজা পরে কাজা করতে হবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না। সারা জীবনও যদি সুস্থ হওয়ার আশা না থাকে তাহলে রোজার মাস শুরু হওয়ার পরে বা রমজানের শেষে ফিদিয়া দিয়ে দিতে হবে। ফাতোয়া শামী ২/৩৯৫
* ইচ্ছাকৃতভাবে মশা-মাছি বা ধুলোবালি খেলে রোজা ভেঙে যাবে। এতে শুধু কাজা ওয়াজিব হবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না। আর যদি হঠাৎ অনিচ্ছায় মশা-মাছি বা ধুলোবালি গলায় ঢুকে পড়ে তাহলে রোজা ভাঙবে না। ফাতোয়া আলমগীরী ১/১৯৮
* আগর বাতি জ¦ালিয়ে ধোয়া গ্রহণ করে ঘ্রাণ নিলে রোজা ভেঙে যাবে। অবশ্য আতর বা ফুলের ঘ্রাণ, যে গুলোর ধোয়া হয় না এগুলোর ঘ্রাণ গ্রহণ করলে রোজা ভাঙবে না। আদদুররুল মুখতার ১/১৪৯
* দাঁতের ফাঁকে গোশতের টুকরা বা এ জাতীয় কিছু আটকে গেলে তা বের করে পুনরায় খেয়ে ফেলে। তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। পরিমাণে যত অল্পই হোক না কেন। এতে শুধু কাজা ওয়াজিব হবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না। ফতোয়া আলমগিরী ১/২০৮
বি.দ্র. দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাদ্য যদি বুটের বরাবর হয়, বা বড় হয়, এ পরিমাণ খাদ্যবস্তু গিলে ফেলার কারণে রোজা ভেঙে যাবে। আর যদি বুটের চেয়ে কম হয়, তাহলে মুখের ভেতর থেকে বের না করে গিলে ফেলার কারণে রোজা ভাঙবে না।
হ্যাঁ। এ পরিমাণ বস্তু যদি মুখের বাইরে এনে পুনরায় খেয়ে নেয়। তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না।
* মুখের ভেতর পান থাকা অবস্থায় ঘুমানোর পর যদি সুবহে সাদিকের পূর্বেই জাগ্রত হয় এবং সাথে সাথে মুখ পরিষ্কার করে নেয়, তাহলে রোজার ক্ষতি হবে না। আর যদি সুবহে সাদিকের পর জাগ্রত হয়, তাহলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। শুধু কাজা ওয়াজিব হবে। তবে কাফফারা ওয়াজিব হবে না। বেহেশতি জেওর ৩/১৪
* রোজার কথা স্মরণ থাকা অবস্থায় কুলি করার সময় যদি পানি গলার ভেতর চলে যায় তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। শুধু কাজা ওয়াজিব হবে। তবে কাফফারা ওয়াজিব হবে না। দুররে মুখতার ১/১৫০
* রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভরে বমি করলে রোজা ভেঙে যাবে। শুধু কাজা ওয়াজিব হবে। তবে কাফফারা ওয়াজিব হবে না। হিদায়া ১/২১৮
* ইচ্ছাকৃত বমির পরিমাণ মুখ ভরে না হলে রোজা ভাঙবে না। হিদায়া ১/২১৮
* অনিচ্ছাকৃত মুখ ভরে বমির করলেও রোজা ভাঙবে না। হিদায়া ১/২১৮
* বমি মুখে আসার পর ইচ্ছাকৃতভাবে গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যাবে। যদিও পরিমাণে কম হয়। শুধু কাজা ওয়াজিব হবে। তবে কাফফারা ওয়াজিব হবে না। ফতোয়া শামী ২/৪১৫
* ঘুমন্ত অবস্থায় কিছু পানাহার করলে রোজা ভেঙে যাবে। শুধু কাজা ওয়াজিব হবে। তবে কাফফারা ওয়াজিব হবে না। ফতোয়া হিন্দিয়া ১/২০২
* রোজা অবস্থায় পানি নাকের ভেতর দিয়ে পেটে চলে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। শুধু কাজা ওয়াজিব হবে। তবে কাফফারা ওয়াজিব হবে না। ফতোয়া আলমগিরী ১/২০২
* সূর্য ডুবে গেছে ধারণা করে ইফতার করার পর যদি জানা যায় সূর্য ডুবেনি, তাহলে সে রোজা শুদ্ধ হবে না। তবে শুধু কাজা ওয়াজিব। অবশ্যই কাফফারা ওয়াজিব হবে না। হিদায়া ১/২২৫
* পায়খানার রাস্তায় ডোস ব্যবহার করলে রোজা ভেঙে যাবে । শুধু কাজা ওয়াজিব হবে। তবে কাফফারা ওয়াজিব হবে না। ফতোয়া হিন্দিয়া ১/২০৪
* কোনো কারণে রোজা ভেঙে গেছে ধারণা করে কোন কিছু খায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। শুধু কাজা ওয়াজিব হবে। তবে কাফফারা ওয়াজিব হবে না। হিদায়া ১/১৮৭
আরো পড়ুন- যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ হলে কাজা ও কাফফারা ওয়াজিব হয়