ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন
জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘আওয়ার ইসলাম’ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশী ওলামা মাশায়েখদের লিখিত গ্রন্থাদি বিশ্ববিশ্রুত ইসলামী শিক্ষা নিকেতন দারুল উলুম দেওবন্দের কেন্দ্রীয় পাঠাগারে প্রেরণের যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাকে আমরা স্বাগত জানাই।
এটি যুগান্তকারী, কল্যাণধর্মী ও সময়ের সাহসী পদক্ষেপ।দারুল উলুমের যিম্মাদারগণ ‘আওয়ার ইসলাম’ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগের প্রশংসা করে সম্পাদক মুফতি হুমায়ুন আইয়ুবের কাছে একটি স্তুতিপত্র (খবঃঃবৎ ড়ভ ধঢ়ঢ়ৎবপরধঃরড়হ) পাঠিয়েছেন।
বাংলা ভাষায় দেওবন্দি চিন্তাধারার ওলামা মাশায়েখের লিখিত মৌলিক গ্রন্থাদির সংখ্যা কয়েক হাজার। এমনকি তাফসির, হাদিস, ফিকহ, উসুল, আকায়েদ, সাহিত্য, নাহু, সরফ, জীবনচরিত, ভ্রমণ কাহিনী ইতিহাস বিষয়ে ভারতীয় বিদগ্ধ আলিমদের লিখিত বিপুল সংখ্যক উর্দূ ও আরবি গ্রন্থ বাংলাদেশে অনুদিত হয়ে পাঠকপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে।
দারুল উলূম দেওবন্দের সহকারী প্রধান পরিচালক বাংলা ভাষায় মুদ্রিত ইসলামি গ্রন্থাদির লেখক ও অনুবাদকদের একটি তালিকা প্রেরণ করার জন্য ‘আওয়ার ইসলাম’এর সম্পাদককে অনুরোধ করেছেন চিঠিতে। এতে বোঝা যায় দারুল উলুম কর্তৃপক্ষ গ্রন্থের পাশাপাশি লেখক-অনুবাদকদের নামের তালিকাও সংরক্ষণ করতে আগ্রহী।
বাংলাদেশের সব কওমি মাদরাসা দারুল উলুম দেওবন্দের শাখা। দেওবন্দ থেকে ফারেগ হয়ে বহু আলেম বাংলাদেশের বিভিন্ন মাদরাসায় পাঠদানে নিয়োজিত রয়েছেন।
প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেওবন্দের উস্তাদ বাংলাদেশ সফর করে থাকেন। ভারতীয় বহু লেখকের লিখিত গ্রন্থ বাংলাদেশের কওমি মাদরাসায় পাঠ্যতালিকাভূক্ত অথবা রেফারেন্স গ্রন্থ হিসেবে নির্ভরযোগ্য। অপর দিকে মুফতি আমিমুল ইহসান রহ., মাওলানা আবুল হাসান চাটগামী রহ. ও মাওলানা মুহাম্মদ রফিক মুহরভীসহ কতিপয় বাংলাদেশী আলেমের লিখিত গ্রন্থাবলি দেওবন্দ-সাহারানপুরে ভারতীয় ছাত্রদের নিকট জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
‘আওয়ার ইসলাম’ ও দারুল উলুম দেওবন্দের এ সমঝোতা স্মারকের ফলে বাংলাদেশ-ভারত পারস্পরিক ইলমি ও দাওয়াতি সম্পর্ক আগামী দিনে আরো সুদৃঢ় ও বন্ধুত্বপূর্ণ হবে।
কয়েক বছর আগে ‘মাশাহিরে সাহারানপুর’ নামে মাযাহিরুল উলুম সাহারানপুরের যে সব ছাত্র দেশে বিদেশে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন তাঁদের জীবনালেখ্য বেশ ক’খণ্ডে প্রকাশিত হয়।
আফসোস, সাবেক পার্লামেন্ট মেম্বার ও শায়খুল হাদিস খতিবে আযম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ. সহ সাহারানপুরে শিক্ষাপ্রাপ্ত বাংলাদেশী বহু পণ্ডিত আলেমের নাম পর্যন্ত এসব গ্রন্থে উল্লেখ নেই। এর মূল কারণ হচ্ছে যোগাযোগের অভাব ও সমঝোতার ঘাটতি।
বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার নির্বাহীবৃন্দ, লেখক ও অনুবাদকগণ তাদের রচিত ও প্রকাশিত গ্রন্থাবলির কপি ‘আওয়ার ইসলাম’ এর মাধ্যমে দেওবন্দের লাইব্রেরিতে পাঠাতে উদ্যোগী হলে বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।
লেখক: অধ্যাপক, ওমর গণি এমইএস কলেজ চট্টগ্রাম।
আওয়ার ইসলামকে দারুল উলুম দেওবন্দের চিঠি
এসএস