শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


রমজানে ইফতার পার্টিগুলো কেমন হয়? কেমন হওয়া উচিত?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাওলাদার জরিুল ইসলাম: শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান। একই সঙ্গে রাজধানীসহ দেশের নানা প্রান্তে শুরু হবে ইফতার পার্টি। সরকারি বেসরকারি, রাজনৈতিক অরাজনৈতিক কিংবা সামাজিক সংগঠন কেউ বাদ যান না এই ইফতার পার্টি থেকে। অনেক মাদরাসা মসজিদেও করা হয় ইফতার মাহফিল।

এগুলো কি ইসলামসম্মত উপায়ে হয়? নাকি রাজনৈতিক আলাপের ধোপে হারিয়ে যায় ইফতারের ফজিলতপূর্ণ আমল?

রমজানে ইফতার পার্টিসহ নানা দিক নিয়ে কথা হয় রাজধানীর কুড়িলে অবস্থিত শায়খ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আল্লামা মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদের সঙ্গে।

জানতে চাইলে তিনি আওয়ার  ইসলামকে বলেন, রমজান মাসে ইফতার পার্টি বা ইফতার মাহফিল নামে প্রচলিত যে অনুষ্ঠান দেখা যায় ইসলামের শুরু যুগে এর কোন অস্তিত্ব ছিলো না। ইসলাম এর কোন মৌলিক ভিত্তিও নেই। এগুলো নতুন শুরু করা হয়েছে।

এ ধরনের ইফতার মাহফিল জায়েজ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৩ শর্তে প্রচলিত ইফতার মাহফিল বা ইফতার পার্টি জায়েজ হতে পারে।

এক. এতে শরিয়ত বিরোধী কোন কার্যকলাপ না হওয়া। দুই. এটাকে রেওয়াজ বা  প্রথা হিসেবে পালন না করা। তিন. এগুলোকে ‍পৃথক সাওয়াবের বিষয় বা পৃথক ইবাদত মনে না করা। এখন দেখার বিষয় কোথায় কতোটুকু এ বিষয়গুলোর প্রতি খেয়াল রাখা হয়।

রাজনৈতিক ইফতার মাহফিল বিষয়ে তিনি বলেন, বস্তুবাদী রাজনৈতিক দলগুলো আয়োজিত প্রায় সবগুলো ইফতার মাহফিলে শরিয়তের বিধানের স্পষ্ট লংঘন হতে দেখা যায়। নারী পুরুষ বেপর্দা হয়ে এক সঙ্গে বসে ইফতার করা হয়। অনেক সময় তাদের মাগরিবের নামাজেরও খবর থাকে না। দোয়ার এহতেমাম করা হয় না। আরো নানা অসঙ্গতি এখানে দেখা যায়। তাই এসব ইফতার মাহফিল থেকে বিরত থাকা জরুরি। আর যদি করতেই হয় তাহলে শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করা উচিত।

মাদরসাগুলোতেও দেখা যায় ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়ে থাকে। তবে এখানে শরিয়ত বিরোধী কোন কাজ হয় না বলে একে না জায়েয বলার সুযোগ নেই। শুধু মাদরাসা কেন যেখানেই শরিয়ত নিষিদ্ধ কিছু পাওয়া যাবে না তাকে সরাসরি না জায়েয বলা যায় না।

ইফতার পার্টিগুলোতে কেবল উচ্চ শ্রেণির মানুষই দাওয়াত পেয়ে থাকেন। এ বিষয়টি কেমন? এমন প্রশ্নের জবাবে মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ বলেন, এখানে বিষয়টা হলো, মেজবান (দাওয়াতদাতা) যাকে দাওয়াত দিবেন তিনিই সে দাওয়াতে যাবেন। এটাই স্বাভাবিক।

তবে ইফতার মাহফিলগুলোতে সাধারণ ও গরিব মিসকিনদের জন্যও ব্যবস্থা রাখতে পারলে ভালো হয়। রোজাদারদের ইফতার করানোই মূল উদ্দেশ্য হওয়া চাই। শ্রেণি বিন্যাসের দিকে নজর না দেয়াই শ্রেয়।

ইফতার মাহফিল কেমন হওয়া চাই জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইফতার মাহফিল ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ হওয়া চাই। যেখানে আলোচকগণ দুনিয়াবি কথা না বলে কুরআন হাদিসের কথা বলবেন। রমজানের আমল নিয়ে কথা বলবেন। এখানে কুরআনের তেলাওয়াত ও সংক্ষিপ্ত তাফসির হতে পারে।

তিনি বলেন, রমজানের জরুরি মাসায়েল নিয়ে আলাচনা হতে পারে। হাদিস শরিফের ভাষ্য মতে ইফতারের পূর্বে দোয়া কবুল হয়ে থাকে। তাই এ সময়টাতে বিশেষভাবে দোয়া রোনাজারিতে মগ্ন হওয়া কাম্য। ইফতার মাহফিল যেন হয় পবিত্রতার আবেশে ভরপুর সেটাই খেয়াল রাখা।

আরো পড়ৃন- রোজার ফজিলত ও জরুরি মাসাইল

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ