আওয়ার ইসলাম: রাজধানীর ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশন মিলনায়তনে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মারুফ-এর সভাপতিত্বে আয়োজিত আগামী ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেট বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা পেশ করেন সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল এম হাছিবুল ইসলাম।
আজ ১০ মে অনুষ্ঠিত বাজেট বিষয়ক অনুষ্ঠানে এম হাছিবুল ইসলাম বলেন, বলেন, জাতীয় বাজেট একটি দেশের সরকারের প্রাণ শক্তি। শুধু বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব-নিকাশ নয়, সার্বিক কর্মপরিকল্পনার একটি সামগ্রিক চিত্র। এক কথায় বার্ষিক কর্মপরিকল্পনার চাবিকাঠি।
সরকারের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কুটনৈতিক দর্শন এবং প্রজ্ঞার পরিচায়ক বাজেট। সম্পদকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে খাতওয়ারি ব্যবহারের প্রায়োগিক বার্ষিক কর্মযজ্ঞ বাজেটের বিভিন্ন দিক। সরকারের বার্ষিক কর্মপরিকল্পনায় কোন খাত গুরুত্ব পাচ্ছে সেটা বাজেটই বলে দেয়।
এছাড়া বাজেট নানাবিধ কার্যনির্বাহের জন্য অর্থের বরাদ্দ রাখা হয়। কোথা থেকে অর্থ সংগ্রহ করা হবে এবং কীভাবে তা বণ্টন করা হবে, তার একটা হিসাবও তুলে ধরা হয় বাজেটে।
তিনি বলেন, বাজেট হতে হবে শিক্ষা ও উদ্যোক্তাবান্ধব এবং কর্মসংস্থানে থাকতে হবে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা।
সভায় ইশা ছাত্র আন্দোলনের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ২০১৮-১৯ নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জাতীয় বাজেট ২০১৮-১৯ এর নীতিগত এবং খাতওয়ারী বাজেট প্রস্তাবনা
ক. নীতিগত প্রস্তাবনা
খ. খাতওয়ারি প্রস্তাবনা (শিক্ষা, মানব সম্পদ উন্নয়ন ও জনকল্যাণ) কে মুখ্য করে
ক. নীতিগত প্রস্তাবনা :
১. বাজেট প্রণয়ন পদ্ধতি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক হতে হবে।
২. উচ্চভিলাসী বাজেটের পরিবর্তে বাস্তবমুখী বাজেট প্রণয়ন।
৩. নির্বাচনী বাজেট না করে যথাযথ খাতে বরাদ্ধ দিতে হবে।
৪. জনতুষ্টিমূলক বাজেটের পরিবর্তে কার্যকর বাজেট করতে হবে।
৫. দেশীয় শিল্প খাতকে সুরক্ষা প্রদান।
৬. বিদেশ থেকে ভোগ্য পণ্য আমদানীকে নিরুৎসাহিত করা।
৮. কৃষি খাতকে প্রধান্য দেয়া।
৯. মানব সম্পদ উন্নয়ন খাতে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা।
১০. সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা।
১১. অবকাঠামোগত উন্নয়নে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির স্বার্থকে প্রধান্য দেয়া।
১২. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কার্যকর বাজেট বৃদ্ধি করা।
১৩. জলবায়ু পরিবর্তন ব্যবস্থাপনাকে গুরুত্ব দেয়া।
১৪. কর আদায়ে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণে গুরুত্ব দেয়া।
১৫. গণপরিবহন উন্নয়নের ক্ষেত্রে রেল ও নৌপথকে প্রাধান্য দেয়া।
১৬. জ্বালানী খাতে স্বনির্ভরতা অর্জন করা।
১৭. ব্যাংক ঋণের সুদ বিলোপ করে বেসরকারী খাতের বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা ।
খ. খাতভিত্তিক প্রস্তাবনা:
২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেটে আমাদের দাবীসমূহ :
১. তরুণদের নিত্য নতুন উদ্যোগকে সফল করতে সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
২. বেসরকারি খাতে নিত্য নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করতে উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে। বাজেট হতে হবে উদ্যোক্তাবান্ধব।
৩. বাজেটে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা চাই।
৪. দেশীয় শিল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশী পণ্যের প্রসার করতে হবে।
৫. গ্রাম ও শহরে শিক্ষার মানের তারতম্য নিরসনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সমান মান উন্নয়ন ঘটাতে বাজেটে গুরুত্ব দিতে হবে।
৬. গবেষণা, আবাসন ও পরিবহন খাতের সংকট নিরসনের জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।
৭. কারিগরি, বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও কৃষি শিক্ষার প্রসারে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখতে হবে।
৮. মাদরাসা শিক্ষার অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষক কর্মচারীর বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানে বাজেটে পৃথক বরাদ্দ দিতে হবে।
৯. প্রতি জেলায় ১টি করে আলিয়া মাদরাসা সরকারিকরণ ও আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়নে বরাদ্দ দ্বিগুণ করতে হবে।
১০. সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।
১১. প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসাসমূহের পড়াশুনার মান বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন বিশ্বমানের উন্নত প্রযুক্তি, শিক্ষক, প্রশিক্ষণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন সে জন্য বিদ্যালয় প্রতি বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে।
১২. দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারীকরণ।
১৩. প্রতিটি সরকারী কলেজে ২টি করে নতুন হল বরাদ্দ দিতে হবে। এক্ষেত্রে ছেলেদের জন্য ১টি মেয়েদের জন্য ১টি।
১৪. জ্বালানী খাতে স্বনির্ভরতা অর্জনে সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করতে হবে।
১৫. প্রতিটি ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।
১৬. উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রুপান্তরের জন্য ও স্বাস্থ সেবা আধুনিকীকরণে বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে।
১৭. জনপ্রশাসনে মোট বাজেটের ১০% এর বেশি দেয়া যাবে না।
১৮. জননিরাপত্তা খাতে বাজেট হ্রাস করতে হবে।
ইশা ছাত্র আন্দোলন কর্তৃক প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট প্রস্তাবনায় ২০১৮-১৯ এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন-এর যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দীন।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুহাম্মাদ মুস্তাকিম বিল্লাহ, কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মাদ নুরুল করীম আকরাম, কেন্দ্রীয় প্রচার ও যোগাযোগ সম্পাদক মুহাম্মাদ শরিফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যায় বিষয়ক সম্পাদক জিয়াউল হক জিয়াসহ কেন্দ্রীয় অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
রাশিয়াকে ছাড়িয়ে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সামরিক বাজেট সৌদি আরবের
-আরআর