শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


অপকৌশলের শিকার কাশ্মিরি মুসলিমরা ভিটেমাটি ছাড়ছেন!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সৈয়দ ফয়জুল আল আমীন
  কবি, গবেষক সাংবাদিক

জম্মু-কাশ্মীরে আট বছরের শিশু আসিফা বানুকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় কাশ্মীর রাজ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। ইতিমধ্যে ভয়-শঙ্কায় গ্রাম ছেড়েছে আসিফা বানুর পরিবার। একই সাথে ঘটি-বাটি গুছিয়ে ঘর ছাড়ছে শতাধিক আতঙ্কিত মুসলমান পরিবার। আসিফা বানুর গ্রামটি এখন মুসলিমশূন্য এবং মেয়েদের ঘরের বাইরে যেতে মানা।

পুলিশ জানায়, আসিফা বানুকে মদ খাইয়ে পাঁচ দিন ধরে হিন্দু মন্দিরে আটকে রাখা হয়েছিল। তাকে হত্যার আগে দফায় দফায় ধর্ষণ করা হয়েছে। ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের জম্মু অঞ্চলের দক্ষিণে হিন্দু সম্প্রদায়ের আধিপত্য বেশি। এ ধর্ষণ ও হত্যার আগে সেখানে দুই সম্প্রদায়ের লোকজন শান্তিপূর্ণভাবেই বসবাস করে আসছিলেন। যদিও পুলিশের কাছে পরস্পরের বিরুদ্ধে তারা বিভিন্ন সময় বিচ্ছিন্নভাবে অভিযোগ করেছেন।

গণমাধ্যমে প্রকাশ, জম্মু ও কাশ্মীরের রাসানা গ্রামে এখন আর কোনো মুসলমান নেই বললেই চলে। দু-একজন যারা কোনো উপায় না পেয়ে সেখানে অবস্থান করতে বাধ্য হচ্ছেন, তারাও ভয় ও শঙ্কা নিয়ে বসবাস করছেন। ধর্ষণ ও হত্যার ভয়ে কন্যাশিশুদের তারা একা বাইরে যেতে দেন না।

রাসানা গ্রামেরই বাসিন্দা ছিল আট বছর বয়সী শিশুকন্যা আসিফা বানু। তাকে গ্রামটির একটি মন্দিরের তত্তাবধায়ক ও দুই পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে আটজন মিলে ধর্ষণের পর পাথর ছুড়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনার পর ভারতে যে সংকট দেখা দিয়েছে, রাসানার বর্তমান দৃশ্যপটকে এককথায় সেটার প্রতীক বলে ধরে নেওয়া যায়।

ভারতের পুলিশ বলেছে, কাবরাওয়াল মুসলিম যাযাবর সম্প্রদায়কে উচ্ছেদ করতেই ওই শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে। গ্রীষ্মের সময় এসব যাযাবর পাহাড়ে গবাদিপশুকে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যান। তবে শেষ পর্যন্ত মুসলিম যাযাবরদের উচ্ছেদের কৌশলে কাজ দিয়েছে।

আসিফার পরিবার পুলিশ প্রহরায় কাশ্মীরের পাহাড়ের দিকে চলে গেছে। এদিকে জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৭২ কিলোমিটার দূরে উধামপুরের একটি অস্থায়ী উদ্বাস্তু শিবিরে তল্পিতল্পা নিয়ে একাধিক মুসলিম পরিবারকে বসে থাকতে দেখা গেছে। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা মগ্ন দেখা যায় তাদের।

আসিফার পরিবারের বাড়িটিতে এখন আর কেউ থাকেন না। পাঁচ সশস্ত্র পুলিশ সেখানে পাহারা দিচ্ছেন। জম্মুর মূল শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে কাঠুয়া জেলার একটি গ্রামে আসিফার কবরের অর্ধেকটা ঘাসে ঢাকা পড়েছে। প্রসঙ্গত, স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন তাকে সেখানে কবর দিতে বাধা দিয়েছিল।

এমন বাস্তবতায় বিশ্ব-মোড়লরা করছেনটা কী? তবে কি মুসলিমদের বিরুদ্ধে আর অমুসলিমদের পক্ষে দাঁড়ানোটাই তাদের একমাত্র কাজ?

soyedfaizul@gmail.com
২৪ এপ্রিল ২০১৮


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ