বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫


‘বাংলা নববর্ষ রাসুল সা. এর হিজরতের একটি সূচনা’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম: আসছে নববর্ষ। আবহমান বাঙালির ঐতিহ্য হিসেবে বাংলাদেশে পালিত হয়ে থাকে এ নববর্ষ। একসময় বৈশাখ মানেই হালখাতা। আত্মীয়কে বাসায় এনে দাওয়াত খানো ইত্যাদিতে মুখর ছিল। এখন যদিও সেসব হারাতে বসেছে।

বর্ষবরণে ইসলাম কেমন দিকনির্দেশনা দেয়। এ বিষয়ে আমরা কথা বলেছি দুজন তরুণ আলেমে দীনের সঙ্গে। আসুন জানি তাদের থেকে।

রাজধানীর মিরপুর বায়তুল আতিক জামে মসজিদের খতিব ও জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া সাত মসজিদ মাদরসার উসতাজ মুফতি সাঈদ আহমাদ বলেন, নববর্ষটা ভিন্নভাবে আবহমান বাঙলার ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে অনেক আগ থেকেই।

নববর্ষে  বা বৈশাখ মাসে দেখা যেতো ব্যবসায়ীরা শুভ হালখাতার নামে বাকি অর্থ আদায় করার জন্য অনুষ্ঠান করতো। এটা দোষণীয় কিছু ছিলো না। ঋণ পরিশোধ করার মাঝে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তবে প্রচলিত ধারায় বর্ষ পালনের অনেক কিছুর সঙ্গে ইসলাম দ্বিমত করে।

বাংলা নববর্ষের একটা যোগসূত্র ইসলামি হিজরি সনের সঙ্গে রয়েছে। ইতিহাস সবাই জানে, হিজরি সালটাই বাদশাহ আকবর বাংলাবর্ষে রুপান্তরিত করেছেন। তাহলে বাংলা নববর্ষ রাসুল সা. এর হিজরতের একটি সূচনা। যার মাঝে ইসলামের বহু ইতিহাস লুকায়িত আছে।

সেটাকে কেন্দ্র করে আমরা নববর্ষে ভিন্ন রকম ভাবধারার আলোচনা করতে পারি। যেমন রাসুল সা. এর হিজরতের বিষয়ে আলোকপাত করতে পারি। আলোচনা করতে পারি রাসুল সা. এর হিজররতের কারণে ইসলাম পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ ধরনের আয়োজনে মানুষকে শোভাযাত্রার বিষয়গুলো ভালো করে আলোচনার মাধ্যমে গুনাহ থেকে বাঁচতে পারবে। আমরা নববর্ষে মানুষের কাছে গত একটি বছর কীভাবে পালন করলো তার হিসেব নিকাশ আল্লাহর দরবারে কী জবাব দিবো সে জন্য জনসাধারণকে সুরা আম্বিয়ার শুরুর দিকের আলোচনাগুলো মনে করিয়ে দেয়া।

মানুষের হিসাব-কিতাবের সময় নিকটবর্তী; অথচ তারা বেখবর হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তাদের কাছে তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে যখনই কোনো নতুন উপদেশ আসে, তারা তা খেলার ছলে শ্রবণ করে। (সুরা আম্বিয়া-২,৩)

আর এ ধরনের কুসংস্কার বা অবৈধ বিশ্বাস থেকে মানুষকে বাঁচাতে দরকার আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় জাতীয়ভাবে  ইসলামি নিদর্শনাবলি সংযোগ করা।

জাতীয়ভাবে মানুষ অন্ধাকারে আছে আমাদের জন্যই । আমরা নিজেদের সমাজের চিরিয়াখানা বানিয়ে রেখেছি।

মানুষ আমাদের খানকা বা মসজিদের মাঝে সীমাবদ্ধ করে রেখেছে আর আমরাও চেষ্টা করি না সামাজিক পারিবারিক সব বিষয়ে তাদের গাইড করতে। সে আমাদের সমাজের অংশ মনে করতে পারে না। ইসলামের আগমন এভাবে আসে নাই । আমাদের সমাজ বিচ্ছিন্ন ইসলামই আজ সমাজে কুসংস্কারের অনুপ্রবেশের জন্য দায়ি।

এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একটিই পদ্ধতি- অামাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে সমাজ উপযোগী করে গড়ে তোলা। মানুষ যেনো এটা মনে না করে যে আমাদের কওমি শিক্ষা শুধুই আখেরাতের জন্য। তাহলেই দেশ থেকে বা পৃথিবী থেকে কুফুর ‍শিরিক দূরভিত হবে।

https://www.facebook.com/newsourislam/videos/2052037861678744/

কথা হয় আরবি ভাষা ও সাহিত্য কেন্দ্র, বাংলাদেশের পরিচালক মুফতি মহিউদ্দিন ফারুকীর সঙ্গে।

তিনি বলেন, প্রথম বিষয় হলো নববর্ষ পালনীয় কী না। রাসুল সা. রেখে যাওয়া পথ বলে যাওয়া পথেই আমাদের চলা উচিৎ।

রাসুল সা. নির্দেশিত পথেই আছে আমাদের কল্যাণ। রাসুল সা. মদিনায় হিজরত করে যাওয়ার পর দেখেছেন সবাই আনন্দ উল্লাস করে দিবস পালন করে। রাসুল সা. জিজ্ঞেস করলেন কী পালন করা হচ্ছে। উত্তরে তারা বলল জাহিলে যুগ থেকে এ দিবস পালন করে আসছে।

তখন আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের জন্য দু’টি দিবস পালন করার অনুমতি দিয়েছেন ঈদুল ফিতর আর ঈদুল আজহা। এ দুটি ছাড়া আর কোনো দিবস পালন ইসলাম সমর্থন করে না।

যারা মনে করেন, আমরা নববর্ষ পালন করবো ইসলামের সঙ্গে সাঙ্ঘর্ষিক বিষয়গুলো এড়িয়ে। তাদের বলবো,  যে কোনোভাবেই উদযাপন করা হোক ইসলাম কোনোভাবেই সেটা সমর্থন করে না।

তবে কোনো দিবসের উদ্দেশ্যে না শুধু সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কোনো কর্মের মাধ্যমে কিছু করলে এটা ইসলামের সাথে সাঙ্ঘর্ষিক না হলে সমস্যা নেই।

আরো পড়ুন- ভিন্নরকম নববর্ষ উদযাপনের উদ্যোগ; সাড়া ফেলেছে ফেসবুকে


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ