রোকন রাইয়ান
আওয়ার ইসলাম
ধর্মকে অপমান করা এক ধরনের মানুষের বাতিক। যারা বিভিন্নভাবে ধর্ম, ধর্মীয় সিম্বল নিয়ে অপমানকর জিনিস তৈরি করে থাকে। এর মাধ্যমে নিজেদের বিকৃত মানসিকতার জানান দেয় এবং একশ্রেণির মানুষকে উত্তেজিত করে।
এবারের বৈশাখ উপলক্ষ্যে এমন একটি বিষয় ইতোমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। বৈশাখের শাড়ির একটি নকশায় দেখা যাচ্ছে আল্লাহু শব্দকে আঁকা হয়েছে হিন্দু ধর্মের ত্রিশুলের মধ্যে। দুটি বিষয়কে এমনভাবে স্থির করা হয়েছে যা দেখলেই বোঝা যায় খুবই পরিকল্পিত কাজ এটি।
শাড়ির ওই অংশটি দিয়ে ফেসবুকে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন সচেতন মানুষ। একই সঙ্গে তারা ঘৃণা প্রকাশ করছেন এর ডিজাইনার এবং কোম্পানিকে।
সংস্কৃতিকর্মী শাহ ইফতেখার তারিক তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘আল্লাহ’ নাম শাড়িতে প্রিন্ট করার মাধ্যমে ‘আল্লাহ’ নামটিকে নারীদের পদাঘাত করার চক্রান্তকারী প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে ব্যবসা চালিয়ে যাবে, আর আমরা বসে বসে তামাশা দেখব!?
মাওলানা শাহাদাত হোসাইন বিষয়টির নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেয়া হোক।
অনেকের মতামত এর বিরুদ্ধে গণপ্রতিবাদ হওয়া দরকার যাতে করে ধর্ম ও ধর্মীয় বিষয়বস্তু নিয়ে ভবিষ্যতে এমন কর্মকাণ্ড না হতে পারে।
এদিকে অনলাইন এক্টিভিস্ট সাইমুম সাদী বিষটির প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, বৈশাখী উপলক্ষে শাড়ির ডিজাইনে আল্লাহর নাম। এই ধৃষ্টতাপূর্ণ কাজ করেছে ফ্যাশন হাউস 'বিবিয়ানা'।
বৈশাখী উপলক্ষে রঙ-ঢঙযের সাথে আল্লাহর নাম ছেপে দেওয়াটা কোনো অসাবধানতা নয় ইচ্ছাকৃত। দেশের সাধারণ জনগণ এদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে।
বৈশাখ উপলক্ষ্যে শাড়িতে এমন করে আল্লাহ আর ত্রিশুলকে চিত্রায়নকারী প্রতিষ্ঠানটির নাম বিবিয়ানা। একটি দেশীয় তৈরি পোশাকের ব্রান্ড। যার মালিক ডিজাইনার লিপি খন্দকার। নববর্ষ উপলক্ষ্যে ফ্যাশন হাউজটি নানারকম পোশাক এনে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
জানা যায়, ২০০১ সালে ব্রান্ডটি যাত্রা করে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে তাদের ১১ টি শোরুম রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির হেড অফিস গুলশানের নিকেতনে।
শাড়িতে এ ধরনের ডিজাইন সম্পর্কে বিবিয়ানা ভুল স্বীকার করেছে। যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির মালিক লিপি খন্দকারের একান্ত সহকারী তাসমিয়া তারান্নুম আওয়ার ইসলামকে বলেন, এটা আমাদের অজান্তেই হয়েছে। আর এ জন্য আমরা খুবই দু:খিত।
তারান্নুম বলেন, ডিজাইনটি যখন এপ্রুভ হয় লিপি আপু তখন দেশের বাইরে ছিলেন। তিনি দেখলে এটা কখনোই এপ্রুভ হতো না। কারণ লিপু আপু পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন এবং ধর্মানুরাগী।
আর তিনি যখন ডিজাইনটি দেখেছেন সাথে সাথে মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন।
তারান্নুম বলেন, প্রথমে আমরা বুঝতে পারিনি ফুলের ভেতর আল্লাহু বা ত্রিশুল আঁকা রয়েছে। আমাদের মানসিকতাতেও কখনো নেই ধর্মকে অবমাননা করার। তাই জানার সঙ্গে সঙ্গে আমরা এটা মুছতে শুরু করেছি।
তবে আওয়ার ইসলামকে তারান্নুম বলেন, বিবিয়ানা একটি প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড, এটাকে হেয় করতেই কেউ হয়েতো এমনটা করতে পারে।
শাড়িটি নিয়ে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে শিগগির তারা অফিসিয়ালি বিষয়টির ব্যাপারে বিবৃতি দেবেন বলেও জানান তাসমিয়া তারান্নুম। তিনি আশা করেন এ নিয়ে আর কেউ যেন তাদের ভুল না বুঝেন।
চলছে টুইট চালাচালি; কী হতে চলেছে সিরিয়ায়?