হাওলাদার জহিরুল ইসলাম: বিশ্বখ্যাত দায়ী ও তাবলিগ জামাতের মুরব্বী মাওলানা তারিক জামিল মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে দেয়া এক বয়ানে বলেন, আমার এক বন্ধু ছিলো। সাধ্য মতো দীনের পথে চলার চেষ্টা করতো। বেশ সুন্দর দাঁড়িও রেখেছিলো। কিন্তু হঠাৎ দেখি সে দাঁড়ি সেভ করে ফেলেছে।
আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, দাঁড়ি সেভ করলে কেন? সে বললো, ভাই! কর্মক্ষেত্রে অনেক সময় মিথ্যা বলতে হয়। এর থেকে বাঁচতেও পারছি না। ভাবলাম, দাঁড়ি রেখে তো মিথ্যা কথা বলা ঠিক হবে না। তাই দাঁড়ি ফেলে দেয়া।
আমি তাকে বললাম, তুমি তো মিথ্যা বলায় একটি গোনাহ হতো। কিন্তু দাঁড়ি সেভ করে তো একই সঙ্গে দুটি গোনাহ করলে! অন্তত একটি গোনাহ থেকে তো বাঁচতে পারতে!
মিথ্যা বলার সাথে দাঁড়ির কী সম্পর্ক? দাঁড়ি আছে তো সত্য বলো। আর দাঁড়ি নেই তো মিথ্য বলো, বিষয়টা তো এমন নয়। মিথ্য বলার সম্পর্ক তো কালিমার সাথে। একজন মানুষের কালিমা পড়ার পর তো মিথ্যা বলতে লজ্জা হওয়া দরকার।
অনেকে বলে দাঁড়ি রেখে মিথ্যা বলা তো খুবই লজ্জার বিষয়। আমি তো বলি, কালিমা পড়ার পর মিথ্য বলা বড় লজ্জার বিষয়। গোনাহের সম্পর্ক তো পাগড়ির সঙ্গে নয়, নামাজের সঙ্গে নয়, রোজার সঙ্গে নয়, হজের সঙ্গে নয়, দাঁড়ির রাখার সঙ্গে নয়। মিথ্য বলার সম্পর্ক তো কালিমার সঙ্গে। ঈমানের সঙ্গে।
কালিমা তো একটি এগ্রিমেন্ট যে, হে আল্লাহ! সব ক্ষেত্রে আপনাকে মেনে চলবো, আপনার রাসুল সা. এর তরিকার ওপর চলবো। মানুষের কখনো গোনাহ হয়ে গেলে তাওবা করা উচিত।
কোনো ব্যক্তির মন্দ কর্মের কারণে তার ভালো কাজ নিয়ে কটাক্ষ করা উচিত নয়।
আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন, যে ব্যক্তি সরিষার দানা পরিমাণ সৎ কাজ করবে সে তার প্রতিদান পাবে। আবার যে ব্যক্তি সরিষার দানা পরিমাণ মন্দ কাজ করবে তাকে সে কাজের শাস্তি ভোগ করতে হবে। আবার আল্লাহ ইচ্ছা করলে ক্ষমাও করে দিতে পারেন।
কিন্তু আল্লাহ খুব মজবুতভাবে সৎ বান্দাদের লক্ষ্য করে বলেছেন, নিশ্চয় আমি সৎকর্মশীলদের প্র্রতিদান নষ্ট করবো না। তাই আমাদের উচিত সাধ্যমতো সৎ কাজ সম্পাদন করা এবং গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা। একটি গোনাহ হয়ে গেলে তার সঙ্গে আরেকটি গোনাহ না করে বরং তাওবার জন্য তৈরি হওয়া।
(মাওলানা তারিক জামিলের ভিডিও বয়ান থেকে অনুবাদ)
আরও পড়ুন: দাওরা হাদিস মডেল টেস্ট-৫