বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


লোভে বিউটিকে ‘খুনি’র হাতে তুলে দেন বাবা সায়েদ আলী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে আলোচিত কিশোরী বিউটি আক্তার হত্যার ঘটনায় নাটকীয় তথ্য এসেছে আদালতে তার বাবা সায়েদ আলীর জবানবন্দিতে। নিজেই মেয়েকে ‘খুনি’ ময়না মিয়ার হাতে তুলে দেয়ার কথা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে আদালতকে জানিয়েছেন তিনি।।

শনিবার প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তৌহিদুল ইসলামের আদালতে সায়েদ আলীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। আগের দিন একই আদালতে এই কিশোরী হত্যায় নিজের দায় স্বীকার করেন ময়না।

বিউটির বাবা জানান, হত্যার রাতে নিজেই নানাবাড়ি থেকে মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। ময়না তাকে কথা দিয়েছিলেন, ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি রুবেল মিয়ার সঙ্গে তিনি বিয়ে দিয়ে দেবেন মেয়েটির। আবার বাবুলের বিরুদ্ধে যে ধর্ষণ মামলা করা হয়েছিল, সেটা মীসাংসা করতে কিছু টাকাও তিনি আদায় করে দেবেন। কিন্তু ময়না সে কাজ না করে বিউটিকে হত্যা করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আদালতের একাধিক নির্ভরযোগ্য কর্মকর্তা এই জবানবন্দি দেয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ময়না মিয়ার এই কাজ করার পেছনে অন্য স্বার্থ জড়িত ছিল বলে জানিয়েছেন আদালতের একজন কর্মী। তিনি জানান, ইউনিয়ন পরিষদ বাবুলের মা পাস করেন ময়নার স্ত্রীকে হারিয়ে। আর বিউটিকে হত্যা করে বাবুল ও তার মায়ের ওপর দায় চাপানো যাবে বলে ভেবেছিলেন ময়না।

ময়না ভেবেছিলেন, এতে বাবুলের মা কলম চান বিবির ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যপদ চলে যাবে এবং আবার নির্বাচন হলে তার স্ত্রী পাস করবেন।

বিউটি আক্তারকে গত ২১ জানুয়ারি ধর্ষণের অভিযোগে ৪ মার্চ হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে বাবুল ও তার মা কলম চান বিবির বিরুদ্ধে মামলা করেন কিশোরীটির বাবা সায়েদ আলী। এতে সাক্ষী করা হয় ময়না মিয়াকে। এ ঘটনার পরই বিউটিকে পাঠিয়ে দেয়া হয় লাখাই উপজেলার গুণিপুর গ্রামে নানার বাড়িতে।

১৬ মার্চ রাতে সেখান থেকে নিখোঁজ হয় বিউটি। পরদিন গুণিপুর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে হাওরে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায় পুলিশ।

এ ঘটনায় ১৮ মার্চ বিউটির বাবা বাবুল মিয়া ও তার মা ইউপি সদস্য কলম চান বিবিকে আসামি করে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।

এরপর কলম চান বিবিকে শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ এবং বাবুলের বন্ধু ইসমাইল মিয়াকে অলিপুর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৩০ মার্চ র্যা বের একটি দল সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করে বাবুল মিয়াকেও।

হত্যার ঘটনাটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। প্রতিবাদের ঝড় উঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ গণমাধ্যমে।

গতকাল শুক্রবার আদালতে দেয়া জবানবন্দীতে এই হত্যায় তার দায়ও স্বীকার করেন ময়না মিয়া। আর মামলার প্রধান আসামি রুবেল মিয়া বিউটিকে ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করলেও হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এদিন নিহত বিউটির নানি ফাতেমা বেগম সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেন।

কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ