আওয়ার ইসলাম : ভারতের কলকাতার আসানসোলের নুরানি মসজিদের ইমাম ইমদাদুল রশিদিকে ভারতরত্ন খেতাবে ভূষিত করার দাবি জানিয়েছেন গায়ক কবীর সুমন। ইমাম রশিদির গণসংবর্ধনার আয়োজন করারও দাবি তুলেছেন ভারতীয় এই শিল্পী।
রাম নবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বিকেলে রেলপাড় এলাকা থেকে নিখোঁজ হয় ইমাম রশিদির ১৬ বছর বয়সী ছেলে শিবতুল্লা রশিদি। বুধবার তার মরদেহ উদ্ধার হয়। লাশের ময়নাতদন্তের পর বৃহস্পতিবার আসর নামাজের আগে সিবগাতুল্লাহর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন। সিবগাতুল্লাহর বুক চিরে কলজে বের করার মতো নৃশংসতার কারণে মুসল্লিরা ছিলেন প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ।
কিন্তু ছেলের লাশের সামনে মাওলানা ইমদাদুল্লাহ উর্দুতে যে বক্তব্য দেন, তা সবাইকে রীতিমতো চমকে দেয়। সবাই ইসলামের প্রকৃত মর্মবাণীকে নতুন করে অনুধাবন করেন। ইমামের বক্তৃতা ভারতের বহু সংবাদমাধ্যমেও স্থান পায়।
প্রসঙ্গত, পুত্রের জানাজার সময় তিনি আসানসোলবাসীর কাছে শান্তির আহ্বান জানান। বলেন, কোনও প্রতিহিংসা নয়। প্রতিশোধ নিতে যদি কারোর মৃত্যু ঘটানো হয়, তাহলে আমি এই শহর ছেড়ে চলে যাব। আমি তোমাদের সঙ্গে ৩০ বছর ধরে আছি, আমাকে যদি তোমরা ভালোবাসো তাহলে আর কাউকে যেন এভাবে মরতে না হয়।
কবীর সুমন তার ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, সাচ্চা মানুষ নুরানি মসজিদের ইমাম, যার ছেলেকে ঐভাবে খুন করল হিন্দুত্বের অভিভাবকরা। এই ইমাম সাহেবকে ভারতরত্ন দেওয়া হবে না? সব রাজনৈতিক দলের, বিশেষ করে এ রাজ্যের তৃণমূল, সি পি আই এম, বিজেপি, নকশালপন্থী বিপ্লবীরা কী বলেন?
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতার ব্যনার্জীর উদ্দেশ্যে সুমন বলেছেন, আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, আসানসোলের নুরানি মসজিদের ইমামের জন্য ভারতরত্ন দাবি করো, পাড়ায় পাড়ায় প্রতিরোধের ডাক দাও।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মমতার তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে কবীর সুমন কলকাতার যাদবপুরের সাংসদ হয়েছিলেন। নির্বাচনের এক বছরের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর সাথে দূরত্ব সৃষ্টি হলে দল ছাড়েন তিনি।