বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ইসির নতুন নির্দেশনা ইরান সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম: চীন বান্দরবানে দুর্গম পাহাড়ে অভিযানে কুকি-চিনের ৯ সদস্য গ্রেফতার আজমিরীগঞ্জে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের কমিটি গঠন উদীচীর কর্মকাণ্ডে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিব্রত: ডিএমপি অনলাইন নিউজ পোর্টালের বিজ্ঞাপন নীতিমালা শিগগিরই বাস্তবায়ন : তথ্য প্রতিমন্ত্রী ইরানের হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলকে সহায়তা করা নিয়ে যা বলছে সৌদি মিয়ানমারের আরও ১৩ সীমান্তরক্ষী পালিয়ে বাংলাদেশে শাইখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারে যোগদান করলেন মুফতি মকবুল হোসাইন কাসেমী খুলনায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলন নেতার হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার

বাংলাদেশের প্রাইভেট এয়ারলাইন্সের মান যেসব কারণে অনুন্নত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: বাংলাদেশের প্রাইভেট এয়ারলাইন্স এর ইতিহাস খুব একটা ভালো বলা চলে না।

বাংলাদেশে প্রাইভেট এয়ারলাইন্স যাত্রা শুরু করে ১৯৯৭ সালে৷ এরপর মোট ১২টি প্রাইভেট এয়ার লাইন্স এলেও টিকে আছে মাত্র তিনটি৷  ২০ বছরের এই পথচলায় বেসরকারি খাতে বিমান পরিচালনায় অর্জন কতটুকু?

নেপালে বাংলাদেশের ইউএস-বাংলা এয়ার লাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার পর বাংলাদেশের প্রাইভেট এয়ার লাইন্সের সক্ষমতা এবং যাত্রীসেবা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে৷ প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশের প্রাইভেট এয়ার লাইন্সগুলো কেন একের পর এক ঝরে পড়ছে?

বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে বড় প্রাইভেট এয়ার লাইন ইউএস-বাংলা এয়ার লাইন্স৷ আর বাকি দু’টি হলো নভোএয়ার ও রিজেন্ট এয়ার৷ ইউএস-বাংলা’র এখন আটটি অভ্যন্তরীণ এবং পাঁচটি আন্তর্জাতিক রুটে বিমান রয়েছে৷

নভোএয়ারের বিমান চলে সাতটি অভ্যন্তরীণ রুট এবং একটি আন্তর্জাতিক রুটে৷ রিজেন্ট এয়ার পাঁচটি অভ্যন্তরীণ এবং পাঁচটি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে৷  নিয়ম অনুযায়ী, এক বছর অভ্যন্তরীণ রুটে উড়োজাহাজ চালানোর পর আন্তর্জাকি রুটে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেয়া হয়৷

১৯৯৫ সালে বেসরকারি এয়ারলাইন্স অ্যারো বেঙ্গলকে ফ্লাইট অপারেশনের অনুমতি দেয়া হয়৷ তবে তারা যাত্রী পরিবহন শুরু করে ১৯৯৭ সালে৷ আর পরের বছরই এই এয়ারলাইন্সটি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়৷ এরপর বাংলাদেশে একে একে কাজ শুরু করে এয়ার বাংলাদেশ, জিএমজি এয়ারলাইন্স, রয়েল বেঙ্গল ও বেস্ট এয়ার৷

এর কোনোটি এখন আর অপারেশনে নেই৷ আর্থিক সংকটের কারণ দেখিয়ে তারা বন্ধ করে দেয়৷ অ্যারো বেঙ্গলসহ ছয়টি প্রাইভেট এয়ার লাইন্সই তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেয় আর্থিক কারণ দেখিয়ে৷ ওই এয়ারলাইন্সগুলোর মধ্যে শুধু জিএমজি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করতো৷

বাংলাদেশে মোট ১২টি প্রাইভেট এয়ারলাইন্স বিভিন্ন সময় অনুমোদন পেলেও দুইটি এয়ার লাইন্স কখনো অপারেশনেই আসেনি৷ এরপর ২০০৭ সালে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ যাত্রা শুরু করে ১১টি উড়োজাহাজ নিয়ে৷ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করেও শেষ পর্যন্ত তারা টিকে থাকতে পারেনি৷ ১১টি প্লেনের নয়টি পর্যায়ক্রমে অকার্যকর হয়ে যায়৷ দু’টি প্লেন দিয়ে আরো কিছুদিন সচল থাকার পর ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বন্ধ হয়ে যায়৷

২০১০ সাল থেকে রিজেন্ট এয়ার এবং ২০১৫ সাল থেকে নভো এয়ার ও ইউএস বাংলা ফ্লাইট অপারেশন শুরু করে৷ এই তিনটি এখনো টিকে আছে৷ রিজেন্ট এয়ারওয়েজও দেনায় পড়েছে৷ বেসামরিক বিমান চলাচলকর্তৃপক্ষ (বেবিচক)-এর কাছে তাদের ২৪ কোটি টাকা দেনা রয়েছে বলে জানা গেছে৷

তাদের বিমানবহরে রয়েছে ড্যাশ-৮ এবং বোয়িং৷ নভোএয়ার এটিআর-৭২-৫০০ এয়াক্রাফট দিয়ে যাত্রী পরিবহণ করে৷ ইউএস-বাংলা ড্যাশ এবং বোয়িং উড়োজাহাজ ব্যবহার করে৷

আগের এয়ারলাইন্সগুলো বন্ধ হয়েছে প্রধানত দু’টি কারণে৷ অব্যাহত লোকসান এবং ব্যবস্থাপনার ত্রুটি৷ ইউনাইটেড এয়ারকে তাদের ৮৪ কোটি টাকা দেনা তিন বছরে তিন কিস্তিতে শোধ করতে সুযোগ দেয়ার পরও টিকে থাকতে পারেনি৷

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ এবং বিমান বোর্ডের সাবেক পরিচালক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, একটি প্রাইভেট এয়া্রলাইন্স চালানোর জন্য যে ধরনের উদ্যোক্তা দরকার, যেমন দক্ষতা দরকার, ব্যবস্থাপনা দরকার সেগুলো আমাদের এখানে এখনো হয়নি৷

তিনি বলেন, প্রাইভেট এয়ারলাইন্সগুলোর যাত্রীসেবার মান ভালো হচ্ছে, কারণ, তাদের এখন আন্তর্জাতিকভাবে অনেক ভালো এয়ারলাইন্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়৷

তিনি আরো বলেন, ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনার কারণে সাময়িকভাবে বাংলাদেশের প্রাইভেট এয়ার লাইন্সের ব্যবসায় নেতবিাচক প্রভাব পড়তে পারে৷ কিন্তু এটা স্থায়ী হবে বলে আমার মনে হয় না৷

রিজেন্ট এয়ার-এর চিফ কমার্শিয়াল অফিসার আখতার ইউ আহমেদ দাবি করেন, বাংলাদেশের প্রাইভেট এয়ারলাইন্সগুলোর যাত্রীসেবা অনেক ভালো, কারণ, আমাদের আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে যাত্রী পেতে হয়৷ যাত্রী সেবার প্রথম শর্ত হলো শিডিউল মতো ফ্লাইট অপরেশন৷ আমরা সেটা চেষ্টা করি৷ আর অনবোর্ড সার্ভিসও মান সম্পন্ন৷

 

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে যারা প্রাইভেট এয়ালাইন্সের ব্যবসা করেন, তারা এটাকে আলু-পটলের ব্যবসার মতো মনে করেন৷ তাদের এটা করার দক্ষতা এবং যোগ্যতা নাই৷ তারা মনে করে, এ ব্যবসা করলে তাদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে৷ আর অনেক ব্যবসা হবে৷ কিন্তু ব্যবসায় নেমে যখন আর পারে না, তখন কোম্পানি বন্ধ করে দেয়৷ কারণ, এয়ারক্রাফট ওভারহলিং সম্পর্কে তাদের আগে ধারণা থাকে না৷ এটা ব্যয়বহুল৷ যখন করতে হয়, তখন ব্যবসার পুঁজিই শেষ হয়ে যায়৷

সূত্র: ডয়চে ভেলে


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ