শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


অামার বন্ধু রাশেদ ও জাফর ইকবাল স্যারকে একটি চিঠি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

শ্রদ্ধেয় মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার!

লিপির শুরুতে মহান অাল্লাহর কাছে অামি অাপনার সুস্থতা কামনা করছি। অবশ্য যতদূর জানি, অাপনি অাল্লাহ তায়ালাকে বিশ্বাস করেন না। তারপরেও অাল্লাহ তায়ালার কাছে অাপনার সুস্থতা কামনা করলাম। কেন জানেন?

অাল্লাহ তায়ালা বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী সবাইকে তাঁর প্রদত্ত নেয়ামতগুলো ভোগ করার অধিকার দান
করেছেন তাঁর পরম দয়ায়।

স্যার! অাপনি মুক্তিযুদ্ধের ওপর অসাধারণ একটি কিশোর উপন্যাস রচনা করেছেন। যার নাম ‘অামার বন্ধু রাশেদ’। স্যার! উপন্যাসটি পাঠ করে অামি নতুনভাবে মুক্তিযুদ্ধকে জানলাম।

ওরা এগারজন, গেরিলা, মেঘের পর মেঘ, শ্যামল ছায়ায় যুবা কিংবা প্রবীনদের গল্প দেখেছি।

কিন্তু অামার বন্ধু রাশেদে উপন্যাসে অামি অামাকে খুঁজে পেয়েছি রাশেদের সাহসিকতা ও বিচক্ষণতায়। ইবুর দৃঢ়তায়। অাশরাফ ও ফজলুর বুদ্ধিমত্তার মাঝে অামি অামাকে খুঁজে নিয়েছি।

স্যার! জামায়াত ইসলামী এবং তৎকালিন ছাত্র সংঘের (বর্তমান ছাত্র শিবির) হতভাগ্য কর্মীরা জাতির সাথে গাদ্দারী করেছে। কোনো সন্দেহ নেই এ বিষয়ে। তারা এবং তাদের সাথে যারা অাল বদর, অাস শামস, পিচ কমিটির সদস্য ছিল তারা কিন্তু অধিকাংশ দাড়িবিহীন ছিল।

অাপনি অাদর্শিকভাবে ইসলামি জীবনব্যবস্থার বিরোধী (Islam phobia) হতে পারেন। কিন্ত বাস্তবতাকে কেন অস্বীকার করবেন? কেন ইতিহাসের বিকৃতি ঘটাবেন?

অাপনার কি জানা নেই সর্বপ্রথম কে এই বাংলা মায়ের স্বাধীনতার জন্য পাকিস্তানকে ‘অাসসালামু অালাইকুম’ বলেছিল কাগমারী সম্মেলনে। যুদ্ধের দিনগুলোতে কে বলেছিল- এটা জালেম অার মজলুমের যুদ্ধ।

বৃহত্তর বরিশালে চরমোনাই পীর সাহেবের দরবার ছিল মুক্তিযুদ্ধাদের অাশ্রয় কেন্দ্র। অাশ্রয় কেন্দ্র ছিল সাধারণ জনতার।

ভুলে গেলেন জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার কথা! অাল্লামা শহীদ দানেশ রহ. এর কথা! জামিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার কথা। কালের সাক্ষী হয়ে আছে সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদে শহীদদের গণকবর।

মাওলানা কাজি মুতাসিম বিল্লাহ রহ., মাওলানা এমদাদুল হক অাড়াইহাজারী রহ., মাওলানা অাবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী ও মাওলানা উবায়দুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী, মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ, মাওলানা মোস্তফা আজাদ- অারো কত অভিমানী অালেম মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন।

যাঁদের কেউ কেউ চাপা অভিমান বুকে নিয়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। কেউ কেউ দারিদ্র্যতার কষাঘাতে জর্জরিত হয়ে জীবনযুদ্ধে রণক্লান্ত সৈনিকের মতো বিছানায় মৃত্যুর প্রহর গুনে দিন কাটাচ্ছেন।

রাষ্ট্র হয়তো বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে তাদের জন্য কিছু করতে পারেনি। কিন্তু অাপনি কি পারতেন না কলমের ডগায় তাদের জন্য কিছুটা কৃতজ্ঞতা ফুটিয়ে তুলতে! অকৃতজ্ঞতা অার কাকে বলে।

৩০০ পৃষ্ঠার বৃহৎ কলেবরে ourislam বিশেষ রমজানুল মোবারক সংখ্যার অগ্রিম অর্ডার নেয়া হচ্ছে। সংখ্যাটির বিক্রয়মূল্য হবে ২৫০ টাকা। অগ্রিম অর্ডারকারীরা ১০% কমে ২২৫ টাকায় সংগ্রহ করতে পারবেন। অর্ডার করতে ফোন করুন। ০ ১৭১৯-০২৬৯৮০, ০১৭১৭-৮৩১৯৩৭ [বিকাশ]

স্যার! অাপনি যাদের বংশধর। তাদের কথাতো অাপনার চিন্তার সাড়িতে অাসতে পারত।
অাপনার দাদা ছিলেন একজন মৌলভি। নেত্রকোনায় অাপনার বাড়িটার নামও মৌলভি বাড়ি ছিল। এখনো বাড়িটা মানুষের মাঝে প্রসিদ্ধ হয়ে অাছে মৌলভি বাড়ি নামে।

তবে শত বিতর্কের মধ্যেও হুমায়ূন অাহমেদ ‘জোছনা ও জননীর গল্প’ উপন্যাসটি লিখে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। যিনি অাপনার শ্রদ্ধালু প্রয়াত বড় ভাই।

স্যার! কত বলব! অাপনি অামার চেয়েও বেশি জানেন মুক্তিযুদ্ধে অালেম সমাজের অবদানের কথা। কেন সামান্য হলেও উঠে অাসল না অামার বন্ধু রাশেদের পাতায় অালেমদের কথা। ছায়াছবির দৃশ্যে কেন উঠে এল দাড়ি টুপিধারী রাজাকার কমান্ডারের ছবি?

প্রকৃত ইতিহাস কি কাউকে ক্ষমা করবে কখনো? পরিশেষে অাবারো অাপনার সুস্থতা কামনা করছি।

ইতি

সিফাত মোহাম্মদ
sifatmohammad2030@gmail.com


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ