শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫


যে কারণে নওয়াজের কাঁধে জুতার বাড়ি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রকিব মুহাম্মাদ
আওয়ার ইসলাম

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে জুতা ছুড়ে মেরেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্র। জুতাটি তার কাঁধে এবং কানে গিয়ে লাগে।

রোববার  লাহোরের জামিয়া নামিয়ায় মুফতি মুহম্মদ হুসেইন নায়িমির মৃত্যুবার্ষীকিতে বক্তব্য দিতে মঞ্চে যাওয়ার সময় পাকিস্তানের এই ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে  জুতা ছুড়ে মারার ঘটনা ঘটে।

এনডিটিভি জানায়, বক্তৃতা দেওয়ার জন্য তিনি মঞ্চের কাছে যেতেই দুই ছাত্র তার সামনে গিয়ে দাঁড়ায় এবং ‘লাব্বায়েক ইয়া রাসুলাল্লাহ’ স্লোগান দেয়। এসময় একজন নওয়াজ শরীফের ওপর জুতা ছুড়ে মারে।

এ সময় নিরাপত্তারক্ষীরা ঘটনাস্থলেই দুই ছাত্রকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, জুতা নিক্ষেপকারী ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই সাবেক ছাত্র। তার নাম আবদুল গফুর। তার সঙ্গীর নাম সাঈদ।  এই ঘটনার পর অবশ্য শরিফ তার কর্মসূচি বন্ধ করেননি। সংক্ষিপ্ত ভাষণের পর সভাস্থল ছেড়ে চলে যান।

এর আগে,  রোববার শিয়ালকোটে দলীয় কর্মীদের এক সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার সময় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা আসিফের মুখে কালি লেপনের পরদিনই শরীফকে জুতা ছুড়ে মারার এ ঘটনা ঘটল।

শনিবার পাঞ্জাব প্রদেশের সিয়ালকোটে দলীয় কর্মীদের সভায় ভাষণ দেয়ার সময় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফের মুখে কালি ছিটিয়ে দেন এক ব্যক্তি।

সভা মঞ্চের খুব কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলেন মধ্যবয়স্ক ওই ব্যক্তি। আসিফ মঞ্চে ভাষণ দেয়া শুরু করতেই তাকে লক্ষ্য কালি ছুড়ে মারেন তিনি। দলীয় কর্মীরা ওই ব্যক্তিকে সঙ্গে সঙ্গে ধরে ফেলেন। মারধর করার পর অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে দেন তারা।

এসব ঘটনার নেপথ্য কী জানতে চাইলে হামলাকারী বলে, পাকিস্তানে মুসলিম বলে স্বীকৃতি পেতে নবী মুহাম্মদকে উল্লেখ করে যে ধারা আছে, তা বদলানোর চেষ্টার বিরুদ্ধেই এই ‘প্রতিবাদ’।

প্রসঙ্গত,  ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানে দ্বিতীয় সংবিধান সংশোধন হয়। এর ফলে পাকিস্তানে তারাই মুসলিম হিসেবে স্বীকৃত, যারা হজরত মুহাম্মদ সা.-কে শেষ নবী বলে স্বীকার করেন এবং নবী মুহাম্মদের কথাই শেষ কথা বলে মানেন।

এই আইনের ফলে মুসলিম সমাজের আহমাদি গ্রুপকে আর মুসলিম বলে স্বীকৃতি দেয়া হয় না সে দেশে। কেননা তারা হজরত মুহাম্মদ সা. কে শেষ নবী মানেন না।

উনবিংশ শতকের শেষ দিকে এই সমাজ বা ধর্মীয় আন্দোলনের ধারাটির জন্ম। তারা মনে করেন, মুহাম্মদ সা. এর পরেও নতুন নবীর জন্ম হতে পারে, যদিও তারা কেউই মুহাম্মদকে ছাপিয়ে যাবেন না।

একটি অনন্য অ্যাপ, ইনস্টল করতে ক্লিক করুন

পাকিস্তানের নির্বাচনী বিধি অনুযায়ীও, যে কোনো মুসলিম প্রার্থীকে মনোনয়ন জমা দেয়ার সময় মুহাম্মদকে শেষ নবী মেনে সই করতেই হয়। অমুসলিম প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম অবশ্য প্রযোজ্য নয়।

সম্প্রতি পাকিস্তানের সংবিধানে হযরত মুহাম্মদ সা. শেষ নবী হিসাবে উল্লেখ আছে- এতে নওয়াজ শরীফ ও তার দল (পিএমএল-এন) পরিবর্তন আনার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে ধর্মীয় দলগুলো বিশেষ করে তেহরিক-ই-লাব্বায়েক পাকিস্তান নামক দলটি অভিযোগ করেছে।

পিএমএল-এন অবশ্য এই পরিবর্তনের অভিযোগ সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করছে।

কালিতে ঢেকে গেল পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখ (ভিডিও)


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ