বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


৫০০ কেজি ওজনের বিশ্বের সবচেয়ে বড় কুরআন শরীফ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: আফগানিস্তানের হস্তলিপিকার মোহাম্মদ সাবির খেদ্রি ৫০০ কেজি ওজনের একটি কোরআন তৈরি করেছেন যা বর্তমানে পৃথিবীর বৃহত্তম কোরআন শরীফ।

দেশটির তাতারস্তান অঞ্চলে নির্মিত ওই কোরআন শরীফটির পৃষ্ঠাগুলোর আয়তন ছিল দৈর্ঘ্যে ২ মিটার ও প্রস্থে ১ দশমিক ৫ মিটার। বৃহত্তম কোরআন শরীফ তৈরির প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে মূল হস্তলিপিকার মোহাম্মদ সাবির খেদ্রির সহযোগী হিসেবে ৯ জন ছাত্রও কাজ করেছেন।

সোনালী লিপিগুলোকে ফুটিয়ে তুলতে বিশালাকার পৃষ্ঠাগুলোর চারধারে প্রতিকী কারুকাজ হিসেবে ছোট ছোট লাখ লাখ রঙিন বিন্দু ব্যবহার করেছেন তারা।

এত পরিশ্রমের পরও যদি অন্য কেউ এর চেয়ে বড় কোরআন শরীফ নির্মাণ করেন তা নিয়ে খেদ থাকবেনা খেদ্রির। বরং হাসিমাখা মুখ নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম কোরআন নির্মাতা বলেছেন, “অন্য কেউ যদি এর চেয়ে বড় কোরআন নির্মাণ করে তবে আমি খুশি হব, এর ফলে ইসলাম রক্ষা পাবে।”

বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোরআন শরীফের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে ২০১৫ সালের ৫ই মার্চ কাবুলের হাকিম নাসির খুসরাও বালখি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। আফগানিস্তানে এটি তাদের সবচেয়ে বড় অর্জন বলে মনে করা হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এই কোরআনের উচ্চতা ৭ ফুট এবং প্রস্থ প্রায় ১০ ফুট। এতে মোট পৃষ্ঠার সংখ্যা রয়েছে ২১৮।

৩০ বছরের চলমান যুদ্ধে আফগানিস্তানের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও প্রথা নষ্ট হয়েছে, কিন্তু ধ্বংস হয়নি- তা বিশ্বকে দেখিয়ে দিতেই বৃহত্তম এ কোরআন রচনার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন খেদ্রি।

অর্ধমিলিয়ন ডলার ব্যায়ে নির্মিত কোরআন শরীফটিতে ২১৮ টি পৃষ্ঠা রয়েছে যেগুলো কাপড় ও কাগজের তৈরি এবং পৃষ্ঠাগুলোর আকার দৈর্ঘ্যে ৯০ ইঞ্চি বা ২ দশমিক ২৮ মিটার এবং প্রস্থে ৬১ ইঞ্চি বা ১ দশমিক ৫৫ মিটার।

পৃষ্ঠার প্রান্তগুলো চামড়া দিয়ে কারুকার্যমন্ডিত যা তৈরি করতে ২১ টি ছাগলের চামড়া ব্যবহার করা হয়েছে। কাবুল কালচারাল সেন্টার জানিয়েছে, এই কোরআনটিকে পৃথিবীর বৃহত্তম বলে ঘোষণা দিয়েছে আফগানিস্তানের হজ্ব ও ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। কোরআন শরীফটি এখন ওই কালচারাল সেন্টারেই রয়েছে। এর আগে পৃথিবীর বৃহত্তম কোরআন শরীফ তৈরির কৃতিত্বের দাবিদার ছিল রাশিয়া।
ফাইল ছবি

৫ বছর ধরে ক্যালিওগ্রাফার মোহাম্মদ সাবের ইয়াকোতি হোসেন খাদেরি এবং তার শিক্ষার্থীরা ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কোরআন শরীফ লেখার কাজ শুরু করেন এবং ২০০৯ সালে শেষ করেন। তারা জানান, ৩০ পারায় ৩০টি ভিন্ন ধরনের ক্যালিওগ্রাফির ব্যবহার করেছেন তারা। প্রখ্যাত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব আলহাজ সৈয়দ মনসুর নাদেরি এই প্রকল্পের আর্থিক সহায়তা দেন।

মনসুর নাদেরি অনুষ্ঠানে এটিকে বলেন আফগানিস্তান তথা সারা বিশ্বের মুসলমানদের অর্জন বলে অভিহিত করেন। পাঁচ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম শেষে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোরআন শরীফ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন আফগানিস্তানের একটি সংস্থা।। এটির মাধ্যমে তাঁরা ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন যে, গত ৩০ বছর ধরে লাগাতার চলে যাওয়া যুদ্ধ দেশটির সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে দুর্বল করে ফেললেও একদম ধ্বংস করে ফেলতে পারে নি।।

এই বইটি তৈরির পিছনে নিজেদের সংস্কৃতিকেই মূলত ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁরা। এই পবিত্র কোরআন শরীফের প্রতিটি পাতার দৈর্ঘ্য ২.২৮ মিটার এবং প্রস্থ ১.৫৫ মিটার।। আফগান হজ্জ এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোরআন শরীফ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে এবং “কাবুল কালচারাল সেন্টারে” এটি প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ