শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


কবে হচ্ছে মডেল মসজিদ?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রকিব মুহাম্মাদ
আওয়ার ইসলাম

দেশের সব জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন করবে সরকার। গত বছর ২৫ এপ্রিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় এ সংক্রান্ত প্রকল্প অনুমোদন হয়। তবে সাম্প্রতিক  এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কবে হবে সেই বিষয়টা আলোচনায় উঠে এসেছে।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান এক বক্তব্যে বলেন,  আগামী মার্চ মাস থেকে সারাদেশে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন শুরু হবে।

এদিকে সরকার আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশে মডেল মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরু করতে চায়। লক্ষ্য মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে প্রতি বিভাগে অন্তত একটি করে হলেও মসজিদের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন। এ জন্য সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে একাধিকবার তাগিদ দেয়া হয়েছে।

কিন্তু বিপত্তি বেধেছে প্রকল্পে সৌদি আরব প্রতিশ্রুত অর্থ সহায়তা না দেয়ায়। ফলে সরকারি অর্থেই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ কারণে ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) সংশোধন করে অনুমোদনের জন্য আবারও একনেকে তুলতে হচ্ছে। এছাড়া এখনও চূড়ান্ত হয়নি সব মসজিদের জমি নির্ধারণ। এসব কারণে নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারছে না ধর্ম মন্ত্রণালয়।

পরিস্থিতি সামাল দিতে ও প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিত করতে সম্প্রতি ১৫টি উপ-কমিটি গঠন করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এরা সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা পরিদর্শন করে মসজিদের জমি নির্বাচনে সুপারিশ করবে। এর ভিত্তিতে মসজিদের জন্য নির্ধারিত জায়গার মাটি পরীক্ষাসহ আনুষঙ্গিক কাজ করা হবে।

এ সময়ের মধ্যে সংশোধিত ডিপিপির অনুমোদনসাপেক্ষে শুরু হবে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বান কার্যক্রম। ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

এ প্রসঙ্গে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল গনমাধ্যমকে বলেন, সারা দেশের ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ডিপিপি সংশোধন হওয়ার কারণে তা আবারও একনেকে তুলতে হবে, এ কারণে দেরি হচ্ছে। আশা করি শিগগিরই প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু হবে।

জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) মু. আ. হামিদ জমাদ্দার বলেন, সৌদি সরকারের অর্থ না পাওয়ায় আমরা নিজস্ব অর্থে প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রথম দফায় আট বিভাগে একটি করে মসজিদ নির্মাণ করা হবে। পরে পর্যায়ক্রমে সব জেলায় ও উপজেলায় এ মসজিদ নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিত করতে ইতিমধ্যে ১৫টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিগগিরই প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু হবে।

প্রসঙ্গত, ইসলামী মূল্যবোধের উন্নয়ন ও সংস্কৃতি বিকাশের উদ্দেশে সৌদি সরকারের সহযোগিতায় দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণ করা হবে। ২০১৬ সালের ৩ থেকে ৭ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরব সফর করেন।

ওই সফরে প্রধানমন্ত্রী সৌদি বাদশাহর সঙ্গে আলোচনায় দেশব্যাপী মডেল মসজিদ নির্মাণের বিষয়টি তুলে ধরে সহযোগিতার প্রস্তাব করেন। সৌদি আরব তাতে সম্মতি দেয়। দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী এ মডেল মসজিদের নকশা তৈরিসহ সামগ্রিক বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেন। এ সংক্রান্ত প্রকল্প গত বছরের ২৫ এপ্রিল অনুমোদন দেয় একনেক।

এ মসজিদগুলো ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে স্বস্ব এলাকায় কাজ করবে। মসজিদগুলোতে নারী-পুরুষের আলাদা অজু করা ও নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকবে। প্রতিটি মসজিদ হবে একই মডেলের।

৫ বা ৬তলা এ মডেল মসজিদের জন্য জায়গা লাগবে প্রায় ৪০ শতক। প্রতিটি মসজিদ তৈরিতে প্রাথমিকভাবে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা। চারটি সিটি কর্পোরেশন ও ৬৪টি জেলা শহরের ৬৮টি মডেল মসজিদে লিফট-এসি থাকলেও উপজেলা ও উপকূলীয় এলাকাসহ বাকি ৪৯২টিতে তা থাকছে না। এসব মসজিদে প্রতিদিন চার লাখ ৪০ হাজার ৪৪০ জন পুরুষ ও ৩১ হাজার ৪০০ জন নারীর নামাজের ব্যবস্থা থাকবে।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ