বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
শিক্ষক ও বাবুর্চি নিয়োগ দেবে রাজধানীর আল্লামা শামসুল হক রহ.মাদরাসা উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার

ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলা; দ্রুত রহস্য উদ্ঘাটন হোক

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সৈয়দ ফয়জুল আল আমীন

দেশের আলোচিত শিক্ষাবিদ ও গবেষকদের মধ্যে অন্যতম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)-এর অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল

আজ (৩ মার্চ, ২০১৮) হঠাৎ করেই তিনি জনসম্মুখে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছেন। তাঁর ওপর এ হামলায় দেশের শিক্ষাঙ্গনে এক ধরনের আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। এমনকি সাধারণ জনমনেও প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে তার ওপর কেন এই হামলা?

যেভাবে প্রকাশ্যে জাফর ইকবালের মতো কথাসাহিত্যিককে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে তাতে স্তম্ভিত বাংলাদেশের শিক্ষিত সমাজ।

ড. জাফর ইকবালের উপর হামলার নেপথ্যে কী, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা না গেলেও সাম্প্রতিক কালের কিছু ঘটনা ও বিষয় ওঠে আসছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আলোচনায়।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ৬ নবীন শিক্ষার্থীকে অর্ধনগ্ন করে রাতভর র‌্যাগিংয়ের দায়ে ১৯ শিক্ষার্থীকে শাস্তি প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এরপর গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে র‌্যাগিং নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযুক্তদের ব্যাপারে বিরূপ মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এই কাজ করেছে। আমি খুবই লজ্জিত। আমি জাতির কাছে ক্ষমা চাইছি; কারণ আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এই কাজ করেছে।

এছাড়া অভিযুক্তদের যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তা আসলে খুবই কম। তাদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে রাষ্ট্রীয় আইনে তাদের বিচার করার দরকার ছিল।

তাঁর এমন মন্তব্যের কারণে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ ক্ষিপ্ত হয়ে তার ওপর হামলা চালাতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। আবার এতে জঙ্গিদের হাত থাকতে পারে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে।

বরাবরই জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কথা বলতেন জাফর ইকবাল। একাধিকবার তাঁর ওপর জঙ্গি হামলার হুমকিও এসেছে বলে জানা গেছে।

গত দুই বছর আগে ২০১৬ সালের জুন মাসে দেশের শীর্ষ এক গোয়েন্দা সংস্থা থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ওপর সম্ভাব্য হামলা সংক্রান্ত নিরাপত্তাবিষয়ক একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যখন ঘন ঘন লেখক, অধ্যাপক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের ওপর হামলা চালাচ্ছিল জঙ্গিরা।

নিরাপত্তাবিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদনের সেই তালিকায়ও জাফর ইকবালের নাম ছিল শীর্ষে। তখন এসব ব্যক্তির চলাচলে সতর্কতা পালন করতে সরকারের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে পরামর্শ ও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।

২০১৬ সালের অক্টোবরে জঙ্গি সংগঠন আনসার উল্লাহ বাংলা টিমের পরিচয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে হত্যার হুমকি এসেছিল দেশের আলোচিত এই শিক্ষাবিদের কাছে। এরপরই জালালাবাদ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন এই দম্পতি।

পরবর্তীকালে তাঁর পাহারায় পুলিশ মোতায়েন করে সরকার। তবে এই দুটি বিষয় ছাড়াও আলোচনায় ওঠে আসছে ছাত্রলীগের নাম। কারণ ২০১৫ সালে শাবিপ্রবিতে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে তিনি ও তাঁর স্ত্রী একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন সক্রিয় ছিলেন। সেসময় তার স্ত্রীসহ অন্য শিক্ষকরা ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন।

বাস্তবতা যাই হোক, বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তাধারা ও যুক্তিবাদ থেকে তিনি সরে আসেননি। এমনই দৃঢ়চেতা জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তার উপর আকস্মিক এমন হামলা কোনো ভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

হামলাকারী যে বা যারাই হোক, দ্রুত তাদের উদ্দেশ্য যেন উদ্ঘাটন হয় সে দাবি থাকলো সরকারের প্রতি।

 

লেখক : কবি, গবেষক ও সাংবাদিক
সহযোগী সম্পাদক, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম

০৩.০৩.২০১৮


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ