বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
শিক্ষক ও বাবুর্চি নিয়োগ দেবে রাজধানীর আল্লামা শামসুল হক রহ.মাদরাসা উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার

কুরআন শরিফ কি নির্বাচনী প্রতীক হতে পারে?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রকিব মুহাম্মাদ
আওয়ার ইসলাম

গতবছর বেশ কিছু নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। তারা নতুন প্রতীক চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে।

এসব নতুন প্রতীকের তালিকায় রয়েছে মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন। তালিকায় আছে গমের শীষ ও গমের ছড়া, জাহাজ, চাঁদ, ঝাড়ু, মোবাইল, স্যাটেলাইট, নাকফুল, পালকী, তালগাছ।

তবে বাংলাদেশ ইসলামিক গাজী নামের একিট নতুন দল তাদের দলীয় প্রতীক চেয়েছে কুরআন শরিফ। গতকাল আওয়ার ইসলামে এ খবর প্রকাশের পর অনেক অনলাইন এক্টিভিস্ট এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

তাদের ভাষ্য, কুরআন কখনোই নির্বাচনী প্রতীক হতে পারে না। কেননা এর মাধ্যমে পবিত্র ধর্ম গ্রন্থের অবমাননার অবকাশ রয়েছে।

সমালোচকদের বক্তব্য, একটি ইসলামি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে এমন প্রত্যাশা করেনি তারা। কুরআনকে  নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ করলে, রাস্তা-ঘাট, দোকান-পাটে কুরআন সম্বলিত পোস্টার পবিত্র এই গ্রণ্থের অবমাননার কারণ হবে।

‘বাংলাদেশ ইসলামিক গাজী’ নামক রাজনৈতিক দলটির বিষয়টি বোঝা উচিৎ ছিল।

মাওলানা মামুনুর রশিদ নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘একটি ইসলামি ভাবধারার রাজনৈতিক সংগঠনের কাছে এমনটা প্রত্যাশা করিনি আমরা। পবিত্র কুরআন কোন খেলনা নয় যে যেখানে-সেখানে টাঙিয়ে দেব!  আশা করি, নির্বাচন কমিশন ব্যাপারটি বুঝবেন এবং কুরআনকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে অনুমোদন দেবেন না।’

তবে অনেকে বিপরীত মতও দিয়েছেন। খাইরুল ইসলাম নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লেখেন, ‘মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজনৈতিক ময়দানে একটি ইসলামি দল কুরআনকে নির্বাচনী প্রতীেক হিসেবে আবেদন করতেই পারেন।  বিষয়টি আমাদের ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখলে সমস্যা কোথায়?’

মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআনুল কারীমকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে অনুমোদন দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত হতে পারে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও মুহাদ্দিস মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন আওয়ার ইসলামকে বলেন, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআনকে মুসলিমরা সর্বোচ্চ সম্মানের স্থানে রাখে এবং একজন মুসলিমের সবকিছু, আবেগ-অনুভূতি কুরআনের সঙ্গে জড়িত।

সুতরাং, আমাদের রাষ্ট্রের এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতি, রাজনীতি এবং নির্বাচনের মতো বিতর্কিত ক্ষেত্রে কুরআনকে ব্যবহার করা বা নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে অনুমোদন দেওয়া বড় একটি ভয়ের বিষয় বলে আমি মনে করি।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রে কোন ইসলামি রাজনৈতিক দল কুরআনকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে চাইলে এবং অনুমোদন পাশ হলে কোনো ধরনের সমস্যা হতে পারে ?- এমন প্রশ্নের জবাবে বিশিষ্ট এ গবেষক আলেম বলেন,  যে দলটি কুরআনকে প্রতীক হিসেবে চেয়েছে, তাদের সম্পর্কে আমরা একেবারেই কিছু জানি না। এমন একটি দল  ইসলামের মূল কুরআনকে প্রতীক হিসেবে চাওয়াটাই তো একটি ভয়ের বিষয়।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতে কুরআনকে সামনে নিয়ে রাজনীতির ময়দানে কোনো ফেৎনা সৃষ্টি হলে দোষটা কুরআন এবং মুসলিমদের গায়ে লাগবে। সুতরাং, নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন যাচাই-বাছাই এবং প্রতীক অনুমোদনের ক্ষেত্রে এ দিকটা খেয়াল রাখবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে।

প্রসঙ্গত,  সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ইসির প্রজ্ঞাপনে নির্বাচনের জন্য ৬৪টি প্রতীক সংরক্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের। বাকি ২৪টি প্রতীক এখনো পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে।

নতুন দলের নিবন্ধন দেয়া হলে তাদেরকে এখান থেকেই প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে বলে জানান ইসি কর্মকর্তারা।

নিবন্ধিত দলের বাইরে ২৪টি প্রতীক হলো- আপেল, একতারা, কলার ছড়ি, কুমির, কুড়াল, খাট, ঘণ্টা, ট্রাক, ডাব, তবলা, তরমুজ, দাবাবোর্ড, দালান, নোঙ্গর, ফুলকপি, বাঁশি, বেঞ্চ, বেলুন, মটরগাড়ি (কার), মাথাল, রকেট, শঙ্খ, সিংহ ও স্যুটকেস।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রথা চালু করে ইসি। প্রথম বছরে ১১৭টি আবেদন জমা পড়ে। শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ৩৯টি দল নিবন্ধন পায়।

এর মধ্যে স্থায়ী সংশোধিত গঠনতন্ত্র দিতে না পারায় ২০০৯ সালে ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল করে ইসি। আর আদালতের আদেশে ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ হয়।

এছাড়া ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) নামে নতুন একটি দলের নিবন্ধন দেয়া হয়। বর্তমানে ইসির নিবন্ধনে ৪০টি রাজনৈতিক দল রয়েছে।

ইসির কাছে কুরআনসহ একাধিক নতুন প্রতীকের আবেদন

৪ ইসলামি দলসহ নিবন্ধন ঝুঁকিতে ১১ রাজনৈতিক দল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ