শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


স্বামীর মন তাৎক্ষণিক জয় করার কর্মপদ্ধতি: ড. মুশতাক আহমদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম 

প্রিয় ভগ্নীকুল!
স্বামীকে কাছে পেয়ে নিজে মনভরে প্রফুল্লতা প্রকাশ করুন। আপনি যত বেশী আনন্দিত হবেন আপনার স্বামী ততই আপনার ঘনিষ্ট হবেন, আপন হবেন, অন্তরঙ্গ হবেন। মনে রাখবেন, হাসি কান্না দুঃখ বেদনা সব হল সংক্রামক। এক আনন্দই আরেক আনন্দ সৃষ্টি করে।

টাকা পয়সা, সোনা-গয়না, খানা-দানা এগুলি একান্তই ভোগ সামগ্রী যা প্রধানত খায়েশকে জয় করে। মনের নিষ্কলুষ আনন্দ সৃষ্টি করতে পারে না।

ধরুন- কোন সন্তান অস্বচ্চল, মাকে এক পয়সা দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কিংবা কোন মা নিজ সন্তানকে একটু যত্ন করার সঙ্গতি নেই- কিন্তু আনন্দ প্রকাশ করে যাচ্ছে প্রাণ খুলে। তাতেই দুজনের কী মায়ার সম্পর্ক সুবহানাল্লাহ। এই আনন্দ বিনা পয়সায় কেনা যায়- তবুও লোকেরা কেন যে বুঝে না- আহ্ কত দুর্ভাগ্য।

প্রিয় ভগ্নীকুল!
স্বামী চোখে পড়া মাত্র আপনি চোখ নিচু করে বিনয়ের হালকা হাসি দিন আর সম্মানসূচক শব্দে কথা বলুন। স্বামীর প্রতি স্ত্রীর বিনয় এক মহাশক্তি সম্পন্ন কর্মকৌশল। আপনি যত বিনয়ী হবেন আপনার স্বামী আপনাত তত কাছে থাকবে।

এখানেও কোন পয়সা খরচ হয় না। কৌশল শেখা মাত্র। এই যোগ্যতা ছেলেদের কম দেওয়া হয়েছে। জন্মগত ভাবে মেয়েদের বেশী দেওয়া হয়েছে। সারা দুনিয়ার সকল আবাসিক হোটেলে মেয়েরা এই যোগ্যতার কারণে বিমান বা আবাসিক হোটেলে নেতৃত্ব পরিচালনা করছে।

প্রশ্ন; আমি এভাবে কথা বলতে পারি না?
জবাব: আপনি পারার জন্য কৌশল করুন। কৌশন হলো নিজের মনকে তৈয়ার করা। মনকে বলুন; আমার স্বামী- সে যাই হোক- আমার কাছে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের পরে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি। আমার স্বামী আমার কাছে সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারী। তিনি আমার একান্ত নিকটতম অভিভাবক। অন্যের কাছে অতি খারাপ হলেও আমার কাছে তিনি স্বয়ং দেবতা। এ কথা আপনার মনের ভিতর সুন্দর ভাবে বসাতে সক্ষম হলে অটোমেটিক আপনার মুখের ভাষা ও আচরণ সবকিছু নিখুত তৈয়ার হয়ে যাবে।

প্রশ্ন; এটা মুনাফেকী হবে কি না?
জবাব: না, কখনো নয়। বরং এটাই হল দাম্পত্য জীবনের সহীহ আমল। যে কোন নেক আমল প্রথমে থাকে রিয়া, তারপর পরিনত হয় আদত, তারপর পরিনত হয় ইবাদত।

প্রিয় ভগ্নীকুল!
সর্বাবস্থায় স্বামীর পক্ষাবলম্বন করে চলূন। শরীঅতের সুস্পষ্ট খেলাফ না হলে স্বামীর বিপরীতে দাঁড়াবেন না।

স্ত্রী স্বামীর শরীরের অঙ্গ। প্রত্যেক অঙ্গ বিবেক কর্তৃক প্রশ্নহীন ভাবে অভিন্ন আনুগত্যে চলে। চলতে হয়। নতুবা লোকটি নির্ঘাত অসুস্থ বলে ধরা হবে। স্ত্রী যেহেতু স্বামীরই শরীরের অঙ্গ। আর স্বামী হল সেই শরীরের বিবেক। সুতরাং বিবেকের সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে হ্যাঁ বলতে হবে। এখানে না- বলার নীতিগত সুযোগ নেই। আপনাকেও বিবেক দেওয়া হয়েছে- সেটাকে আপনি স্বামীর বিবেকের সাথে সাংঘর্ষিক শক্তি বানাবেন না। বরং সহযোগী শক্তি হিসাবে খাটান। দেখুন কি হয়!

শয়তান ও দুষ্ট লোকেরা এখানে উল্টা তরজমা করে। তারা মেয়েদের স্বাধীনতা হরণ করা হয় দাবি তুলে মিথ্যা চক্রান্ত চালায়। আপনি ঐ দু্ষ্টদের জবাব দিবেন এভাবে যে,
“দুনিয়ার সব শিয়ালরাই মুরগীর স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলে, ওকালতী করে, যুক্তি দেখায়, প্রয়োজনে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার মদদ যোগায়। মুরগীরা যদি এই চক্রান্ত বুঝতে ভুল করে সেই তো আর অন্যের কপাল নয়। নিজেরই কপাল খারাপ বানাবে।”

স্ত্রীদের কেউ কেউ আবার রাগ করে নিজের স্বাধীনতার সন্ধান করতে গিয়ে প্রাইভেট চাকুরীর খোজ করে। বৃষ্টি থেকে সরে সাগরে ঝাপ দেওয়ার মত অবস্থা। আরে বোইন ! তোমার সমস্যার সমাধান পরপুরুষের অধীনে চাকুরী করার মধ্যে নয় বরং নিজ স্বামীর আনুগত্যে গৃহের মধ্যে থাকার মধ্যে। স্বামীর আনুগত্যের মধ্যে তোমার জন্য হল ইজ্জত ও শান্তি। আর পরপুরুষের আনুগত্যের মধ্যে হয়ত লুকিয়ে থাকবে কোন দুষ্ট চিন্তা যা সময় পার হয়ে গেলে তুমি হবে নিতান্তই ব্যবহৃত টয়লেট পেপার।

প্রিয় ভগ্নীকুল!
অল্পে তুষ্টি আর কারও কাছ থেকে নেওয়ার চেয়ে অন্যকে দেওয়ার চেষ্টা বেশী করুন। স্বামীর কাছে আপনি নিজেকে কত চাহিদাহীন বানাতে পারেন সেই চেষ্টা করুন। এই সুক্ষ জিনিস স্ত্রীকে স্বামীর কাছে খুব বেশী আকর্ষণীয় বানিয়ে রাখে। নিজেকে যত চাহিদাহীন বানাবেন সম্মানজনক প্রাপ্তি তত আপনার চারিদিক ভরে যাবে।

দুনিয়া হল এমন এক কুকুর- যার মস্তক ভাঙ্গা আর লেজ চাছা-ছিলা মানে চামড়া নেই। স্বামীর কাছে চাহিদা যত বেশী দেখাবেন, প্রাপ্তি তত কম পাবেন, সম্মান তো নইই।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ