মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪ ।। ৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ৯ রমজান ১৪৪৫

শিরোনাম :

বিয়েতে রাজি না হওয়ায় এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ইউপি চেয়ারম্যানের নির্যাতন!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম 

‘বিয়েতে ব্যর্থ হয়ে’ লাইজু আক্তার নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে বাড়িছাড়া করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের আলোচিত চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সালামের বিরুদ্ধে। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন পিতৃহারা ওই কিশোরী। শিক্ষার্থীর বক্তব্য সংবলিত একটি ভিডিও বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের পিতাহারা ওই মেয়েটির স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। লাইজু আক্তার নলছিটি উপজেলার উত্তর রানাপাশা গ্রামের মৃত আফজাল কাজীর মেয়ে ও দক্ষিণ ডেবরার মৃত আব্দুল আজিজ মোল্লার ছেলে ইউনুস মোল্লার স্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেন, বছরখানেক আগে চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান ছালামের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান তাকে (লাইজুকে) বিয়ের প্রস্তাব দিলেও পরিবার রাজি হয়নি। এ ঘটনার পর ছালাম চেয়ারম্যান তার লাঠিয়াল বাহিনী ও চৌকিদারকে দিয়ে হুমকি-ধামকি দেওয়া শুরু করে। এ অবস্থায় ‘নিরূপায়’ হয়ে তার পরিবার তাকে অন্যত্র বিয়ে দেন।

এ খবর চেয়ারম্যানের কানে গেলে আরো ক্ষিপ্ত হন তিনি। ছাত্রী বলেন, গত ৫ ফেব্রুয়ারি সালামের লাঠিয়াল বাহিনীরা দেশিও অস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়ে তার বৃদ্ধ দাদীকে মারধর ও লাঞ্ছিত করে। পরে তাকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা চালায়।

কিশোরী অভিযোগ করেন, এখন মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশি হয়রানি ও গুম করার হুমকি দিচ্ছে। ছালামের ‘ক্যাডার বাহিনী’র কারণে সে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে পারছে না।

এ ব্যাপারে রানাপাশা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সালাম জানান, এসব অপপ্রচার ও তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের ষড়যন্ত্র। নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এসপি স্যারের নির্দেশে এসএসসি পরীক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। তাকে পরীক্ষা দিতে বলেছি। নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও জানিয়েছি। তারপরও পরীক্ষায় বসছে না সে।

উল্লেখ্য, বছর খানেক আগে স্থানীয় এক যুবককে এক দণ্ড দিয়ে  নিজস্ব কারাগারে পাঠান চেয়ারম্যান সালাম। একটি  মারামারির ঘটনায় সালিস বৈঠকে ওই যুবককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ইউপি চেয়ারম্যান। সালিসেই সেই টাকা না দিতে পারায় চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদে তার কক্ষে ওই যুবককে সাত দিন কারাবাসের দণ্ড দেন। সঙ্গে সঙ্গে দণ্ড কার্যকর করতে ওই যুবককে মারধর করে ওই কক্ষে ঢুকিয়ে দরজায় তালা দিয়ে রাখা হয়। পাহারায় বসানো হয় চার চৌকিদারকে। আর সেই কক্ষের তালার চাবি নিয়ে সন্ধ্যায়ই ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় চলে যান চেয়ারম্যান। খবর পেয়ে পুলিশ এলেও চেয়ারম্যানের লোকদের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারেনি। তালাবদ্ধ অবস্থায় 'চেয়ারম্যানের কারাগারে' রাত কাটে সেই যুবকের। বিষয়টি জেলা প্রশাসকের কান পর্যন্ত পৌঁছালে তার নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু তিনি পৌঁছার আগেই ওই কক্ষের তালা ভেঙে যুবককে মুক্ত করেন ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ