শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৭ কার্তিক ১৪৩২ ।। ২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
১৬ মাসে কোরআনের হাফেজ কক্সবাজারের ওবায়দুল করিম আমরা কোরআনকে জাতীয় সংসদে নিয়ে যেতে চাই: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে শনিবার বিক্ষোভ করবে জামায়াত  প্রশাসনকে দ্রুততার সাথে বস্তুনিষ্ঠ ব্যবস্থা নিতে হবে: ইসলামী আন্দোলন আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে মানিকগঞ্জ জেলায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  যারা আমাকে অপহরণ করেছে তাদের বাংলাদেশি মনে হয়নি জীবন দিলেও যদি চরিত্র না বদলায় তাহলে ভাগ্যও বদলাবে না: শায়খে চরমোনাই শ্রীমঙ্গলে বেওয়ারিশ কুকুরের আতঙ্ক: এক ঘণ্টায় তিন শিশু আহত ‘দুঃখজনক হলো ইসলামি অঙ্গন থেকে শক্তিশালী মিডিয়া গড়ার উদ্যোক্তা আমরা পাইনি’ ২৪ এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি: সারজিস

যে কারণে এখনো বাংলাদেশে আসছে রোহিঙ্গারা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম

কুতুপালংয়ে ইউএনএইচসিআর পরিচালিত একটি অন্তর্বর্তীকালীন আশ্রয় শিবিরের অফিসঘরের পেছনে বসে ছিলেন জনা দশেক রোহিঙ্গা শরণার্থীর একটি দল।

এরা সবাই নারী ও শিশু। মাত্রই এসে পৌঁছেছেন বাংলাদেশে। অপেক্ষা করছেন শরণার্থী হিসেবে তালিকাভুক্ত হবার এবং মাথা গোঁজার একটুখানি ঠাঁই পাবার।

এই দলটির মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ সানোয়ারার সাথে কথা বলে জানা গেলো, বাড়ির পুরুষেরা সহিংসতার কারণে নিখোঁজ ও নিহত হবার পরও গত ছ'মাস ধরে তারা মিয়ানমারে মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন।

এখন আর সেখানে সরাসরি কোন অত্যাচার নির্যাতন না থাকলেও নানারকম বাধা বিঘ্নর কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে সেখানে আর থাকবার উপায় ছিল না তাদের।

"কাজ করতে পারি না। খেতে পাই না। সেনাবাহিনী সন্ধেবেলায় ঘরে আলো জ্বালতে দেয় না। জঙ্গলে কাঠ কাটতে দেয় না। কাজ নেই। খাব কি"? বলছিলেন মিয়ানমারের বুচিডংয়ের সিন্নিপ্রাং গ্রামের বাসিন্দা সানোয়ারা।

কিন্তু গত বছর নভেম্বর মাসের শেষভাগে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বদেশে ফিরিয়ে নেবার ব্যাপারে মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের 'অ্যারেঞ্জমেন্ট' নামের একটি চুক্তি হবার পরেও কেন আসতে হচ্ছে সানোয়ারাদের?

রোহিঙ্গা

তার বক্তব্যে অবশ্য উঠে আসছে বাধাবিঘ্নের কথা। দেখা যাচ্ছে চুক্তি হবার পরও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে অন্তত দশ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে।

গত মঙ্গলবার আমি যেদিন কুতুপালং যাই সেদিন এসেছে কুড়ি জন।

আর গত ২রা ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসেছে ৪শর বেশী।

ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র ক্যারোলিন গ্লাক বিবিসি বাংলাকে বলছেন, "গত কয়েক সপ্তাহে অনেক বেশী সংখ্যায় এসেছে তারা"।

"তারা বলছে, তারা এখনো ভীত। তারা চলাফেরার স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হবার কথা বলছে। কাজের অভাবের কথা বলছে। দৈনন্দিন কাজ করতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হবার কথা বলছে। সেনাবাহিনী আতংকও এখনো রয়ে গেছে তাদের মধ্যে"। বলছিলেন মিজ গ্লাক।

অথচ ওদিকে দেখা যাচ্ছে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবার জন্যও কর্মতৎপরতা শুরু করেছে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ।

সেখানে থেকে বিবিসি বার্মিজ বিভাগের সংবাদদাতার পাঠানো ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বুলডোজার ব্যাবহার করে মাটি সমান করার কাজ হচ্ছে। চলছে টিন ও কাঠ দিয়ে বাড়ি নির্মাণের কাজও।

কিন্তু সেই তুলনায় বাংলাদেশে এখনো চোখে পড়ার মতো কোন তৎপরতা নেই।

গত প্রায় ছ'মাস ধরে নিবন্ধন কর্মসূচী চালিয়ে নতুন ও পুরাতন মিলিয়ে সাড়ে দশ লাখের বেশী রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নিবন্ধিত করবার পর বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ এখন বলছে তারা নতুন করে পারিবারিক ভিত্তিক তালিকা তৈরি করতে শুরু করেছে।

এই কাজ এখনো শেষ হয়নি।

ওদিকে মিয়ানমার শরণার্থীদের গ্রহণ করবার আগে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো তালিকা যাচাই-বাছাই করবে বলে শর্ত রয়েছে।

আশার কথা হচ্ছে, মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়ার জন্য পরিবার ভিত্তিক রোহিঙ্গাদের ছোট একটি তালিকা চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ।

এমন প্রেক্ষাপটে শরণার্থী প্রত্যাবাসন বিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে বৃহস্পতিবারই বাংলাদেশে এসেছেন মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিয়াও সোয়ে।

কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার আবুল কালাম বলছেন, পরিবারভিত্তিক রোহিঙ্গাদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা এরই মধ্যে প্রস্তুত করে রেখেছেন তারা।

জেনারেল সোয়ের এই সফরেই তার হাতে সেই তালিকাটি তুলে দেবার জোর সম্ভাবনা আছে বলে বিবিসিকে জানাচ্ছেন মি. কালাম।

সূত্র: বিবিসি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ