কাউসার লাবীব: বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের ১০ম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল আজ রাজধানীর ফরিদাবাদ মাদরাসায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন হাটজাহারী মাদরাসার মহা পরিচালক আল্লামা শাহ আমদ শফী।
অনুষ্ঠানে আল্লামা আহমদ শফী লিখিত বিশেষ বক্তব্য পেশ করেন। পড়ে শোনান খিলগাঁও মাখযানুল উলুম মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা নুরুল ইসলাম।
বিশেষ বক্তব্যে আল্লামা আহমদ শফী বলেন, উপস্থিত প্রিয় ও সম্মানিত ওলামায়ে কেরাম। আপনারা জানেন বেফাকের মজলিসে উমুমির মেয়াদ শেষ। তাই নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। আর এ উদ্দেশ্যেই আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি।
বইমেলার সব বই ঘরে বসে পেতে এখানে অর্ডার করুন
প্রথমেই আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি ওই সব ব্যক্তিদের যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বেফাক আজ এ পর্যন্ত এসেছে।
আমি স্মরণ করছি মাওলানা আতহার আলী রহ., মাওলানা রেজাউল করীম রহ., শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক রহ., মাওলানা আতাউর রহমান খান রহ. এবং মাওলানা আবদুল জব্বার রহ. কে।
প্রিয় উপস্থিতি! কওমি মাদরাসা মাদরাসা এসেছে সেই আসহাবে সুফফার রেখে যাওয়া চিন্তা চেতনাকে উজ্জীবিত করার জন্য। যা দেওবন্দের ওলামায়ে কেরামের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়ে আসছে।
এই কওমি মাদরাসা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের বিশ্বাস ও দেওবন্দের উসুলে হাশতেগানার নিয়মনীতির সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক রেখে আসছে। এই সম্পর্ক থেকে এতটুকু দূরে আসাও সম্ভব নয় আর সুযোগও নেই।
সম্মানিত ওলামায়ে কেরাম! আমি গত দুই মেয়াদে দশ বছর বেফাকে সভাপতি ছিলাম। আমি এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারিনি। কেননা আমি অসুস্থ এবং এ দায়িত্ব পালনের জন্য ততটা যোগ্য নই। তারপরও আপনার আমাকে সভাপতি পদে মনোনিত করেছিলেন।
আমি এই সময়ে অনেক নতুন মাদরাসা বেফাকের আওতায় এনেছি। সরকারি ও বেসরকারিভাবে বেফাকের নাম উজ্জ্বল করার চেষ্টা করেছি।
আপনারা জানেন, কওমি মাদরাসা শিক্ষার মানকে সরকারিভাবে স্বীকৃত করতে বেফাকের পক্ষ থেকে নয় সদস্যের একটি দল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে এবং তাকে জানায়, কওমি মাদরাসাকে যদি উম্মুল মাদারেস দারুল উলুম দেওবন্দের চেতনা ঠিক রেখে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া হয় তাহলে কওমি মাদরাসা স্বীকৃতি নিতে রাজি এবং প্রস্তুত।
তারপর আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষার সাতটি বোর্ডের সমন্বয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে এবং প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে কওমি মাদরাসাকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেন। এরকিছু দিন পর রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকেও এবিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
ইসলামি কিতাব, বয়ান ও মালফূযাতের অন্যন্য অ্যাপ
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো অনেকদিন যাবত সরকারিভাবে এর উন্নতির জন্য বা একে পূর্ণরূপ দেওয়ার জন্য কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। আমি সরকারকে এ বিষয়ে অতিসত্বর কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানাই।
আমি মনে করি জাতির জন্য আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া অনন্য এক উপহার।
প্রিয় ওলামায়ে কেরাম! আমার অনুরোধ আপনার সবসময় ঐক্যমত হয়ে কাজ করবেন। আপনাদের পৃথক করার জন্য বাতিলরা বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাদের উচিৎ জবাব দিতে হবে।
পরিশেষে আপনাদের প্রতি আমার উদাত্ত আহ্বান, আপনারা বেফাকের মান ধরে রাখবেন।নিজেদের মধ্যে কোনো সমস্যা হলে তা কেন্দ্রে জানাবেন। আপনাদের এলাকায় যেসব মাদরাসা এখনো বেফাকে অন্তর্ভূক্ত হয়নি তাদের অন্তুর্ভূক্ত করার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন।
প্রিয় উপস্থিতি! বেফাকের মজলিসে আমেলার সদস্য অনেক। কোনো সিদ্ধান্ত নিতে সবাইকে উপস্থিত করানো খুবই কষ্টসাধ্য বিষয়। তাই কাজের সুবিধার্থে মজলিসে খাস গঠন করা হয়েছে।
কিন্তু মজলিসে খাসে যে বিষয়টি অনুমোদন হবে তা অবশ্যই মজলিসে আমেলার কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
আর এ মজলিসে খাস গঠন করায় বেফাকের অনেক উপকার হয়েছে। বেফাকের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। ইনশাআল্লাহ অচিরেই বেফাকের পুরো ১০০ভাগ কাজ বেফাকের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
আমি আশা করছি বেফাকের দায়িত্বশীলগণ সব ক্ষেত্রে বেফাককে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন।
বেফাকের কমিটি; আল্লামা শফী সভাপতি, আবদুল কুদ্দুস মহাসচিব