শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


‘একটি লেখা শুরুর আগে লেখককে দীর্ঘ সময় অলস কাটানো উচিত'

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

কাউসার লাবীব: বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরামের উদ্যোগে আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম অডিটোরিয়ামে ৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার, অনুষ্ঠিত হলো ভাষার মাসের বিশেষ আয়োজন 'তরুণ লেখকদের গ্রন্থ সমালোচনা অনুষ্ঠান'।

বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও ছড়াকার মুনীরুল ইসলামের সঞ্চালনায় শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানটি বিকেল চারটা থেকে শুরু হয়ে রাত দশটায় শেষ হয়।

অনুষ্ঠানে কথাসাহিত্যিক মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন বলেন, এমন অনুষ্ঠান বেশি বেশি হওয়া দরকার। আমরা যদি এভাবে নিজেরা নিজেদের বই নিয়ে সমালোচনা ও পর্যালোচনা করি তাহলে লেখার ভুলত্রুটি দূর হবে এবং মজবুত হবে।

তিনি বলেন, আমরা বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে যতটুকু এগিয়েছি, এটা মাত্র ত্রিশ বছর মেহনতের ফসল। যদি এ মেহনত আমরা ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যেতে পারি, তাহলে ইনশাআল্লাহ অচিরেই বাংলা সাহিত্যের চেয়ার আমাদের দখলে আসবে।

একটি গ্রন্থ সমালোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমাদের তরুণরা এবং অনেক প্রবীণরাও তড়িঘড়ি করে বই লেখার চেষ্টা করি। যা কখনই উচিৎ নয়। বই শুরু করতে হবে দীর্ঘ সময় ভেবে। গল্পের ফ্রেমটাকে নিজের করোটিতে সাজিয়ে। আর লেখা অবশ্যই হতে হবে মেদশূন্য। মেদযুক্ত লেখা পাঠককে বই বিমুখ করে দেয়। লেখকের লেখার মান কমিয়ে আনে শূন্যে।

তিনি বলেন, আমি কিছুদিন আগে আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদের কাছে গিয়েছিলাম। তখন তার সঙ্গে লেখালেখির বিষয়ে বিভিন্ন আলোচনা হয়। তিনি এক পর্যায়ে বলেন, একটি লেখা শুরু করার আগে লেখককে দীর্ঘ সময় অলস কাটানো উচিৎ, অন্যান্য কাজ থামিয়ে শুধু ওই লেখাটি নিয়েই প্রচুর ভাবা উচিৎ। দীর্ঘ সময় ভাবার পর তার কলম তাকে যে লেখাটি উপহার দেবে, তা হবে অনন্য কিংবা অমর।

অনুষ্ঠানে নজরুল গবেষক কবি মহিউদ্দিন আকবর বলেন, মাদরাসায় বাংলা চর্চা এক সময় কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে এখন আর ওই পরিবেশ নেই। সবাই নিজ ভাষার খেদমত করতে বেকারার। নিজেদের কলম দিয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছেন দীন কায়েম করতে। যা আমাদের আশান্বিত করে।

তিনি একটি গ্রন্থ সমালোচনা করতে গিয়ে বলেন, লেখায় থাকতে হবে প্রাণবন্ত ভাব। গদ্য হলেও তাতে থাকতে হবে পদ্যের কিছু ছোঁয়া। আর পদ্য বা ছড়া হলে তাতে মাত্রা, অন্তমিল ও নিহিত ভালবাসার প্রতি গভীর লক্ষ রাখতে হবে। তাহলে এই লেখা একসময় আপনাকে সফলতা এনে দেবে। আপনাকে মানুষ স্মরণ করবে যুগের পর যুগ। আপনি বেঁচে থাকবেন আপনার নিপুন লেখার প্রতিটি ভাঁজে।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরামের সভাপতি জহির উদ্দীন বাবর বলেন, এ রকম উপকারী আয়োজন ঘনঘন হওয়া দরকার। তাহলে আমাদের তরুণদের লেখার ধার আরো বাড়বে।

ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরাম প্রতি মাসে না পারুক অন্তত দুই মাস অন্তর অন্তর এমন অনুষ্ঠান আয়োজন করার চেষ্টা করবে।

তিনি বলেন, যারা চান গবেষক, লেখক, কবি ও কথাসাহিত্যিকগণ তাদের গ্রন্থ নিয়ে সমালোচনা পর্যালোচনা করুক। তাদের বই জমা দেওয়ার অনুরোধ করছি।

সবশেষে তিনি আওয়ার ইসলামের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন, এমন একটি অনুষ্ঠান আয়োজনে সহযোগিতা করার জন্য।

গ্রন্থ সমালোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, লেখক ফোরামের সহসভাপতি গাজী মোহাম্মদ সানাউল্লাহ ও কাজী আবুল কালাম সিদ্দিক আওয়ার ইসলাম নির্বাহী সম্পাদক রোকন রাইয়ান, বার্তা সম্পাদক আতাউর রহমান খসরু, লেখক ফোরামের সাহিত্য সম্পাদক সায়ীদ উসমান, মাসিক রাহমানী পয়গামের সহ সম্পাদক আমিন ইকবাল, গল্পকার সাদ আবদুল্লাহ মামুন, লেখক ফোরামের নির্বাহী সদস্য আবুল ফাতাহ কাসেমী, ছড়াকার আবদুল্লাহ আশরাফ, মাসিক আল জামিয়ার সহসম্পাদক সুলাইমান সাদী, তরুণ লেখক আসআদুযযামানসহ অনেকে।

উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে আমিন ইকবালের উপন্যাস বিষাদ ছুঁয়েছে মন, আবদুল্লাহ আশরাফের সাল্লি আলা মুহাম্মদ এবং আবুল আবুল ফাতাহ কাসেমীর জীবন কথা গ্রন্থের আলোচনা হয়।

বইমেলায় ‘আওয়ার ইসলাম’ এর দুই প্রতিবেদকের নতুন বই


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ