শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


১১০ ফকিহ সাহাবী রা. এর নামের তালিকা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: সাহাবীদের মদ্যে ১১০ জন ছিলেন ফিকহবিদ। যারা ধর্মীয় বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতেন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু-আলাইহি ওয়া-সাল্লাম এর অবর্তমানে তাঁরই একনিষ্ঠ সাহাবীগণ ইসলামি শরী'আতের ধারক-বাহক, সংরক্ষক ও প্রচারক হিসাবে দায়িত্বপালন করবেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু-আলাইহি ওয়া-সাল্লাম তাঁদের বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্য করে তোলেন।

খোলাফায়ে রাশিদীনও এভাবে প্রশিক্ষণ দিতেন। যেমন, ওমর রা.-এর খেলাফতকালে একদিন তিনি তাবেঈ শুরাইহ রহ. কে বললেন, ‘যা আছে আল্লাহর কিতাবে তা দিয়ে মীমাংসা করবে।
আর যদি আল্লাহর কিতাবে সে বিষয়টি না থাকে, তাহলে নবীজির সুন্নাত দ্বারা মীমাংসা করবে। আর যদি সে বিষয়টি রাসূলের সুন্নাতেও না পাও তাহ'লে তোমার পূর্বসূরী সৎকর্মশীল মুহাক্কিক্ব আলেমদের মতামত অনুযায়ী মীমাংসা করবে।’

রাসূল সাল্লাল্লাহু-আলাইহি ওয়া-সাল্লাম এর পর ফৎওয়া প্রদানের দায়িত্বভার তাঁরই ঘনিষ্ঠ অভিজ্ঞ ও যোগ্য ছাহাবীদের উপর অর্পিত হয়। আছহাবে কিরামের মধ্যে যাঁরা ফৎওয়া প্রদানের দায়িত্ব পালন করেন তাঁদের সংখ্যা নারী-পুরুষ মিলে ১৩০ জনের মত। তাঁদের মধ্যে আবার কয়েকটি স্তর রয়েছে।

সবচেয়ে বেশী ফৎওয়া প্রদানকারী ছাহাবার সংখ্যা সাত জন।
তাঁরা হ'লেন- ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব রা. (মৃত্যু ২৩হিজরী), আলী ইবনু আবী ত্বালিব রা. (৪০হিজরী), আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ রা. (৩২/৩৩হিজরী), উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. (৫৮হিজরী), যায়েদ বিন ছাবিত রা. (৪৫হিজরী), আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস রা. (৬৮হিঃ) ও আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর রা. (৭৩হিঃ)।

তাঁদের সবাই এত বেশী ফৎওয়া রেখে গেছেন যা একত্রিত করলে বিরাট বিরাট পান্ডুলিপি হয়ে যাবে।

আছহাবে কেরামের মধ্যে যাদের অধিক সংখ্যক ফৎওয়া প্রদানের সুযোগ হয়নি অর্থাত যারা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন, তাঁদের উল্লেখযোগ্য হ'লেন- হযরত আবু বকর রা. (মৃত্যু ১৩হিজরী), উম্মে সালামা রা., আনাস বিন মালিক রা., আবু সাঈদ খুদরী রা., ওছমান ইবনু আফফান রা., আবু হুরায়রা রা., আব্দুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আছ রা., আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়ের রা., আবু মূসা আল-আশ'আরী রা., সা'দ বিন আবী ওয়াক্কাছ রা., সালমান ফারেসী রা., জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ রা., মু'আয ইবনু জাবাল রা., তালহা রা., যুবায়ের রা., আব্দুর রহমান ইবনু আউফ রা., ইমরান ইবনু হুসাইন রা., আবু বাকরাহ রা., উবাদা বিন ছামিত রা. এবং মু'আবিয়া ইবনু আবী সুফিয়ান
রা. প্রমুখ।

যে সব সাহাবী অল্প সংখ্যক ফৎওয়া প্রদান করেছেন তাঁরা হ'লেন- হজরত আবু দারদা রা., আবুল ইয়াসার রা., আবু সালামা আল-মাখযূমী রা., আবু ওবায়দা ইবনুল জাররাহ রা., সাঈদ বিন যায়েদ রা., হাসান, হুসাইন রা., নু'মান ইবনু বাশীর রা., আবু মাসঊদ রা., উবাই কা'ব রা., আবু আইয়ূব রা., আবু তালহা রা., আবু যর আল-গিফারী রা., উম্মে আতিয়্যাহ রা., ছাফিয়া রা., হাফছা রা., উম্মু হাবীবাহ রা., উসামাহ বিন যায়েদ রা., জা'ফর ইবনু আবী তালিব রা. ও বারা ইবনু আযিব
রা. প্রমুখ।

উল্লেখিত সাহাবাগণ ছাড়াও একেবারে কম সংখ্যক ফৎওয়া প্রদান করেছেন কিছু সাহাবী যাদের এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

বিশেষ নোট: প্রধান সাহাবী সিদ্দিকে আকবর হজরত আবু বকর রা. অনেক বড় আলেম
হয়েও অধিক সংখ্যক ফাতাওয়া প্রদানের সুযোগ হয়নি। এর সম্ভাব্য কারণগুলো নিন্মরূপ

[১] তিনি নবীজি সাল্লাল্লাহু-আলাইহি ওয়া-সাল্লামের ইন্তেকালের পর জীবিত ছিলেন মাত্র দুই বছর কয়েক মাস (আবু বকর রাঃ ১৩ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন)।

অপরদিকে অধিক সংখ্যক ফাতাওয়া প্রদানকারী সাহাবী (উপরে উল্লেখিত) ইন্তেকাল
করেন আরো অনেক পরে। সুতরাং সময়ের বিচারে আবু বকর রা. ফাতাওয়া প্রদানের
সুযোগ পেয়েছেন কম।

[২] তিনি আখেরাতের ভয়ের প্রাবল্যের কারণে ফাতাওয়া প্রদান করতেন কম। একই
কারণে তিনি নিজের কাছে সংরক্ষিত হাদিসের পান্ডুলিপি পুড়িয়ে ফেলেছিলেন।

[৩] নবীজির ইন্তেকালের পর খেলাফত পরিচালনা করতে এসে হযরত আবু বকরকে অল্প
সময়ের মধ্যেই অনেক ফেত্‍নার মুকাবেলা করতে হয়েছে, যার জন্য রাষ্ট্র পরিচালনাতেই অধিক সময় ব্যয় করতে হয়েছে, ফাতাওয়া দানের সময়-সুযোগ খুব একটা পাননি। (আল্লাহ সর্বজ্ঞ)।

স্বল্প পুঁজিয়ে লাভজনক কয়েকটি ব্যবসার উপায়!


সম্পর্কিত খবর