বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১০ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫


‘বুদ্ধিমানরা সংশোধনের উদ্দেশ্য ছাড়া সমালোচনা করে না’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

কাউসার লাবীব
প্রতিবেদক

অনলাইন নিউজপোর্টাল আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের উদ্যোগে রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট সম্মেলন।

তোপখানা রোডের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি মিলনায়তনে বিকেলে তরুণদের এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক হুমায়ুন আইয়ুব।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ার ইসলামের প্রধান সম্পাদক মুফতি আমিমুল ইহসান।

সভায় মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়া সঙ্কট ও সমাধান’ শীর্ষক বিষয়ের ওপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন দেশের আলোচিত তরুণ, লেখক, সাংবাদিক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টগণ।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট লেখক ও অনুবাদক আব্দুস সাত্তার আইনী বলেন, মিডিয়া শুধু অনলাইন পত্রিকা নয়। প্রিন্ট মিডিয়াগুলোও মিডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

এছাড়া বর্তমান মিডিয়ায় ‍যুক্ত হয়েছে ফেসবুক, বেবো, টুইটার, গুগল প্লাস, ইউটিউব, স্কাইপ, অ্যাডভোগেট, এ্যাবাউট.মি, বোল্ড, ক্লোব, cyworld, ইলো, ইলেক্সো, ফ্লিকার, ফুলকি , ফটোলগ, ইন্সটাগ্রাম, জাইকো, Linkedin, মাইস্পেস, কিউজোন, টুইটার , ভিকে, আপলাইকসহ প্রায় সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো।

পাশাপাশি চলচ্চিত্র জগত অর্থাৎ নাটক, সিনেমা, টিভি সিরিয়াল, সর্টফিল্মগুলোও মিডিয়ার কাজ করছে।

আপনি যদি গ্রাম-গঞ্জে গিয়ে দেখেন তাহলে দেখবেন, তার মনে সে তাই লালন করে যা সে নাটক সিনেমায় দেখতে পায়।

মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা তাদের চিন্তাচেতনাগুলো তাদের কাছে পৌঁছে দেয় নাটক সিনেমার মাধ্যমে। যা শহরের মানুষের মনের মধ্যে প্রবেশ করায় প্রচলিত অনলাইন বা প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে।

আব্দুস সাত্তার আল আইনী বলেন, কিছুদিন আগে দেখলাম জাজ মাল্টিমিডিয়া তাদের সিনেমায় মহিলা মাদরাসার ছাত্রীদের বোরকা পড়িয়ে অভিনয় করিয়েছে। যা বলা যায় ইতিহাসে প্রথম ।

এভাবেই তারা আমাদের মিডিয়ার কালো থাবায় আমাদের চিন্তা চেতনা কাজ কর্মকে কলুষিত করছে। আর আমরা চাচ্ছি তাদের এই অযাচিত কর্মগুলোকে চিরতরে মুছে দিতে। কিন্তু তা কি সম্ভব?

কোনো মানুষের মন থেকে তার চিন্তা চেতনা একেবারে নির্মূল করা সম্ভব নয়। পাকিস্তান কাদিয়ানিদের নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু তাদের চিন্তা চেতনা নির্মূল করতে পারেনি।

তবে আমরা যদি চাই তাহলে আমাদের কর্মতৎপরতার মাধ্যমে তাদের মতগুলোকে খণ্ডন করে তাতে শুদ্ধতার ছোঁয়া লাগাতে পারি।

তিনি বলেন, আমরা যারা মিডিয়ার বিভিন্ন অঙ্গনে কাজ করছি। তাদের অনেক সাবধান হতে হবে। আর লেখা ও সমালোচনায় থাকতে হবে মায়া।

আমাদের মনে রাখতে হবে নবী ছাড়া কেউ পুরোপুরি শুদ্ধ নয়। তাই যেকারোই ভুল হতে পারে। তাই বলে তাকে ব্যক্তিগত আক্রোশের লক্ষ বানাবো না।

আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন, মানুষকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর সময় তাদের মন থেকে হিংসা-বিদ্ধেষ মুছে তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। কিন্তু আমরা কি পারি না ওইদিনের অপেক্ষা না করে এই পার্থিব জীবনেই নিজের মনগহীন থেকে হিংসা ও বিদ্ধেষকে দূর করতে ।
হিংসা কখনই মানুষকে সফলতা এনে দেয়না। হিংসা মানুষকে পৌঁছায় নোংরা এক জগতে।

লেখা বা কথায় সমালোচনার ক্ষেত্রে যদি হিংসা বিদ্ধেষের ছিটেফোটাও থাকে তাহলে তা অন্যের জন্য সংশোধনের মাধ্যম হয় না। অথচ বুদ্ধিমান কখনও সংশোধনের উদ্দেশ্য ছাড়া সমালোচনা করে না।

মুফতি শফি রহ. বলেন, ‘আমি কাদিয়ানি মতবাদ নিয়ে একটি বই লিখেছি। এই বই লেখার এক কাদিয়ানি এসে আমাকে বলল, আপনি এই বইটি খুব ভালো লিখেছেন। কিন্তু এতে আপনি মায়া দিয়ে লিখেননি। এই বই পড়লে এটাই মানুষের কাছে ফুটে উঠে ‘আপনি এতে বিদ্ধেষ নিহিত রেখেছেন।’

আমি কিছুদিন পর আমি আমার বইয়ে সংশোধন আনি। লেখায় মমতা আর মায়া নিয়ে আসি।
এর কিছুদিন পর ওইলোক আমার কাছে এসে বলে আপনার বইটি আমি পড়েছি এবং আমার মনে হয়েছে আপনি বইটি লিখেছেন একমাত্র সংশোধনের জন্য ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটানোর জন্য নয়।’

তিনি আরও বলেন, একজনের ভুল হলে অন্যজন তা সংশোধন করে দিবে এটাই তো মানবতা, বিবেক ও ভালবাসার পরিচয়।

সবশেষে তিনি বলেন, আমি বলব আমাদের নিজেদের মধ্যে বিদ্ধেষ সৃষ্টি না করে সতর্ক হওয়া দরকার এবং আমাদের মাদরাসাগুলোতে যেভাবে জাজ মাল্টিমিডিয়ার মতো অন্যান্য মিডিয়াগুলো কালোথাবা দিচ্ছে তা থেকে মাদরাসাগুলোকে রক্ষা করার বিষয়ে যত্নশীল হওয়া দরকার।

‘আসুন নিজেদের শক্তি ক্ষয় না করে কমন শত্রুর বিরুদ্ধে সোচ্চার হই’


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ