শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


‘এখন থেকে দেশের সব ক্যাম্পাসে দৃশ্যমান রাজনীতিতে যাওয়ার ইচ্ছে আছে’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন। বাংলাদেশে ইসলামি ধারার ছাত্র সংগঠন। ১৯ জানুয়ারি ঢাকার বায়তুল মোকাররম চত্বরে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সম্মেলনে নতুন সেশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন শাইখ ফজলুল করীম মারুফ। ২৩ আগস্ট ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করা সংগঠনের ১৪তম সভাপতি তিনি।

শাইখ ফজলুল করীম মারুফ একজন হাফেজে কুরআন ও আলেম। বর্তমানে পড়ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক-প্রশাসন বিভাগে। ২০০০ সালে হিফজখানায় পড়ার সময় তিনি সদস্য ফরম পূর্ণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন।

চট্টগ্রামের চাদগাও-এ প্রথম সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেন। এরপর বিভিন্ন স্তরে দায়িত্বপালন করে ২০১২ সালে কেন্দ্রীয় আমেলা সদস্য নির্বাচিত হন। পূর্বে তিনি কেন্দ্রের মাদরাসা বিষয়ক সম্পাদক, প্রশিক্ষণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, সেক্রেটারি জেনারেল ও সহ-সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।

ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের নব-নির্বাচিত সভাপতির অনুভূতি ও কর্মপরিকল্পনা জানতে তার মুখোমুখি হয়েছিলো আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম। তার সঙ্গে কথা বলেন আতাউর রহমান খসরু।

আওয়ার ইসলাম : ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। আপনার অনুভূতি কী?

ফজলুল করীম মারুফ : প্রথমত অনুভূতি হলো মহান আল্লাহর কাছে আমি কৃতজ্ঞ যে তিনি আমাকে এ কাজের জন্য নির্বাচিত করেছেন। আমার শত অপূর্ণতার পরও তিনি আমার প্রাণের সংগঠনের সর্বোচ্চ স্তরে মনোনীত করেছেন। তার কাছে আমার প্রার্থনা তিনি যেনো আমার সব অপূর্ণতা দূর করে দেন।

দ্বিতীয়ত দলের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমসহ দলের সব নীতিনির্ধারকদের প্রতিও আমার কৃতজ্ঞতা যে তারা আমার উপর আস্থা রেখেছেন।

তবে সবকিছু ছাপিয়ে ভয়টাই বেশি কাজ করছে। দেশের সঠিক ধারার সবচেয়ে বড় সংগঠনের নেতৃত্ব দেয়া ভয়ের ব্যাপারই। কারণ, আমাদের সিদ্ধান্তে দেশের লাখো তরুণ পরিচালিত হয়। আমাদের সিদ্ধান্তে তারা সারা রাত পোস্টার লাগায়, সারাদিন মিছিল করে, আন্দোলন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের আবেগ, অনুভূতি ও ইসলামি বিপ্লবের পক্ষে তাদের নিবেদন সঠিক পথে পরিচালিত করা অনেক বড় আমানত বলেই আমি মনে করি।

এককথায় বললে, হজরত ওমর রা. এর একটি বাণী আমি স্মরণ করবো। তিনি বলেছেন, মুমিন আশা ও ভয়ের মাঝে অবস্থান করে। আমার ভেতর ভয় ও আশা দুটোই কাজ করছে।

আওয়ার ইসলাম : আপনি শৈশব থেকে এ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। সংগঠনের কোন দিকগুলো আপনাকে বেশি আকর্ষণ করে?

ফজলুল করীম মারুফ : ছাত্র আন্দোলনের একটি মূলনীতি রুহানিয়্যাত ও জিহাদের সমন্বয়। সংগঠনের সবস্তরে সমান্তরালভাবে বিষয়টি কার্যকর। ইসলামি সমাজ গঠন ও সমাজ বিপ্লবের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টি আমাকে আকর্ষণ করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বের পৃথিবীতে জাতিরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা হয়েছে। জাতিরাষ্ট্র বা জাতীয়বাদী রাষ্ট্রে আমরা ইসলামি আন্দোলনের বিভিন্ন রূপ ও দর্শন দেখেছি যার অধিকাংশ সফল হয় নি। আমি মনে করি, তা হয় নি কেবল রুহানিয়্যাত ও জিহাদের সমন্বয় না থাকার কারণে।

আওয়ার ইসলাম : ছাত্র আন্দোলনের কাজ করতে যেয়ে কোন বিষয়টি আপনাদের কাছে বেশি চ্যালেঞ্জের বলে মনে হয়েছে? তা কিভাবে মোকাবেলা করছেন?

ফজলুল করীম মারুফ : আমরা ছাত্রদের ইসলামি শাসনব্যবস্থার গুরুত্ব ও উপকার, প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা ইত্যাদি বুঝিয়ে ছাত্রদের সংগঠনে অন্তর্ভূক্ত করি। এ সময় তারা ইসলামি শাসনের জাগতিক কল্যাণের বিষয়টি উত্থাপন করে। ইসলামি শাসন যে গণমানুষের কল্যাণে কাজ করবে তা তারা নিশ্চিত হতে চায়। এ প্রশ্নটি কলেজ-ভার্সিটি পড়ুয়াদের থেকেই বেশি আসে।

দেশে এই প্রথম আধুনিক চিকিৎসার সমন্বয়ে নববি চিকিৎসা হিজামা

এ বছর আমাদের প্রধান একটি লক্ষ্য হবে, কলেজ-ভার্সিটি পড়ুয়াদের সামনে ইসলামের মানবিক দিক তুলে ধরে তাদের সংশয় দূর করা।

আওয়ার ইসলাম : আপনাদের সংগঠনের এমন কী কর্মসূচি আছে যাতে সংগঠনের কর্মীরা শুধু ইসলামি আন্দোলন ও বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত হবে না; বরং ব্যক্তিগত জীবনেও যোগ্য হবে?

ফজলুল করীম মারুফ : এটা আমাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যেই বলা হয়েছে ব্যক্তিজীবন গঠন এবং সমাজের সব স্তরে ইসলাম প্রতিষ্ঠা। আমাদের মৌলিক কর্মসূচিতে আছে ইলম ও তারবিয়্যাত, আমল ও তাজকিয়া। এ দুটি বিষয়ের মাধ্যমে কর্মীদের জ্ঞানগত বিষয়, আচরণ ও আত্মশুদ্ধির দিকে উন্নতি হয়।

আওয়ার ইসলাম : আমি বলতে চাচ্ছি তার ব্যক্তি ক্যারিয়ার উন্নয়নের জন্য কী কর্মসূচি আছে। যেনো সংগঠনে সময় দেয়ার কারণে তার ব্যক্তিজীবন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

ফজলুল করীম মারুফ : ব্যক্তি জীবনের সাফল্যের বড় একটি দিক হলো সমাজের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারা, সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা এবং নেতৃত্বের যোগ্যতা গড়ে ওঠা। ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন করলে নেতৃত্বের গুণাবলী তৈরি হবে। নিজের স্বকীয়তা বজায় রেখে সব সমাজে চলতে পারার যোগ্যতা হবে। সাহস, দৃঢ়তা ও মনোবল তৈরি হবে।

আমরা দেখেছি, ছাত্র আন্দোলন করলে পরবর্তী জীবনে সে তার কর্মস্থলে দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে যেতে পারছে এবং নেতৃত্ব লাভ করছে। অন্তত মনোবল হারাচ্ছে না, হেরে যাচ্ছে না।

আওয়ার ইসলাম : ইসলামী ধারার ছাত্র সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো তারা ছাত্রদের ‘নিখাঁদ স্বার্থ ও দাবি’ নিয়ে কথা বলে না। যেমন বামধারার ছাত্র সংগঠনগুলো করে?

ফজলুল করীম মারুফ : বিষয়গুলোকে আমরা খণ্ডিত আকারে না দেখে বৃহৎ আকারে দেখি। আমরা মনে করি, সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম না থাকার কারণে সমাজের সব সংগঠনের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও ক্ষতিগ্রস্ত। তাই আমরা মূল সমস্যার সমাধানে বেশি গুরুত্ব দেই। আমরা সামগ্রিক সমস্যার সমাধান চাই।

তবে ছাত্রদের একান্ত সমস্যা ও দাবিগুলোর সমাধানে যে আমরা কথা বলি না তা ঠিক নয়। আমরা অবশ্যই এ বিষয়ে কথা বলি।

সমস্যা সমাধানের দুটি দিক। এক. তা নিয়ে রাজনীতি করা এবং মিটিং শ্লোগানে পরিবেশ গরম করা। দুই. মূল সমস্যার সমাধান করা।

২০১৭ সালে বাংলাদেশে যে ১০ বই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে

বাম সংগঠনগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সমস্যার সমাধান করার জন্য বিগত দুই-তিন দশক ধরে আন্দোলন করছে। যদিও তাদের আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ। তবুও তাতে কি সমস্যার সমাধান হয়েছে? তাদের চেষ্টা এই মিছিল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। তারা মিছিল শেষে এসি রুমে ঠাণ্ডা হাওয়া গ্রহণ করে।

আর আমরা হলবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য মিছিল করে প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করি। একই সাথে তাদের মেসের ব্যবস্থা করি। নিজেরা কষ্ট করে তাদের থাকার ব্যবস্থা করি।

আওয়ার ইসলাম : এটা তো সত্য ছাত্রদের দাবি আদায়ের আন্দোলনে বামধারার ছাত্র সংগঠনগুলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণে অনেক বেশি এগিয়ে?

ফজলুল করীম মারুফ : আমি নিজেও তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বামদের ব্যাপারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিভঙ্গি কি সেটা মনে হয় আমি একটু বড় প্রেক্ষাপট থেকে জানি। তাদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনেক ধরনের রসিকতা রয়েছে। তাদের মিছিল-মিটিংকে সচেতন শিক্ষার্থীরা একপ্রকার ধান্ধা হিসেবেই দেখেন।

যদি সত্যিই দৃষ্টি আকর্ষণ করতো তবে বাম সংগঠনগুলোর অবস্থা আরও ভালো থাকতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালের বাইরে তাদের অবস্থা আরও শোচনীয়। যদি দেয়াল লিখনই ছাত্র রাজনীতি হয় তবে হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা কিছুটা পিছিয়ে। নতুবা আমরা মোটেই পিছিয়ে নেই।

আওয়ার ইসলাম : ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনে ত্রিধারার শিক্ষার্থীরা মিলিত হয়। এদের মধ্যে ছাত্র আন্দোলন তার নেতৃত্ব নির্বাচনে কারা প্রাধান্য পায়?

ফজলুল করীম মারুফ : ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন দীন পরিচালনার জন্য, সংগঠন পরিচালনার জন্য ব্যক্তি জীবনে যোগ্যতা প্রয়োজন হয় তা যার মধ্যে বেশি তাকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। অর্থাৎ তাকে ইসলামি জ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞান উভয় ধারায় দক্ষ হতে হবে।

এছাড়াও ইসলামি আন্দোলনের প্রতি তার আত্মনিবেদনও বিশেষভাবে বিবেচ্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখানে বিবেচ্য নয়।

Image may contain: 5 people, indoor

আওয়ার ইসলাম : নতুন সেশনের সভাপতি হলেন। আপনার সেশনে ইশা ছাত্র আন্দোলনের মূল ট্যাগলাইন কী হবে?

ফজলুল করীম মারুফ : আমাদের জনশক্তি কার্যক্রম নামে একটি কার্যক্রম রয়েছে। এ কার্যক্রমের লক্ষ্য ছাত্রদের ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিক দক্ষতা বৃদ্ধি করা। এটাকে আরও জোরদার করা আমাদের বড় একটা লক্ষ্য।

এ বছর থেকেই দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসে দৃশ্যমান রাজনীতিতে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। যা এতোদিন কৌশলগত কারণে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

তাছাড়া জাতীয় নির্বাচন সামনে। মূল সংগঠন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় তবে অঙ্গ সংগঠন হিসেবে প্রার্থীদের সহযোগিতা করা আমাদের বড় একটি কাজ হবে।

আওয়ার ইসলাম : ইশা ছাত্র আন্দোলন বৈপ্লবিক না গণমুখী সংগঠন?

ফজলুল করীম মারুফ : ছাত্র আন্দোলন মনে করে বিপ্লব এক রৈখিক কোনো বিষয় নয়। প্রকৃত বিপ্লব হয় সামগ্রিক। সামগ্রিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সামাজিক ও রাষ্ট্রনৈতিক বিপ্লবের স্বপ্ন দেখে ইশা ছাত্র আন্দোলন। গণমানুষকে পাশ কাটিয়ে কোনো বিপ্লব সফল হতে পারে বলে আমি মনে করি না।

আওয়ার ইসলাম : যে ছেলেটি ইশা ছাত্র আন্দোলন করে না। তার জন্য ছাত্র আন্দোলন কী করছে?

ফজলুল করীম মারুফ : ইশা ছাত্র আন্দোলন তার নিশ্চিত ও নিরাপদ ভবিষ্যত নির্মাণে কাজ করছে। যে ছেলেটা রাজনীতি করে না পড়ালেখা শেষে তার জন্য একটি কর্মসংস্থান প্রয়োজন। আর তা নিশ্চিত করতেই ছাত্র আন্দোলন কাজ করছে।

এ ক্ষেত্রে সে যদি অমুসলিম হয় তবুও দেশের নাগরিক হিসেবে সে যেনো নায্য অধিকার পায় ইশা ছাত্র আন্দোলন সে লক্ষ্যে কাজ করছে।

আওয়ার ইসলাম : ইশা ছাত্র আন্দোলনের জনকল্যাণমূলক কী কী কার্যক্রম রয়েছে?

ফজলুল করীম মারুফ : আমরা প্রতি বছর বড় অঙ্কের একটি অর্থ শিক্ষাবৃত্তি হিসেবে বিতরণ করি, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করি, প্রাকৃতিক দুর্গত এলাকায় কাজ করে থাকি।

ইশা ছাত্র আন্দোলন জেলা শহরগুলোতে ছিন্নমূল শিশুদের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে। তাদের যেমন কালেমা-নামাজসহ ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো শেখানো হচ্ছে। একই সাথে তাদের অক্ষর জ্ঞানও দেয়া হচ্ছে।

আওয়ার ইসলাম : বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য আপনি কিছু বলতে চান?

ফজলুল করীম মারুফ : আমি একটি কথাই বলবো, যে তার ক্যারিয়ার ও সমাজ নিয়ে কাজ করতে চায় সে যেনো ছাত্র আন্দোলনে যোগদান করেন। ছাত্র আন্দোলন তার অজান্তে তাকে একজন আদর্শ মানুষে পরিণত করবে।

আওয়ার ইসলাম : দীর্ঘ সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ফজলুল করীম মারুফ : আপনাকেও ধন্যবাদ।

বয়ান ও গুরুত্বপূর্ণ সব কিতাবের অনন্য অ্যাপ ইসলামী যিন্দেগী


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ