শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


পরকালের প্রস্তুতি গ্রহণে প্রিয়নবির ৫ উপদেশ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মৃত্যু একটি সুনিশ্চিত এবং নির্ধারিত বিষয়। কোনো কিছুর জন্ম অনিশ্চিত হলেও জন্মের পর তাঁর মৃত্যু সুনিশ্চিত। মানুষ এ কথা জানা সত্ত্বেও মৃত্যুর ব্যাপারে গাফেল হয়ে আছে। একজন মুসলিমের প্রধান কাজ হলো মৃত্যুর কথা বেশি বেশি স্মরণ করা। কারণ মৃত্যুর স্মরণই মানুষকে সব সময় ভালো কাজের প্রতি পরিচালিত করে।

কিন্তু মানুষের মৃত্যু কখন হবে এ ব্যাপারে মানুষের কোনো ধারণা নেই। তাইমানুষের জন্য করণীয় হলো সব সময় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকা। আর মৃত্যু আসার আগে পরকালের পাথেয় সংগ্রহে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ৫টি উপদেশ মেনে চলা জরুরি।

আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, পাঁচটি জিনিসকে পাঁচটি জিনিসের পূর্বে মূল্যবান মনে কর। আর তাহলো-

>> মৃত্যুর আগে তোমার (দুনিয়ার) জীবনকে মূল্যবান মনে কর;

>> অসুস্থ্য হওয়ার আগে সুস্থতাকে মূল্যবান মনে কর;

>> ব্যস্ত হয়ে যাওয়ার আগে অবসরকে মূল্যবান মনে কর;

>> বৃদ্ধ হওয়ার আগে যৌবনের সময়কে মূল্যবান মনে কর;

>> অভাব বা দারিদ্র্যতার আগে স্বচ্ছলতা বা প্রাচুর্যকে মূল্যবান মনে কর। (মুসনাদে আহমদ)

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ বিখ্যাত হাদিস মানুষের জীবন চলার গতিকেই পরিবর্তন করে দেয়। পথহারা মানুষ পায় সঠিক পথের দিশা। এ হাদিসের আলোকেই মানুষ কবরের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবে বেশি।

কারণ এ পাঁচটি অবস্থা মানুষের জীবনকালের সঙ্গে সম্পর্কিত। যারা পরকালের চিন্তাভাবনা করে তখন তারা এ বিষয়গুলো চিন্তা করে পরকালীন জীবনের জন্য পাথেয় সংগ্রহে গভীরভাবে আত্মনিয়োগ করে।

মনে রাখতে হবে-
কোনো মানুষই মৃত্যুর পর দুনিয়ায় তার রেখে যাওয়া কোনো সম্পদই নিয়ে যেতে পারবে না। শুধু তা-ই নয়, মানুষের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তাঁর আমল করার সুযোগেরও পরিসমাপ্তি ঘটে। তাই মৃত্যুর আগে হায়াতে জিন্দেগিকে মূল্যবান মনে করার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন প্রিয়নবি।

ইবাদত বন্দেগির জন্য মানুষের সুস্থতা প্রয়োজন। এ কারণে হাদিসে পাকে সুস্থতাকে মূল্যবান মনে করার ব্যাপারে তাগিদ দেয়া হয়েছে। যাতে মানুষ সুস্থ অবস্থায় কুরআন-সুন্নাহর বিধান মোতাবেক জীবন পরিচালনা করতে পারে।

মানুষ যখন কর্ম ব্যস্ততা থেকে অবসর হয়, তখনই আল্লাহর ইবাদত বন্দেগিতে নিজেকে নিয়োজিত করা উচিত। যদিও আল্লাহর নামে করা প্রতিটি কাজ এবং ব্যস্ততাও ইবাদতে শামিল। তথাপিও আল্লাহ তাআলা কর্তৃক কিছু ফরজ কাজ রয়েছে; যেগুলো যথা সময়ে আদায় করতে হয়। যেমন- নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ইত্যাদি বিধানাবলী।

নামাজের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ততা না থাকলে তা যথা সময়ে আদায় করে নেয়া। এভাবে রোজার জন্য সেহরি গ্রহণে অলসতা না করে যথা সময়ে তা গ্রহণ করা। এভাবে প্রতিটি কাজই ব্যস্ততার আগে অবসরকে মূল্যবান মনে করার ব্যাপারে বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন প্রিয়নবি।

মানুষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে যৌবন কালে। সে সময় মানুষ বিভিন্ন কারণে বিপথগামী হয়। এ কারণে আল্লাহ তাআলার কাছে যৌবন কালের গুরুত্ব বার্ধক্যের তুলনায় অনেক বেশি।

অর্থ সম্পদ বা প্রাচুর্যকে দুনিয়ার সব অনর্থের মূল বলা হয়ে থাকে। তথাপিও ইসলামে সম্পদ বা স্বচ্ছলতার গুরুত্ব অনেক বেশি। মানসিক প্রশান্তির জন্য স্বচ্ছলতা অনেক বেশি প্রয়োজন।

স্বচ্ছল ব্যক্তি সম্পদহারা হয়ে গেলে অনেক অন্যায় কাজে ধাবিত হয়। চারিত্রিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অস্বচ্ছলতা আসার আগে স্বচ্ছলতাকে মূল্যবান মনে করতে তাগিদ দিয়েছেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহ উল্লেখিত হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন। জাগো নিউজ।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ