শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


বিজ্ঞাপনে কী শিখাচ্ছে রবি (ভিডিও সহ)

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: সম্প্রতি মোবাইল ফোন কোম্পানি রবি অজিয়াটা তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি বিজ্ঞাপন আপলোড করেছে তাতে ইন্টারনেটে শিশুরা কী শিখছে সে ব্যাপারে সচেতনাতা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কিছু প্রশ্ন করা হয়েছে।

কিন্তু সচেতনতার মোড়কে শিশুরা কী শিখছে তা জানতে গিয়ে এমন কিছু বিষয় উপস্থাপন করেছে তাতে শিশু অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মনে করছেন শিশু শিশু-মনস্তত্ত্ববিদরা।

একমিনিট ১১ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে ইন্টারনেট থেকে তুমি কী শিখছো প্রশ্ন করা হলে, শিশুদের কেউ বলেছে- গান শিখেছি, আজান শিখেছি, ফ্রেঞ্চ ল্যাঙ্গুয়েজ শিখেছি।

এতোটুকুতে ছিলো না কোনো বিপত্তি। কিন্তু এই প্রশ্নের পরবর্তী উত্তরে যা উপস্থাপন করা হয়েছে তা ভীষণ আপত্তিজনক।

এইটুকুর পর একটি শিশু এসে আরেকটি শিশুকে দেখিয়ে বলে, ও ১৯ রকম গালি দেওয়া শিখেছে। এরপর শুরু হয় গালি দেওয়া। যদিও সেগুলো বিপ শব্দ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

এরপর আরেকটি শিশু ড্যান্স শিখেছে জানিয়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে। ভিডিও’র সব শেষে একটি শিশু মুখ ভার করে বলে, ‘আমি ইন্টারনেট থেকে বোম্ব বানানো শিখেছি।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, কী উদ্দেশ্যে এমন বিজ্ঞাপন করা হয়েছে, সেটা ছাপিয়ে যদি ভিন্ন কিছু উপস্থাপিত হয়, তাহলে সেটি অগ্রহণযোগ্য।

শিশুদের অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেন গহওর নঈম ওয়ারা। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘শিশুদের চেহারা দেখিয়ে এ ধরনের উপস্থাপন তারা কোনোভাবেই করতে পারে না। এটি আমাদের শিশু আইনেই নিষিদ্ধ আছে। শিশুর ক্ষতি হতে পারে, এমন কোনও উপস্থাপন আইনত  বৈধ হতে পারে না।’

বিজ্ঞাপন নির্মাতা গাউসুল আলম বলেন, ‘শুরুতেই কিছু শিশু ইন্টারনেটের ইতিবাচক দিকগুলো বলতে থাকে। এরপর শিশুরা নেতিবাচক দিকগুলো বলতে থাকে। এ দুটো পরপর উপস্থাপন করায় অভিভাবক হিসেবে আমি দ্বিধান্বিত হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞাপনটি দেখার পর আমার কাছে মনে হয়েছিল, তারা শিশু আইন বিষয়ে কোনও প্রোডাক্ট হাজির করবে। সেটা যখন হলো না, আমি নিজেই দ্বিধান্বিত হয়ে যাই।

আমারও দুটি শিশু আছে। আমি  ইন্টারনেটের এই বিষয়টি সম্পর্কে ভীষণ কনসার্ন। কিন্তু বিজ্ঞাপন যারা করছেন, তারা যদি সেটি যথাযথভাবে হ্যাণ্ডেল করতে না পারেন এবং কেবল সমস্যাটা বারবার মিডিয়াতে দেখিয়ে যেতে থাকেন, সেটির ভিন্ন অর্থ দাঁড়ানোর শঙ্কা থাকে।

তিনি আরো বলেন, ‘বিজ্ঞাপনের শেষে যদি সমাধান দেওয়া যেতো, তাহলে হয়তো এতোটা সমালোচনা হতো না। এখন মনে হচ্ছে- বিজ্ঞাপনটিতে কোনও সমাধান দেওয়া নাই।

অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট আরিফ জেবতিক বলেন, যারা এধরনের বিজ্ঞাপন বানিয়েছে, তাদের মানসিক চিকিৎসা দরকার। বাণিজ্যিক কারণে এভাবে শিশুদের ব্যবহার ঠিক না। সচেতনতার চেয়ে শিশুদের জন্য এধরনের বিজ্ঞাপন অপমানজনক এবং বেশকিছু খারাপ উদাহরণ সৃষ্টি করছে, যেটা প্রত্যাশিত নয়।’

তিনিবলেন, বাংলাদেশে বিজ্ঞাপন নীতিমালা ওই রকমভাবে না থাকার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। পাশ্চাত্যে এরকম বিজ্ঞাপন করলে এটি নিষিদ্ধ করা হতো এবং ক্ষতিপূরণের মামলা করা হতো।

এদিকে, রবির পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনটির বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘আমরা দেখানোর চেষ্টা করেছি- শিশুরা ভালো জিনিস শিখছে, আবার খারাপ জিনিসও শিখছে। কেবলমাত্র একটি ‘সেফ নেট’ প্রোডাক্ট  উদ্বোধনের জন্য এটি বানানো হয়েছে।

ভিডিও...
https://www.facebook.com/RobiFanz/videos/1902557136423273/

এসএস/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ