শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


পাকিস্তানের রহস্যময় নগরী, যেখানে মুসলিম প্রবেশ নিষিদ্ধ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আতাউর রহমান খসরু
আওয়ার ইসলাম

পাকিস্তানের চিনাব নদীর তীরে কাদিয়ানিদের রয়েছে ‘রাবওয়াহ’ নামে একটি নিজস্ব শহর। যাকে অন্যরা চিনাব নদীর সঙ্গে মিলিয়ে ‘চিনাবনগর’ বলে। চিনোট জেলায় অবস্থিত এ শহরটি সারা বিশ্বের কাদিয়ানি তীর্থ হিসেবে পরিচিত।

কাদিয়ানি মতবাদে বিশ্বাসীগণ এ শহরকে পবিত্র বলেই বিশ্বাস করে। শহরের ৯৭ ভাগ অধিবাসীই কাদিয়ানি। বাকিরা অন্য ধর্মের অনুসারী। সেখানে কোনো মুসলমান বসবাস করে না।

পাকিস্তানে অবস্থিত হলেও রহস্যময় এ নগর সম্পর্কে কিছুই জানে না পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে চিনাবনগরের জীবনযাত্রার নানা দিক উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিনাব নগরের তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকে। পুরো এলাকায় চলে সার্বক্ষণিক নজরদারি। কোনো বহিরাগত ব্যক্তি সাধারণত সেখানে প্রবেশের অনুমতি পায় না। চিনাব নগরের অধিকাংশ বাসিন্দা পাকিস্তানের অন্য এলাকা থেকে নিরাপত্তাহীনতার দরুন এখানে স্থানান্তর হয়েছে। তাদের উল্লেখযোগ্য অংশ দেশের বাইরে চলে যেতে যায়।

কাদিয়ানি জামাত ১৯৪৮ সালে ভারত থেকে তাদের সদর দপ্তর পাকিস্তানে স্থানান্তর করে। সে সময় চিনাব নদীর তীরের ভূখণ্ড কিনে গড়ে তোলে নিজস্ব শহর। বর্তমানে চিনাব নগরে ৭০ হাজারের অধিক পরিবার বসবাস করে।

নিউইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, রহস্যময় এ নগরীর জীবনযাত্রার মান অত্যন্ত উন্নত। এখানের প্রতিটি সড়কই পাঁকা ও উন্নত। সড়কের পাশে রয়েছে পরিকল্পিত ফুলের বাগান ও সবুজ উদ্যান।

এখানে রয়েছে অলিম্পিক ক্রিয়া প্রতিযোগিতায় ব্যবহৃত আন্তর্জাতিক মানের সুইমিং পুল, আধুনিক পাঠাগার, আন্তর্জাতিক মানের নিজস্ব ব্যাংকিং ব্যবস্থা, সর্বাধুনিক হাসপাতাল। শহরের ৮৫ ভাগ নারী-পুরুষ শিক্ষিত।

এ শহরের জীবনযাত্রার মান পশ্চিমা বিশ্বের যে কোনো শহরের সমমানের। পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ যা কল্পনাও করতে পারে না।

রাবওয়াহ শহরের বাসিন্দাদের সবাই আর্থিকভাবে স্বচ্ছল। তবে শহর ছোট বলে ধনীরাও এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে সাইকেল ব্যবহার করে। শহরের প্রায় প্রতিটি স্থাপনায় কাদিয়ানি মতবাদের প্রবর্তক গোলাম আহমদ কাদিয়ানির ছবি রয়েছে।

শহরের প্রাণকেন্দ্র সেন্ট্রাল রোডে শহরের মূল বিপণিকেন্দ্র অবস্থিত। সেখানে শাক-সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছু পাওয়া যায়। নারী-পুরুষ সবাই বাজারে আসে এবং দোকানদারিও করে। প্রতিটি দোকানের নামে ‘আহমদি’ শব্দ ব্যবহার করা হয়। যেমন, আহমদি টেইলার্স, আহমদি জেনারেল স্টোর, আহমদি হার্ডওয়ার ইত্যাদি।

চিনাবনগরের স্কুলের পরিমাণ তুলনামূলক কম। তাই এখানের প্রতিটি স্কুলেই দুই শিফটে পাঠদান করা হয়।

[জীবন সাজাতে একটি দরকারি অ্যাপ ডাউনলোড করুন]

এই শহরেই কাদিয়ানিদের আন্তর্জাতিক বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে সারা বিশ্বের কাদিয়ানি ধর্মাবলম্বীরা অংশগ্রহণ করে। তাদের ধর্মীয় শিক্ষা ও দীক্ষা প্রদান করা হয়। সারা বিশ্বে কাদিয়ানি মতবাদ প্রচারের জন্য এখানে ধর্মপ্রচারকদের উচ্চতর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে প্রচারকগণ প্রশিক্ষণ নিতে এখানে আসে।

সূত্র : ডেইলি পাকিস্তান


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ