শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


হে প্রিয় মুহাম্মদ!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

প্রাপক, মদিনার দুলাল
হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা সা. ধন্য ও পূন্যভূমি মদিনা

প্রেরক,
দূর বাংলাদেশ থেকে নবীজির পাগল প্রেমিক ইউসুফ লাবীদ

প্রাণাধিক রাসুলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
আমি আপনার একজন কিশোরপ্রেমিক। হৃদয় উজাড় করে ভালবাসি আপনাকে। আপনাকে খুব কাছে পেতে ইচ্ছে করে । নুরে উজ্জ্বল চেহারাটি দেখতে মন চায়। মন চায় একটু ছুঁয়ে দেখি আপনার কোমল বদন। ইচ্ছে করে আপনার গা থেকে বেয়ে পড়া ঘামগুলো একটি শিশিতে ভরে আমার কাছে রেখে দিই। পবিত্র ঘামের সৌরভে আমার ঘরকে করি সৌরভান্বিত।

প্রতি রাতেই এ ভেবে ঘুমাই, আপনি স্বপ্নযোগে এসে আমাকে ভালবসায় সিক্ত করবেন। বলবেন,
‘হে আমার কিশোরপ্রেমিক!
এতো ভালবাসো তুমি আমাকে? তোমার এ ছোট্টমনে এতো ভালবাসা কীভাবে জমা করে রেখেছ? তুমি চিন্তা করো না, আজ রাতে যেমন তোমার স্বপ্নে এসেছি, ইনশাআল্লাহ! প্রায়ই এভাবে এসে তোমার কিশোর মনকে সিক্ত করে যাবো। আর পরপারে তুমি হবে আমার ধন্য উম্মতের একজন, যারা আমার সুপারিশে হবে সফলকাম।

তোমাকে জান্নাতে আমার কলিজার টুকরো ‘হাসান, হুসাইনের সঙ্গে তোমাকে দোস্ত পাতিয়ে দিবো। তুমি তাদের সঙ্গে খেলা করবে, আর আমি দূর থেকে দেখে মিষ্টি করে হাসবো। তোমাকে আনাসের ছোট্টভাই ‘উমায়েরের খেলার সাথী বনিয়ে দিবো। তুমি তাকে খুঁজে দিবে নতুন একটি ‘নুগাইর’।’
কিন্তু... কিন্তু এ প্রত্যাশা পূর্ণ হয়নি আজও । তবুও আমি ওই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় আছি।

মদিনার দুলাল!
যদি আপনার প্রিয় সাহাবি ‘সহিবুন না’লাইন হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ’ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর দেখা পেতাম, তাহলে করজোড় অনুরোধ করতাম আপনার একজোড়া জুতো আমাকে দেয়ার জন্য, যা আমি আমার ঘরে সাজিয়ে রাখবো, চুমো খাবো জুতোজোড়ায়, ধুলো বদনে মেখে ধন্য হবো।

হে হৃদয়ের স্পন্দন!
আমার জন্য আপনি তায়েফে রক্তাক্ত হয়েছেন। আমি মুছে দিতে পারি নি তা, পারি নি ক্ষতস্থানে প্রলেপ দিতে। আপনার প্রেমময় মলিন চেহারা আমি স্বচক্ষে দেখতে পারি নি। কেননা দয়ালু প্রভু আমাকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন আপনার প্রায় দেড় হাজার বছর পর।

আপনার দেড় হাজার বছর পর পৃথিবীতে এসে যখন জানতে পারলাম আমার পাওয়া এ সুন্দর পৃথিবী রূপয়িত হয়েছে আপনার জন্য। সুন্দর এ পৃথিবীর সভ্যতার বাহক আপনি। আপনার জন্য শিউলী ফোটে, হাসনাহেনা সৌরভ ছড়ায়, কোকিল সুর তোলে, নদী গায় কলকল গান।

তখন ছোট্ট এ মনে অভিপ্রায় জাগে, সবুজ গম্ভুজের তলে ছুটে যাওয়ার, রওজার পাশে দাঁড়িয়ে মন উজাড় করে সালাম দেয়ার, মদিনার ধুলোবালি গায়ে মাখার।

কিন্তু হাজার মাইল দূর থেকে মদিনায় যাওয়ার সাধ্য মনে জাগলেও সৃষ্টিকর্তা এ সাধ পূরণের সাধ্য দেন নি।

প্রিয় নবী কারিম!
এ জীবনে যদি আপনার রওজার পাশে দাঁড়ানোর তৌফিক না হয়, স্বপ্নেও যদি না পাই আপনার দেখা। পরকালে কিন্তু আপনার এ ছোট্টপ্রেমিক অধীর অপেক্ষায় থাকবে আপনার সাক্ষাতের, আপনার সুপারিশের। রোজ হাশরে অন্তত একবার আপনার মোবারক কপোলে চুমো খাওয়ার সুযোগটুকু দিয়েন।

আবেগ মেখে লেখা চিঠিটি ওইদিন যেন দরদভরা কণ্ঠে আপনাকে পাঠ করে শোনাতে পারি, সে অবকাশ ও ফুরসত চাই প্রভুর কাছে।

পরিশেষে ,
সৌভাগ্যের দ্বার যদি খুলে যায়, আপনার রওজার পাশে এসে দাঁড়াবার সুযোগ যদি হয় কখনও। তখন ‘আহমাদ রেফায়ির’ মতো আপনার চন্দ্রোজ্জ্বল হাত মোবারক দর্শনের সৌভাগ্য কামনা করে এখানেই চিঠির ইতি টানছি।

আপনার দুইপাশে শুয়ে থাকা দুই বন্ধুকে নিয়ে জান্নাতের অনাবিল সুবাসে আরাম করুন, হে সারওয়ারে দু-আলম।

নাম- ইউসুফ লাবীদ
পিতার নাম- মোক্তার হোসেন

গ্রাম- শালিদা পোস্ট- হেমেন্দ্র সাহার মোড় থানা- নরসিংদী জেলা- নরসিংদী

মাদ্রাসা: জামিয়া মাদানিয়া মুগদা ঢাকা (মুগদা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মাদরাসা)
শ্রেণি- ষষ্ঠ (মিযান)


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ