বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
‘মানতিক; যুগের চাহিদার সাথে মিলে না’ এ ধরেণের কথা অযৌক্তিক: মুফতি হিফজুর রহমান দাওরায়ে হাদিসের ফলাফল নজরে সানীর আবেদনের সময় বাকি ৩ দিন  বৃষ্টি প্রার্থনায় জামিয়াতুল আবরার রাহমানিয়ায় ‘সালাতুল ইস্তিসকা’  আদায় হাসপাতালে সৌদি বাদশাহ সালমান সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত পাঠ্য তালিকার সাথে বেফাকের পাঠ্য তালিকার সম্পর্ক নেই: বেফাক সৈয়দপুরে তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ, ‘হিটস্ট্রোকে’ ১ জনের মৃত্যু স্বর্ণের দাম আরও কমলো, ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ইরান-পাকিস্তানের ঢাবিতে বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিস্কা’র অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘বৃষ্টির জন্যে সালাত আদায় করলেই অবশ্যম্ভাবী বৃষ্টি চলে আসবে—বিষয়টা তা নয়’

যে ৭ টি বদ অভ্যাস এখনই পরিত্যাগ করা উচিত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

অনেক দিন বাঁচতে কে না চায়। কিন্তু নিজের খেয়াল খুশিমতো বা বেপরোয়া চললে দীর্ঘজীবন লাভ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এর জন্য দরকার নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন। দরকার কিছু অভ্যাস মেনে চলা ও সাথে কিছু বদঅভ্যাস এড়িয়ে চলা।

জেনে নিন এমন ৭টি বদঅভ্যাসের কথা যেগুলো আপনার দেহে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে আয়ু কমিয়ে দিতে পারে এবং চেষ্টা করুন এগুলো থেকে দূরে থাকতে।

১. সকালে নাস্তা না করা
সকালের নাস্তা সারাদিনের খাবারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রাতে খাওয়ার পর থেকে সকাল পর্যন্ত প্রায় ১০-১২ ঘন্টা বলতে গেলে আমরা না খেয়েই থাকি, এক রকম রোজা বলা যায় একে। এজন্য সারারাত পরে সকালের নাস্তাটাকে আমরা ‘ব্রেকফাস্ট’ বলি। নাস্তা না করলে প্রথমত যে সমস্যাটা হয়ে থাকে সেটা হলো গ্যাস্ট্রিক। আমাদের পাকস্থলী থেকে প্রতিনিয়ত গ্যাস্ট্রিক রস নামক এক ধরণের রস বের হয় যেটা হজমে সাহায্য করে। পাকস্থলীতে খাবার না থাকলে একসময় এটা পাকস্থলীর দেয়ালে ক্ষতের সৃষ্টি করে।

নিয়মিত সকালের নাস্তা আপনার শরীরকে রক্ষা করবে নানান সমস্যা থেকে। তাই নিয়মিত সকালের নাস্তা করা উচিত, নইলে পাকস্থলীতে খাবারের অভাবে এই ক্ষত বা আলসার হতে পারে য পরবর্তীতে ক্যান্সারে মোড় নেয়। সকালে যদি পুষ্টিকর খাবার দিয়ে শুরু করা যায় তবে একদিকে যেমন সারাদিনের কাজে শক্তি পাওয়া যায়, অপরদিকে দুপুর ও রাত্রে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের প্রবণতাও কমিয়ে ফেলে। আর কে না জানে নিয়ন্ত্রিত খাবার গ্রহণে শরীরের ওজনও নিয়ন্ত্রনে থাকে।

২. ভালভাবে হাত না ধোয়া
সুস্থ জীবনই যেখানে আমাদের একমাত্র আকাঙ্ক্ষা সেখানে পরিচ্ছন্নতা অত্যাবশ্যক। বাইরে থেকে ফিরে কিংবা খাওয়ার আগেও পরে হাত ধোয়ার অভ্যাসটি ছোটবেলা থেকে রপ্ত করলেও অনেক সময়ই অলসতার জন্য আমরা তা এড়িয়ে যাই। কিন্তু এই ছোট একটি অলসতা থেকেই আসলে ছড়ায় নানান অসুখ।

দুই হাত কচলে ধোঁয়া উচিত। এক গবেষণায় জানা গেছে যে, শুধুমাত্র সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস ডায়রিয়া ও অন্যান্য পেটের রোগ সৃষ্টির সম্ভাবনা কমিয়ে দেয় অর্ধেকাংশে । তবে শুধু হাত না ধোয়ার অনভ্যাসই নয় বরং অনেক সময় যথাযথভাবে হাত না ধোয়া থেকেও তৈরি হয় নানান অসুখের । এমনকি যথাযথ হাত না ধোয়ার থেকে দেখা দিতে পারে এলার্জি সহ শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত বিভিন্ন জটিলতার ।

৩. নিয়মিত দাঁত ব্রাশ না করা
‘দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বোঝে না ’-প্রচলিত এই প্রবাদটি যেন অনেকের জন্যই সত্য। অনেকেই দাঁতের ব্যাপারে অবহেলা করে থাকেন যা একটি মারাত্মক বদঅভ্যাস। কারণ দাঁত শুধু সৌন্দর্যই বাড়ায় না, বরং খাবার গ্রহণ থেকে পরিপাকেও রয়েছে এর বিশেষ ভূমিকা ।

প্রতিদিন অন্তত সকালে দাঁত মাজুন। নিয়মিত দাঁত ব্রাশ না করার ফলে খাবারের টুকরা থেকে ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য ক্ষুদ্র জীবাণুর সৃষ্টি হয় মুখের ভিতরে যা দাঁতের ক্ষয় ও দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে। আর দাঁতের সমস্যা যেমন যন্ত্রণাদায়ক তেমনি অস্বস্তিকর। তাই নিয়মিত দাঁত ব্রাশ এবং দাঁতের যথার্থ যত্ন নেয়া খুবই জরুরি।

৪. ব্রণ-ফোঁড়া খোঁচানো
মুখে ব্রণ হলে বা ত্বকের কোথাও ফোঁড়া হলে আমাদের হাত যেন অজান্তেই ওদিকে চলে যায়। কিন্তু এই অভ্যাসটা মোটেই স্বাস্থ্যকর না। ব্রণ বা ফোঁড়ায় থাকে কিছু নষ্ট কোষ, থাকে মৃত রক্ত কণিকা বা পুঁজ। রক্ত ও ত্বকের মধ্যকার সব নষ্ট ও আক্রান্ত কোষগুলো দেহের ইমিউনিটি সিস্টেম আলাদা করে দেয় ব্রণ ও ফোঁড়া হিসেবে।

ব্রণ হলে খোঁচানোর স্বভাব বাদ দিন। আমরা যখন নখ দিয়ে এগুলোকে স্পর্শ করি বা খোঁচাই তখন জীবাণু ও নোংরা পুঁজ আমাদের নখে লেগে যায় এবং খাবারের সাথে ও বিভিন্নভাবে আমাদের শরীরে ঢুকে বিভিন্ন রোগ তৈরি করে। এই বদ অভ্যাসটা থাকলে আজ থেকেই ছেড়ে দেওয়াই ভালো।

৫. নখ কামড়ানো
নখ কামড়ানো মানে কেউ দাঁত দিয়ে নখ কাটছে- এমন দৃশ্য দেখতেও যেমন বিশ্রী আবার স্বাস্থ্যের জন্যেও এটি ক্ষতিকর। আঙুলের ডগা দিয়েই আমরা বেশির ভাগ জিনিস স্পর্শ করি এবং এতে নখের নিচে জমে হাজারো রকম ময়লা আর জীবাণু। এই অবস্থায় আমরা যদি যখন তখন নখ কামড়াই তবে এই হাজারো জীবাণু চলে যাবে আমাদের শরীরের মধ্যে এবং বিভিন্ন রোগের জন্ম দেবে।

নখ কামড়ানো মোটেই ভালো স্বভাব নয় । স্ট্রেপটোকক্কাস, স্টাফাইলোকক্কাস সহ বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া সর্দি-কাশি, পেটের অসুখ সহ থেকে শুরু করে টাইফয়েডের মতো রোগ তৈরি করতে পারে। আবার বার বার দাঁতের কামড়ে নখের ডগায় হতে পারে ঘা, ঘা থেকে রক্তে ছড়াতে পারে ইনফেকশন। তাই এই অভ্যাসটা থেকে দূরে থাকাই ভালো।

৬. অতিরিক্ত লবণ আসক্তি
লবণ আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় কিন্তু সেটি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে। যদি আপনার লবণের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি থাকে বা বেশিরভাগ খাবারেই আপনি প্রয়োজনের তুলনায় বেশি লবণ খাওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে থাকেন তবে সেটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য হতে পারে মারাত্মক হুমকির কারণ। পাতে লবণ

খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং টাইপ টু ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগের অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার হৃদরোগ এর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া অনিয়ন্ত্রিত লবণ গ্রহণের থেকেই সৃষ্টি হতে পারে কিডনি সংক্রান্ত নানা জটিলতা। সুতরাং অধিক লবণুক্ত খাবার ও খাবারের পাতে অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার অভ্যাসকে ‘না’ বলুন এখন থেকেই।

৭. মাঝরাতে খাওয়ার অভ্যাস
মাঝরাতের দিকে কাজ বা পড়াশুনার ফাঁকে ক্ষুধা লাগলে প্রায়ই আমরা ফ্রিজ খুলে আইসক্রিম, কেক বা মিষ্টি জাতীয় বিভিন্ন খাবার খাই। যা তাৎক্ষণিকভাবে পেট ভরালেও স্বাস্থ্যের জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকর। আবার আমরা অনেকেই রাত্রে দেরি করে খাই। কিন্তু রাতের খাবারটা যত তাড়াতাড়ি খাওয়া যায় ততই ভালো। রাতে ঘুমের অন্তত তিন ঘন্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নেওয়া উচিৎ। রাতের খাবারে মিষ্টি জাতীয় ও অধিক মসলাযুক্ত আইটেম পারতপক্ষে না রাখাই ভালো।

মাঝরাতে মিষ্টি খাবার না খাওয়াই উচিত। একে তো মিষ্টি রক্তে স্যুগার লেভেল বাড়িয়ে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়, তার উপর মিষ্টিতে থাকা অতিরিক্ত সুক্রোজ জমা হয়ে পরবর্তীতে ফ্যাটে পরিণত হয়। আর ফ্যাট যে শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর সেটা কম বেশি সবাই জানি। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতের খাবার এবং সকালের নাস্তার মাঝে সময়ের ব্যবধান থাকা উচিৎ কমপক্ষে দশ থেকে বারো ঘন্টা। তাই সুস্থ ও সতেজ জীবন পেতে আপনাকে রাতে এই খাবারের লোভ এড়াতেই হবে। সূত্র : ইয়ুথ কার্নিভাল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ