শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


আমদানি নয় যুদ্ধ জাহাজ রপ্তানি করবে বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ভবিষ্যতে বাংলাদেশ যুদ্ধজাহাজ রফতানি করবে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ধীরে ধীরে ‘বায়ার নেভি’ থেকে ‘বিল্ডার নেভি’তে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছে।

রোববার চট্টগ্রামের বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ ও মিডশিপম্যান-২০১৫ পরিদর্শন এবং বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, নৌবাহিনীর দক্ষ ব্যবস্থাপনায় খুলনা শিপইয়ার্ড ও নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডে দেশীয় প্রযুক্তিতে আধুনিক যুদ্ধজাহাজ নির্মিত হচ্ছে। খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত দুটি সাবমেরিন ‘দুর্গম’ ও ‘নিশান’ গত মাসে নৌবহরে যুক্ত করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেডে আধুনিক ফ্রিগেট তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। সরকার নৌবাহিনীকে দক্ষ ব্যবস্থাপনায় গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছে।

নৌবাহিনীকে আধুনিক ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত করার ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জলসীমায় নজরদারি বাড়াতে আরও মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট ও হেলিকপ্টার ক্রয় প্রক্রিয়াধীন।

অবকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে পটুয়াখালীতে এভিয়েশন সুবিধাসংবলিত নৌবাহিনীর সর্ববৃহৎ নৌঘাঁটি ও ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নৌঘাঁটি নির্মাণের কাজ চলছে।

এ ছাড়া সাবমেরিনের সুষ্ঠু পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও জেটি সুবিধা প্রদানের জন্য কুতুবদিয়ায় একটি সাবমেরিন ঘাঁটি নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়। তিনি সালাম গ্রহণ করেন এবং কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। কর্ণফুলী নদীতে নোঙর করা নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজের প্রদর্শনীও ঘুরে দেখেন তিনি।

২০১৫ ব্যাচের সোহানুর রহমান সব বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জন করে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন।

এ ছাড়া বিশেষ কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে মিডশিপম্যান সীমান্ত নন্দী আকাশ ‘নৌবাহিনী প্রধান স্বর্ণপদক’ এবং ডিরেক্ট অ্যান্ট্রি অফিসার অ্যাক্টিং সাব-লেফটেন্যান্ট এজেডএম নাসিমুল ইসলাম ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক’ গ্রহণ করেন।

পরে তিনি প্যারেড কমান্ডার নবীন অফিসারদের শপথগ্রহণ করান। এর আগে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম নৌঘাঁটিতে পৌঁছলে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল এম আবু আশরাফ তাকে স্বাগত জানান।

ক্যাডেটদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর সদস্য হিসেবে সব সময় ঊর্ধ্বতনদের প্রতি আনুগত্য ও অধস্তনদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন করবে। পাসিং আউট ক্যাডেটদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশকে ভালোবেসে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্বে আত্মনিয়োগের জন্য ক্যাডেটদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।

এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ২১ জন নারী কর্মকর্তা কমিশন পেতে যাচ্ছেন জেনে অভিভূত প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের বহিঃপ্রকাশ এটি। শীতকালীন এ কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে ২১ জন মহিলা ছাড়াও শ্রীলংকা ও মালদ্বীপের একজন করে ৯২ জন মিডশিপম্যান এবং ১২ জন ডিরেক্ট অ্যান্ট্রি অফিসারসহ ১০৪ অফিসার কমিশন লাভ করেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, জাতীয় সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, সরকারের পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, কূটনীতিক এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ