বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


কবিতায় নতুন প্রজন্মের বিজয় ভাবনা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

কোথায় তুমি স্বাধীনতা
ওয়াসিম রহমান সানি

আজো বাতাসে ভেসে আসে লাশের গন্ধ
আজো শকুনে খায় পঁচা মানব দেহ।
আজো হা হাকার প্রতি হৃদয়ে বিনষ্ট মানবতা ;

কোথায় তুমি স্বাধীনতা ! তুমি কোথায় ?

আজো ঘুম আসে না চোখে-
কখন বুলেট বোমা ছুঁড়ে।
আজো মানুষ আগুনে পুড়ে করছে ভস্মতা;

কোথায় তুমি স্বাধীনতা ! তুমি কোথায় ?

আজো ছেলের শোকে মা কাঁদে/কাঁদে বঙ্গ জননী,
ধর্ষিতার চিৎকারে আকাশ কাঁপে,চাই বিপ্লবী তর্জনী।
আজো অহরহ ঘটছে একাত্তরের বর্বরতা;

কোথায় তুমি স্বাধীনতা ! তুমি কোথায় ?

আজ থেকো না রুদ্ধ ঘরে হে বীর মুক্তিসেনা,
দ্রোহের অগ্নি জ্বালাও ফের,উঠাও স্কঁন্ধে রাইফেল।
ভেঙ্গে ফেলো রাজনীতির ঐ ভন্ডামি মুর্খতা ;

কোথায় তুমি স্বাধীনতা ! তুমি কোথায় ?

আজো শুনি শান্তি প্রিয় নিরিহ মানুষের চিৎকার,
জোড়-জবরদখল-বলদকার।
আজো শুনি রাজাকারের মুখে বড় বড় কথা ;

কোথায় তুমি স্বাধীনতা ! তুমি কোথায় ?

আজ চুপ কেন হে বীর,কীসের তরে মৌনতা ?
আজো পাইনি পূর্ণ স্বাধীনতা,পাইনি।
দুর্নীতিতে ভরে গেছে এই দেশের সমাজটা;

কোথায় তুমি স্বাধীনতা ! তুমি কোথায় ?

আজ মৌনতা ভাঙ্গো হে বীর-
দামামা তোলো বক্ষে, আমরা নির্ভয় ।
গর্জে উঠো,ঘুরে দাঁড়াও,দেখাও একাত্তরের চেহেরাটা;

কোথায় তুমি স্বাধীনতা ! তুমি কোথায় ?

আজ জাতিতে জাতিতে হানাহানি,
বিনিদ্রায় কাটায় রাত্রি,স্বদেশে পরবাসি।
ঘুরে দাঁড়িয়েছে দাঙ্গা সাম্প্রদায়িকতা;

কোথায় তুমি স্বাধীনতা ! তুমি কোথায় ?

পদ্যাঞ্জলী
আজাদ ইবনে ছানাওর

হায়েনাদের করাল গ্রাসে
যখনি প্রায় সর্বনাশে
যুদ্ধে নামে নর ও নারী-
মধ্য দিনের সূর্যবেশে।

একাত্তরের নয়টি মাসে
বঙ্গমাতা রক্তে ভাসে,
সবুজগাঁহে রক্ত জমাট-
অবিনশ্বর সফল আসে।

ছোঁড়েছিলো বীর- বাঙালী
গুলির পরিবর্তে গুলি,
অর্জিত হয় স্বাধীনতা-
তাড়িয়ে হায়না হাবিগুলী।

তাই বিজয়ের ডিসেম্বরে
উল্লাসে নাচে অন্তরে,
লক্ষ' প্রাণের আত্মদানে-
উন্নত শির বিশ্বঘরে।

বীর শহিদদের রক্তধরি
কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরি,
গাজী বঙ্গ- প্রেমিকদেরে-
পদ্যাঞ্জলী অর্পণ করি।

বিজয় এসেছে আজ
মোঃ সাখাওয়াত হোসাইন

বিজয় এসেছে আজ রক্তিম সূর্য্যের প্রখরতা নিয়ে,
বিজয় এসেছে সবুজের বুকে রক্তপ্রলেপ দিয়ে।

বিজয় এসেছে আজ মায়ের নয়নের নোনাজলে,
বিজয় এসেছে বোনের বীরাঙ্গনার সুরভী ফুলে।

বিজয় এসেছে শোষিতের প্রতিবাদী রণহুংকারে,
বিজয় এসেছে স্বাধীনতাকামী উদ্যমী ঝংকারে।

বিজয় তুমি থেমে গেলে কেন ধর্ষিতা বোনের সম্ভ্রমে,
বিজয় আত্মগোপনে রয়ে দুর্নীতির বৃথা সংযমে।

বিজয় তুমি শুধু শ্লোগানে নয় গণতন্ত্রে ফিরে এসো,
বিজয় তুমি ক্ষমতা দখলের অনিয়ম ভেঙ্গে জনতাকে ভালবেসো।

বিজয় তুমি এসো আজ হতে প্রতিদিন প্রতিক্ষণ এসো,
স্বাধীনতা পাশ্চাত্যরীতিতে নয় বাঙ্গালী চেতনায় ভালবেসো।

বিজয়ের বীণা
শামীম তালুকদার

ডিসেম্বরের ঐ ষোল,
বারে বারে বলে যায় কানে কানে,
মাথা উচু করে দেখ -ঐ বিশ্ব আকাশের পানে,
বাতাসে বাতাসে উড়ছে -
ত্রিশ লক্ষ শহীদের পবিত্র রক্তে,
দু-লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রমের দানে,
লাল সবুজের একটি পতাকা।
উত্তরের হিমবাহ,দক্ষিণা পবনে,
বিজয়ের বীণা বাঁজে -ষোল'র আগমনে।
ভোরের শিঁশিরে, মোরগের ডাকে,
বিজয়ের বীণা বাঁজে-ঐ রাখালের বাঁশীতে।
বিলের বুকে জমা বর্ষার জলে,
বিজয়ের বীণা বাঁজে-ফোটা প্রতিটা শাপলার ফুলে।
সবুজের আঁচলে,ধানের শীষে,
বিজয়ের বীণা বাঁজে-দোয়েলের শিসে।
বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে,
বিজয়ের বীণা বাঁজে -আমের মুকুলে মুুকুলে।
নব-বর্ষের নতুন সাঁজে,
বিজয়ের বীণা বাঁজে-কবি নজরুলের প্রতিটা কবিতার ভাজে ভাজে,
রণ সঙ্গীতের প্রতিটা চরণে,
বিজয়ের বীণা বাঁজে -৭ই মার্চের শেখ মজিবের ভাষণে।
যতদিন থাকিবে নীল -ঐ আসমান,
ততোদিন বাংলার বুকে বাঁজিবে- বিজয়ের বীণা,
বাঁজিবে -জয় বাংলা, বিজয়ের গান।

ওরা চিরঞ্জী
কাজী জুবেরী মোস্তাক

ওরা লড়েছিলো , ওরা মরেও ছিলো
ওদের রক্তেই এই বিজয় এসেছিলো ,
ওরাতো বিজয় না দেখেই চলে গেলো
তবুও ওরা স্বাধীনতাটা দিয়ে গেলো ৷

ওরা চলে গেলো,কিন্তু ওরা হারায়নি
ওরা রক্ত দিতেও কুন্ঠিতবোধ করেনি ,
ওরা রক্ত দিয়েই করে গেছে চীরঋনী
সেই রক্ত সেই ক্ষত আজও শুকায়নি ৷

বিজয়ের উল্লাসে হাসতে পারেনি ওরা
প্রিয়জনের শেষ দেখাও পায়নি তারা ,
তবু যুদ্ধ ময়দানে হয়নি মনোবল হারা
ওরা যে এই বাঙলার দামাল ছেলেরা ৷

ওরাইতো ভালোবাসতে শিখিয়েছিলো
বাংলার অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছিলো ,
ওরাই প্রথম স্বাধীনতার স্বপ্ন বুনেছিলো
ওরা এই বাংলারই পা ফাটারা ছিলো ৷

ওদের শরীর মরে ওরা মরেনা কখনো
ওরা রত্নগর্ভার মায়ের গর্ভে জন্মেছিলো ,
ওরা সম্মুখ মৃত্যুকেও জয় করেছিলো
তাইতো ওরা মৃত্যুতেও চিরঞ্জীব হলো ৷

যদি ফিরে পেতে চাও
হুসাইন আহমাদ

এইতো সেদিন তোমরা ছিলে
এই দুনিয়ার শাহচেয়ারে।
কাঁপত ভয়ে নেকড়ে তাগুত
লেজ গুটিয়ে থাকত ডরে।
মুখে ছিল পাক কালেমা
বুকে ছিল ঐশী বল,
জীবন ছিল নিবেদিত
হস্তে খড়গ বেশামাল!
তপ্ত করতে জিহাদভূমি
ক্ষিপ্ত বাঘের কাটতে নাক।
চলতে তোমরা অগ্রপানে
রাস্তা যতই খতরনাক!
জয় করেছ সিন্ধু, ফারেস,
আফ্রিকা ও উন্দুলুস।
লয় করেছ জালিম শাহীর
তখতে তাউস ও জৌলুস।
আজকে কেন কাঁদছ বসে
একটু তব নেই কি লাজ!?
দিন বদলের ডাক এসেছে
শুনতে পাও কি কুচকাওয়াজ?
আড়মোড়া সব ঝেড়ে ফেলে
জোর ছে মাড়াও সমুখ পান।
আসবে ফিরে সেই জামানা
যেই জামানার গাইছ গান।

অমর বিজয়
নূরে আলম আলিফ

রক্তার্ঘ্যে অর্জিত বিজয়
তোমাতে নিবেদিত এ প্রীতি-দর্শন...
তোমায় পেতে বাপ-ভাই হারিয়েছি জানি,
জিগর খণ্ডিত উঞ্চ খুন
তাজা বুকে জলন্ত বুলেট
সবই আমি জানি,
তবুও তোমার স্তুতি করি ব্যক্ত...
কেন না, বিজয়ের প্রণয় ঊর্মি
তোমায় করেছে আলিঙ্গন।

দুর্গম গশতে তুমি জয়ী,
সমস্ত বাঁধার বহু উপরে-
মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছো তুমি।

শত বর্ষের প্রান্ত হতে আগত সহস্র বাঁধা
ও /৭১'র বিভীষিকা তুমি করেছো জয়।

দুরায়ত্ব শাসনাবরণ তুমি দিয়েছো ফাঁড়ি,
আর বেড়িবাঁধ গুলোর শির দিয়েছো ভেঙ্গে
স্বাধীনতা আমার প্রিয় স্বাধীনতা।

ক'টি পবিত্র দেহ না হয় হারিয়েছো তুমি
তাই বলে কি তুমি নিঃশ্ব-একাকী...
সময়ের স্রোত থেমে যায়নি তোমার
রয়ে-রয়ে বয়ে যায় মহাকাল
দূর হতে বহু দূরে।

তুমি নন্দিত, অপরাজেয়,
অখণ্ডনীয় এক জীবন
হামিদুর, মতিউর, নূর মোহাম্মদের মরণ,
স্বাধীনতা আমার প্রিয় স্বাধীনতা।

প্রতিটি লগ্ন উজ্জিবীত তোমার ছোঁয়ায়
স্বপ্নীল, অপূর্ব।

আমার ভাইদের রাঙ্গিয়েছো তুমি রক্তে
কেড়ে নিয়েছো সাহসী তরুণ-প্রাণ,
তোমায় পেতেই হারিয়েছি জানি
কত-শত বিবেকবান।

তবুও নেই ক্রোধ
বরং রয়েছে তৃপ্তি,
কেন না, বিনিময়ে তুমি নিজেই এসেছো
হে অমর বিজয়।

অামার বিজয় বাংলাদেশ
মোঃ শফিউল অালম বেলালী

শীতের সাথী চাদর অামার
করছি শোনো পেশ,
ঠান্ডা - গরম চাইনারে এখন
বাংলা হচ্ছে শেষ।
---- অামার বিজয় বাংলাদেশ।।

ঐ শোনা যায় গুলিতে মানুষ
মরছে নির্বিশেষ,
মায় কাঁদতেছে অঘোর নয়নে
পুত্র হারা বেশ।
---- অামার বিজয় বাংলাদেশ।।

ডিসেম্বরের পনেরো তারিখ
মাঘ মাসের শেষ,
গভীর শীতে লাগছে গরম
একটু নাহি ক্লেশ।
---- অামার বিজয় বাংলাদেশ।।

অাবাল বৃদ্ধ তরুণ মুক্তির
যুদ্ধে এই দেশ---
জন্ম নিলো নয়টি মাসের
কেটে ভয়াল রেশ।
---- অামার বিজয় বাংলাদেশ।।

বাংলা মায়ের ভাবুক হৃদের
হাসির নেই শেষ,
ষোড়শী বোনের রক্তে অাঁকলো
সোনার বাংলাদেশ।
---- অামার বিজয় বাংলাদেশ-
---- অামার মরণ বাংলাদেশ।
---- অামার জীবন বাংলাদেশ।

আরেকটি যুদ্ধ চাই
তারিকুল ইসলাম 

আরেকটি যুদ্ধ চাই?
নতুন কোনো মানচিত্রের জন্যে নয়,
একাত্তরের বর্বরতার মত নয়।
এ যুদ্ধ হবে স্নায়ু যুদ্ধ
এ যুদ্ধ নিজের সাথে নিজের
যার স্লোগান হবে-,
সোনার বাংলা হবে সুজলা,সুফলা
শস্য শ্যামল শোষণ মুক্ত আতুরখানা ।

আরেকটি যুদ্ধ চাই?
আরেকটি গণঅভ্যুত্থান।
আমি আরেকটি কিংবদন্তি চাই?
যার ডাকে জড়ো হবে ষোল কোটি প্রাণ
একই বৃক্ষের ছায়াতলে ।

আমি সেই ইতিহাসের স্বপ্নের রূপ চাই?
যে দেশের স্বপ্নে ত্রিশ লক্ষ শহীদ
আর দু-লক্ষ মা বোন তার সম্ভ্রমের আঁচল বিছায়াছে
আমি সে দেশটি চাই?

আমি আরেকটি যুদ্ধ চাই?
যা বয়ে বেড়াবে সমৃদ্ধি ইতিহাস
স্বাধীনতার সাতচল্লিশ বছরে যা হয়নি!
যে স্বপ্ন চাপা পড়ে আছে গুটি কয়েক
দুর্নীতিবাজ স্বার্থান্বেষীর হাতে
তাদের বিরুদ্ধে আরেকটি গণঅভ্যুত্থান চাই?
আরেকটি স্নায়ু যুদ্ধ ।

পড়ুন...'কবিতা আমি এক স্বাধীন দেশে জন্মেছি'

এসএস/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ