বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
‘মানতিক; যুগের চাহিদার সাথে মিলে না’ এ ধরেণের কথা অযৌক্তিক: মুফতি হিফজুর রহমান দাওরায়ে হাদিসের ফলাফল নজরে সানীর আবেদনের সময় বাকি ৩ দিন  বৃষ্টি প্রার্থনায় জামিয়াতুল আবরার রাহমানিয়ায় ‘সালাতুল ইস্তিসকা’  আদায় হাসপাতালে সৌদি বাদশাহ সালমান সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত পাঠ্য তালিকার সাথে বেফাকের পাঠ্য তালিকার সম্পর্ক নেই: বেফাক সৈয়দপুরে তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ, ‘হিটস্ট্রোকে’ ১ জনের মৃত্যু স্বর্ণের দাম আরও কমলো, ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ইরান-পাকিস্তানের ঢাবিতে বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিস্কা’র অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘বৃষ্টির জন্যে সালাত আদায় করলেই অবশ্যম্ভাবী বৃষ্টি চলে আসবে—বিষয়টা তা নয়’

শোকস্তব্ধ মক্কার মেয়র গলি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইবরাহিম খলিল রোড, মক্কা (সৌদি আরব) থেকে: পবিত্র নগরীর পথে পথে মিশে ছিল তার স্মৃতি। বছরের পর বছর তিনি 'আল্লাহ আমি উপস্থিত' বলে এসে হাজির হয়েছিলেন আল্লাহর ঘর 'বায়তুল্লাহ মসজিদ'- এ।

বাংলাদেশের হাজিদের নিয়ে থেকেছেন মক্কার যে এলাকায়, তার নামই হয়ে গেছে 'মেয়র গলি'। তার মৃত্যুতে এখানেও লেগেছে শোকের ছায়া। চট্টল বীর মহিউদ্দিন চৌধুরীর চির বিদায়ে শোকস্তব্ধ মক্কার বাংলাদেশিরাও।

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) ফজরের নামাজ শেষে দাবানলের মতো তার মৃত্যুর সংবাদ প্রবাসী বাংলাদেশিদের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বত্র চলে তাকে নিয়ে আলোচনা, স্মৃতিচারণ। 'প্রতি বছর এখানে এসেছেন তিনি। সারা বছরের জন্য বাড়ি ভাড়া করে রাখতেন চট্টগ্রামের হাজি ও ওমরাহ পালনকারীদের জন্য।' বললেন সুফরা আল জাজিরা হোটেলের ম্যানেজার নোমান।

পবিত্র মসজিদ থেকে ইবরাহিম খলিল সড়কটি মিসফালাহ এলাকা দিয়ে চলে গেছে মক্কা শহরের ভেতরে। মিসফালাহ মানে নিচু এলাকা। পাহাড়-ঘেরা মক্কার অপেক্ষাকৃত নিম্নভূমি মিলফালাহ হলো বাংলাদেশি হাজিদের পছন্দের জায়গা। এখানে থাকতে পছন্দ করেন বাংলাদেশিরা। মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র হজ কাফেলা নিয়ে এখানেই বছরের পর বছর থেকেছেন। এলাকাটির নামও হয়ে গেছে তার নামে।

পবিত্র মসজিদুল হারাম থেকে বের হলেই ক্লক টাওয়ার আর জমজম টাওয়ারের মাঝ দিয়ে ইবরাহিম খলিল রোড শুরু। আশেপাশে তারকাখচিত বহুতল হোটেল। খানিক এগিয়ে গেলে সামনেই কবুতর চত্বর। ঝাঁকে ঝাঁকে জালালি কবুতর খেলা করছে এখানে। মানুষ গম ও শস্যদানা ছিটিয়ে দিচ্ছে। কবুতর চত্বর পেরিয়ে এগুলেই হোটেল বুরুজ আস সুলতান। পাশে একটা উপ-পথ, এটাই মেয়র গলি।

নিথর সাইনবোর্ডেও স্মৃতির ছায়া। ছবি: বাংলানিউজ'মাঝারি মানের থাকার জন্য এটাই মসজিদের সবচেয়ে কাছের এলাকা', বললেন ব্যবসায়ী আবুল হোসেন। তার বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া। তিনি বলেন, 'মহিউদ্দিন চৌধুরী হাজিদের নিয়ে মসজিদের কাছাকাছি থাকতেন। নিজে তাদের খেদমত করতেন।'

মক্কায় পয়ত্রিশ বছর ধরে বসবাস করছেন হাটহাজারির নিজামুদ্দীন। বললেন, 'আগে ঢাকা হোটেল, চট্টগ্রাম হোটেলের পাশে ছিল মহিউদ্দিন চৌধুরীর অবস্থান। সে এলাকা ভেঙে বহুতল ভবন তৈরি করায় এলাকাটি আর নেই। তিনি বর্তমান এলাকায় হাজিদের নিয়ে থাকতে শুরু করেন।'

শোকার্ত কণ্ঠে তিনি বলেন, 'মহিউদ্দিন চৌধুরী যেখানেই হাজিদের নিয়ে বসবাস করেছেন, সেখানেই বাঙালি পাড়া গড়ে তুলেছেন। আশেপাশে দেশিয় লোকজনের সঙ্গে সৌহার্দ্য গড়ে চমৎকার পরিবেশ তৈরি করতেন।'

নবাগত বাংলাদেশিরা চেনার জন্য মেয়র গলি, বাঙালি পাড়াকে চিহ্নিত করে মক্কায় চলাফেরা করেন। হারিয়ে গেলে বা গ্রুপ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে বলে রাখেন, 'মেয়র গলির মুখে অপেক্ষা করবো।' চারপাশের দোকানগুলোও বাংলাদেশি কর্তৃক পরিচালিত। বাঙালি খাবার, দেখা-সাক্ষাত, আলাপ-যোগাযোগের এখানেই সারা মক্কার বাংলাদেশিরা সমবেত হন। চারদিকে বাংলা কথা ও পরিবেশে একখণ্ড বাংলাদেশ বলেই মনে হয় মক্কার মেয়র গলিকে।

মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে এখানেও শোকের বেদনাবহ ছায়া বয়ে চলেছে। প্রবাসী ও বাংলাদেশ থেকে আগতরা ভারাক্রান্ত। চট্টগ্রাম থেকে বহুদূরে পবিত্র নগরী মক্কার একটি এলাকায় তার স্মৃতির প্রবাহমান স্রোত যেন পৃথিবীর সব সীমান্ত পেরিয়ে মিশে যাচ্ছে কর্ণফুলীর স্রোতে।

সূত্র: বাংলানিউজ২৪

চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর ইন্তেকাল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ